ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের অকার্যকর নীতি নির্ধারকরা


প্রকাশ: 19/03/2024


Thumbnail

আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণী সংস্থা বলা হয় প্রেসিডিয়াম। প্রেসিডিয়াম সদস্য হওয়াটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী সংস্থা। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হওয়াটা অনেকের কাছেই একটি রাজনৈতিক প্রাপ্তি এবং সারা জীবনের অর্জন। রাজনৈতিক ভাবে বিবেচনা করলে একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য একজন মন্ত্রীর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সেই দিন এখন আর নেই।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এমন অনেক নেতাই আছেন যারা রাজনীতিতে গুরুত্বহীন, অপাংক্তেয় এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসাবেও অকার্যকর। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যদের মর্যাদা ২০০৯ পর্যন্ত অত্যন্ত ব্যাপক ছিল। কিন্তু টানা ক্ষমতায় থাকার কারণে এখন মন্ত্রীরা অনেক বেশি ক্ষমতাবান হয়েছেন। তাছাড়া এসময় আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতারা সংস্কারপন্থী হওয়ার কারণে প্রেসিডিয়াম থেকে কক্ষচ্যূত হয়েছে। তাদেরকে উপদেষ্টামণ্ডলীতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ফলে আওয়ামী লীগের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতাই এখন প্রেসিডিয়াম সদস্য নয়। শূন্য স্থান পূরণে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামে যাদেরকে আনা হয়েছে এদের অনেকেই অকার্যকর হিসাবে দলের মধ্যে পরিচিত। 

আওয়ামী লীগের যে সমস্ত সদস্য সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী সংস্থার দায়িত্ব গ্রহণ করে তেমন আলো ছড়াতে পারেননি তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন; 

পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্য্য: পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্য্য আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা। তিনি আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণে সংস্থার সদস্য হওয়ার পর তেমন আলো ছড়াতে পারেনি। জাতীয় রাজনীতিতে তাকে দেখা যায়নি। তবে দীর্ঘদিনের ত্যাগী পরীক্ষিত এই নেতাকে সম্মান জানানোর জন্যই প্রেসিডিয়াম পদটি দেওয়া হয়েছে বলে অনেকে মনে করেন। 

মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন: মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন আওয়ামী লীগের একজন পোড়খাওয়া নেতা। ৭৫ পরবর্তীতে ছাত্রলীগকে যারা নতুন করে সংগঠিত করেছেন তাদের মধ্যে নিঃসন্দেহে ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন অন্যতম। কিন্তু নিজের নামের প্রতি তিনি পরবর্তীতে সুবিচার করতে পারেননি। বিশেষ করে এক-এগারোর সময় তিনি সংস্কারপন্থী হিসেবে পরিচিতি পান। এই সময় তার সঙ্গে অধ্যাপক আবু সাঈদ সহ বিভিন্ন সংস্কারপন্থীর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের কথা শোনা যায়। এক-এগারোর পর তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে কক্ষচ্যুত হন। তার নিজ নির্বাচনী এলাকাতেও তিনি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছেন। এরপরও প্রধানমন্ত্রী তার ৭৫ পরবর্তী ছাত্রলীগের রাজনীতির ত্যাগ এবং অবদান বিবেচনা করে তাকে প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেন কিন্তু প্রেসিডিয়াম সদস্য হয়েও তিনি বিএমএর সভাপতি পদ আঁকড়ে ধরেছিলেন। সাম্প্রতিক সময় সরকার বিএমএর নির্বাচনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বরে বিএমএর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রেসিডিয়াম সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনকে সক্রিয় দেখা যায়নি। বরং তিনি একজন অকার্যকর নেতা হিসেবেই পরিচিতি পাচ্ছেন। 

সৈয়দা জেবুন্নেছা হক: আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য জেবুন্নেছা হকও তেমন আলো ফেলতে পারেনি। তাকে নিয়ে কোনো ধরনের উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনাও দেখা যায় না আওয়ামী লীগের কর্মীদের মধ্যে। একটি নীতি নির্ধারকের পদে থেকেও তিনি নীতিনির্ধারক হতে পারেননি। 

সিমিন হোসেন রিমি: সিমিন হোসেন রিমি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হয়ে তিনি প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন। তাজউদ্দীন আহমদ এর কন্যা প্রেসিডিয়াম সদস্য হয়ে যেভাবে আলো ছড়ানোর কথা ছিল বা নেতৃত্বে যেভাবে তাকে উদ্ভাসিত দেখার কথা ছিল তেমনটি দেখা যায়নি। প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে তিনি দলের নীতি নির্ধারক হিসেবে আর্বিভূত হতে পারেননি বলে অনেকে মনে করেন। তাকেও আওয়ামী লীগে অকার্যকর নীতি নির্ধারক মনে করা হয়।

প্রেসিডিয়াম সদস্য হল আওয়ামী লীগের সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ পদ। অনেকে মনে করেন একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য একেকটি প্রতিষ্ঠান। সেভাবে আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন তার ঐতিহ্য ধরে রেখেছিল কিন্তু এখন প্রেসিডিয়াম সদস্যদেরকে অনেকে চেনন না। এমনকি আওয়ামী লীগের কর্মীরা অনেক প্রেসিডিয়াম সদস্যকে চেনন না। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে তাদের ভূমিকা ক্রমশ গৌণ হয়ে উঠছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭