ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির ভারত বিরোধীতা: কফিনের শেষ পেরেক?


প্রকাশ: 24/03/2024


Thumbnail

বিএনপি এখন প্রকাশ্যে ভারত বিরোধী কর্মসূচিতে নেমেছে। ভারত বিরোধীতার মাধ্যমে প্রথমে তারা আওয়ামী লীগকে চাপে ফেলতে চায়, কোণঠাসা করতে চায় এমন কৌশল গ্রহণ করেছে। আর সে কারণেই সারা দেশে মালদ্বীপের কায়দায় ইন্ডিয়া আউট কর্মসূচি পালন করছে। যে কর্মসূচির প্রধান লক্ষ্য হলো ভারতীয় পণ্য বর্জন করা। 

শুধু ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েই বিএনপি ক্ষান্ত হয়নি। ভারত বিরোধীতা যেন জনগণের মধ্যে সঞ্চারিত হয় সেজন্য বিএনপির পক্ষ এখন ভারত বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে। বিএনপি নেতারা প্রতিনিয়ত ভারতের বিরুদ্ধে নানা রকম বক্তব্য ও বিবৃতি দিচ্ছেন। অবশ্য ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর থেকেই বিএনপির মধ্যে ভারত বিরোধী মনোভাব এবং ভারত বিরোধী বক্তব্য শোনা যাচ্ছিল। এখন তা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ্য হয়েছে। তবে বর্তমান বৈশ্বিক বাস্তবতায় বিএনপির এই কৌশল বিএনপির জন্য আত্মঘাতী কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। 

একথা অস্বীকার করার কোন কারণ নেই যে, ৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর পাকিস্তানপন্থীরা বাংলাদেশে ভারত বিরোধীতার জিকির তুলেছিল এবং একটি নির্লজ্জ অপপ্রচার এবং মিথ্যাচারের মাধ্যমে বাংলাদেশে একটি ভারত বিরোধী আবহ সৃষ্টি করেছিল। ভারত বিরোধী চেতনাকে কেন্দ্র করেই তারা আওয়ামী লীগকে কোণঠাসা করেছিলো, মুক্তিযুদ্ধকে ভুলুণ্ঠিত করেছিলো এবং স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিকে আবার ক্ষমতায় বসতে সহায়তা করেছিলো। কিন্তু ৭৫ এর সেই বাস্তবতা এখন আর নেই। বৈশ্বিক বাস্তবতাও পাল্টে গেছে। ৭৫ এর ভারত আর এখনকার ভারত এক নয়। সবকিছু মিলিয়ে বিএনপির এই ভারত বিরোধীতা দলটিকে এক ভয়ঙ্কর সঙ্কটের দিকে ঠেলে দিলে পারে এবং দলটির কফিনে শেষ পেরেক ঠুকতে পারে বলে অনেকে মনে করছে। যে কারণে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, বিএনপির ভারত বিরোধীতা তাদেরকে বড় ধরনের সঙ্কটে ফেলতে পারে। তার মধ্যে একাধিক কারণ রয়েছে।
 
প্রথমত, ভারত বিরোধীতা করলে বিশ্বে অন্যান্য দেশের কাছেও গ্রহণযোগ্যতা হারাবে বিএনপি। কারণ ভারতের ওপর সবাই এখন নির্ভরশীল। বৈশ্বিক রাজনীতিতে ভারত একটি প্রভাবশালী দেশই নয়, নিয়ন্ত্রক দেশও বটে। বাংলাদেশের নির্বাচনই তার প্রমাণ। সেখানে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাবকে পাল্টে দিতে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিল। সেই ভারত বিরোধীতা যদি বিএনপি শুরু করে তাহলে বৈশ্বিকভাবে বিএনপিকে প্রত্যাখ্যান করার ডাক আসবে। সেক্ষেত্রে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বিএনপি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। এটি বিএনপির জন্য একটি বড় ধরনের কৌশলগত ভুল বলে অনেকে মনে করছেন। 

দ্বিতীয়ত, ভারত বিরোধীতার মাধ্যমে বিএনপি যে কূটনৈতিক নীতি গ্রহণ করেছে সে কূটনৈতিক নীতি আন্তর্জাতিকতা এবং সকল রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব পূর্ণ সম্পর্কের নীতির সাথে সামঞ্জস্য পূর্ণ নয়। ফলে বিএনপি ভারত বিরোধী, সাম্প্রদায়িক এবং জঙ্গী পৃষ্ঠপোষক রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিতি পাবে। যার ফলে বিএনপির সামনের দিনগুলোতে বড় ধরনের রাজনৈতিক ঝুঁকি বয়ে বেড়াতে হবে এবং রাজনৈতক এককিত্ব গ্রহণ করতে হবে। 

তৃতীয়ত, বাংলাদেশে যারা অসম্প্রদায়িতক চেতানায় বিশ্বাস করে, সেকুলার রাজনৈতিক চর্চা করে এবং যারা মনে প্রাণে জানে যে, ভারত বিরোধীতা একটা ভুল এবং রাজনৈতিক কুৎসিত নোংরা খেলা তারা বিএনপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে।বিএনপির অপরাজনীতিকে কোনভাবেই সমর্থন দিবে না। ফলে দেশে বিদেশে সবকিছু মিলিয়ে বিএনপি একটি জনবিচ্ছিন্ন দলে পরিণত হবে। এটি বিএনপির রাজনৈতিক অস্তিত্বকে সঙ্কটে ফেলবে বলে অনেকে মনে করেন।   


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭