ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির ভারত বিরোধিতায় খুশি আওয়ামী লীগ


প্রকাশ: 24/03/2024


Thumbnail

বিএনপি এখন ভারতবিরোধী রাজনীতি আবার সামনে নিয়ে এসেছে। ৭৫ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বিএনপি যে রাজনীতি চর্চা করত সেই রাজনীতির ধারা আবার ফিরিয়ে নিয়ে এসেছে। প্রকাশ্যে ভারত বিরোধীতা, ভারতীয় পণ্য বর্জন এবং জনগণের মধ্যে ভারত বিদ্বেষ ছড়ানোই এখন বিএনপির রাজনীতির প্রধান উপজীব্য বিষয়। বিএনপির এই রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত সঠিক না ভুল সেটা সময়ই বলে দেবে। তবে  রাজনীতিতে বিএনপির নতুন করে ভারত বিরোধিতার জিকির নিয়ে আওয়ামী লীগ খুশি। 

আওয়ামী লীগ মনে করছে যে, এটির ফল আওয়ামী লীগের জন্য ইতিবাচক হবে। আওয়ামী লীগ এতদিন ধরে বিএনপির সম্পর্কে যা বলে আসছিল তা এখন সত্যি প্রমাণিত হচ্ছে—এমনটি মনে করেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা।

নানা কারণে বিএনপির বিরোধিতা আওয়ামী লীগের জন্য ইতিবাচক বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। প্রথমত, এতে প্রমাণিত হল যে, বিএনপি সাম্প্রদায়িক এবং উগ্র মৌলবাদীদের লালন করে। বাংলাদেশে যারা ভারত বিরোধিতা করে তারা প্রতিক্রিয়াশীল দক্ষিণপন্থী এবং উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী। আর এ কারণেই বিএনপি যে একটি সাম্প্রদায়িক প্রতিক্রিয়াশীল রাজনৈতিক দল সেটি প্রমাণিত হল তাদের ইন্ডিয়া কর্মসূচির অনুকরণ করার মধ্য দিয়ে। আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছিল যে, বিএনপি একটি সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল এবং উগ্র মৌলবাদীদের সঙ্গে তাদের একটি সম্পর্ক রয়েছে। সেটি বিএনপির সাম্প্রতিক ভারত বিরোধিতা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হল। 

দ্বিতীয়ত, ভারত বুঝল যে, আওয়ামী লীগই তাদের একমাত্র বন্ধু। আওয়ামী লীগ এতদিন ধরে বিভিন্ন কূটনৈতিক ফোরামে বোঝানোর চেষ্টা করেছিল যে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের শক্তিরাই একমাত্র ভারতের প্রকৃত বন্ধু। ৭১ এর বন্ধুরাই প্রকৃত বন্ধু এবং বাংলাদেশ ভারত এবং চীন দুই দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে রেখে চলেছে। আর এ কারণেই বিএনপি ভারত বিরোধী এবং তারা যদি ক্ষমতায় আসে তাহলে তারা বাংলাদেশে ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের জায়গা দেবে। ভারতকে কোণঠাসা করার জন্য ভারত বিরোধীদেরকে মদদ দেবে এবং একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে লালন করবে। এটি আওয়ামী লীগ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বলার চেষ্টা করেছিল। এখন বিএনপির ভারত বিরোধিতা দিয়ে সেটি প্রমাণিত হল।

তৃতীয়ত, বিএনপি একটি সংকীর্ণ উগ্র জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দল। একটি দেশের পণ্য বর্জন করাটা উগ্র জাতীয়তাবাদের একটি পরিচয়।বাংলাদেশে এখন ভারত বিরোধিতা উগ্র জাতীয়তাবাদের একটি লক্ষণ, যেটি একটি ফ্যাসিস্ট সংস্কৃতি। দেশে দেশে উগ্র ফ্যাসিস্টরা সস্তা জনপ্রিয়তা লাভের আশায় এ ধরনের উগ্র জাতীয়তাবাদী চিন্তা চেতনার উন্মেষ ঘটায় এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্রের বিরূদ্ধে এক ধরনের কুৎসিত নোংরা আক্রমণাত্মক খেলা খেলে, যেখানে জনগণকে বিভ্রান্ত করার সুযোগ থাকে। ভারত বিরোধিতা করে বিএনপি সেটি প্রমাণ করল এবং এই ধরনের একটি রাজনৈতিক দল আন্তর্জাতিক ভাবে কখনো গ্রহণযোগ্যতা পাবে না এবং স্বীকৃত হবে না এটি প্রমাণিত হল।

চতুর্থত, ভারত বিএনপিকে আর কোনভাবেই আশ্রয় প্রশ্রয় দিবে না। ভারতের সঙ্গে বিএনপি সুসম্পর্ক স্থাপনের জন্য বারবার চেষ্টা করেছে। প্রতিটি নির্বাচনের আগে বিএনপির প্রতিনিধিরা ভারতে যায় এবং তারা দেন দরবার করে। কিন্তু এখন ভারতের আসল চেহারা উন্মোচিত হওয়ার ফলে ভারত বিএনপিকে একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে আর স্বীকৃতি দিবে না। এটি আওয়ামী লীগের জন্য একটি বিরাট প্রাপ্তি। ফলে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে যেমন আওয়ামী লীগ লাভবান হলো তেমনি বন্ধুত্বের পরীক্ষাতেও আওয়ামী লীগ অনেক এগিয়ে গেল। সে কারণে বিএনপির ভারত বিরোধিতায় আওয়ামী লীগ অনেক খুশি।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭