ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির ইফতার পার্টিতে পিটার হাস গেলেন না কেন?


প্রকাশ: 25/03/2024


Thumbnail

বিএনপির বক্তব্য অনুয়ায়ী দেশে এখন তীব্র অভাব চলছে। দেশের মানুষ অর্ধাহারে, অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। দেশের মানুষের সীমাহীন দুর্দশা। এ বক্তব্য দিয়ে বিএনপি পাঁচ তারকা হোটেলে জমকালো ইফতার পার্টির আয়োজন করলো। বিএনপির এই ইফতার পার্টির আয়োজনের প্রধান কারণ ছিলো কূটনৈতিকদের সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়া। কিন্তু বিএনপির এই লাখ টাকার ইফতার পার্টিতে মূল আকর্ষণ মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস উপস্থিত থাকেননি। থাকেননি ভারতের রাষ্ট্রদূত প্রণয় ভার্মাও। ফলে এই ইফতার পার্টিটি কূটনীতিকদের আলঙ্করিত একটি ইফতার পার্টিতে পরিণত হয়েছে। 

গত কিছুদিন ধরেই বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা শোচনীয়। মানুষ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্রের দামের চাপে পিষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ইফতার পার্টিতে অর্থনৈতিক সঙ্কটের কথা বলছিলেন। 

বিএনপি নেতারা সবসময় বলে থাকেন যে, দেশের মানুষ ভালো নেই, বিএনপির অবস্থাও খুব খারাপ, বিএনপির অনেক নেতাই অর্ধাহারে, অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন। যারা কারাগারে আছে তাদের অবস্থাও ভালো না। বিএনপির অনেক নেতা জেলে আছেন বলেও তারা আহাজারি, আর্তনাদ করেন। এই যদি হয় বাস্তব অবস্থা, তাহলে বিএনপি পাঁচ তারকা হোটেলে ইফতার পার্টির আয়োজন করে কিভাবে। যে ইফতার পার্টির প্রতি প্লেট ইফতারের মূল্য ১০ হাজার টাকা। 

বিএনপি গরিব মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে, দলের আটক নেতাকর্মীদের পরিবারের পাশে না দাঁড়িয়ে, পলাতক নেতাকর্মীদের আইনগত সহায়তা না দিয়ে কিভাবে এরকম ইফতার বিলাস করতে পারে সে বিষয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তবে বিএনপির ইফতার পার্টির প্রধান উদ্দেশ্য ছিলো কূটনৈতিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা। মুখে ভারত বিরোধীতার কথা বললেও ভারতের রাষ্ট্রদূত প্রণয় ভার্মাকে ইফতার পার্টিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিলো এবং তিনি যেন ইফতার পার্টিতে আসেন সেজন্য দফায় দফায় অনুরোধও জানানো হয়েছিল। কিন্তু বিএনপিকে হতাশ করে ভারতের রাষ্ট্রদূত ঐ ইফতার পার্টিতে আসেননি। তার বদলে অবশ্য ভারতের ডেপুটি হাইকমিশনার ড. বিনয় জর্জ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তবে ইফতার পার্টির মূল আকর্ষণ মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস সেখানে উপস্থিত হননি। 

পিটার ডি হাস ঢাকায় আসার পর বিএনপি যতগুলো ইফতার পার্টির আয়োজন করেছিলো, সবগুলোতেই মার্কিন এই রাষ্ট্রদূত উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু গতকাল তিনি থাকেননি। তার বদলে যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ অ্যাফেয়ার্স হেলেন লাফাভ উপস্থিত ছিলেন এই ইফতার পার্টিতে। অবশ্য ইফতার পার্টিতে যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক ছাড়া আর কোন উল্লেখযোগ্য প্রভাবশালী দেশের রাষ্ট্রদূতরা উপস্থিত ছিলেন না। এই ইফতার পার্টিতে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত সৈয়দ মারুফের উপস্থিতির মধ্য দিয়ে বিএনপি জানান দিলো যে, এখন বিএনপি আবার পাকিস্তানিদের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। 

তবে পিটার হাস কেন ইফতার পার্টিতে উপস্থিত হননি, সে সম্পর্কে মার্কিন দূতাবাসের পক্ষ থেকে কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অনেকে মনে করেন যে, ইফতার পার্টিতে পিটার ডি হাসের আসা যেন নিশ্চিত হয় সে জন্যই ইফতার পার্টির পূর্বে সময় নির্ধারণ করা হয়েছিলো তার সাথে কথা বলে। কিন্তু পিটার ডি হাস পূর্ব নির্ধারিত অন্য কাজে ব্যস্ত থাকার জন্য এই ইফতার পার্টিতে আসেননি। এটি কি সত্যি সত্যি কোন কাজের জন্য বা বাইরে অবস্থান করার জন্য তিনি ইফতার পার্টিতে আসেনি নাকি বিএনপিকে এড়িয়ে যাওয়ার জন্য। 

একটা সময় বিএনপির সাথে তার একটা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। এমনকি বিএনপির একজন স্থানীয় পর্যায়ের নেতার বাড়িতে পর্যন্ত তিনি চলে গিয়েছিলেন নিরাপত্তার ঝুঁকি নিয়ে। সেই মার্কিন রাষ্ট্রদূত বিএনপির পাঁচ তারকা হোটেলের ইফতার পার্টিতে যোগ দিলেন না। এই যোগ না দেওয়া কি বার্তা বহন করে। পিটার ডি হাস এখন বদলে গেছেন? নাকি বিএনপির প্রতি তার আগের ভালোবাসা কমে গেছে?  


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭