ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলার প্রার্থী: শৃঙ্খলা ফেরাতে উদ্যোগ নিচ্ছে আওয়ামী লীগ


প্রকাশ: 26/03/2024


Thumbnail

উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের যে কেউ ইচ্ছা করলেই প্রার্থী হতে পারবেন না। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছে না এবং দলগতভাবে কোন মনোনয়নও দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু তারপরও দলের বিভক্তি বন্ধ এবং শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগকে কিছু বাস্তব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হচ্ছে। আওয়ামী লীগের একাধিক নীতি নির্ধারকরা এই তথ্য জানিয়েছেন। খুব শীঘ্রই আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে বলে আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানিয়েছে।

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রতিটি উপজেলায় সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ওই বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদককে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। তারা আওয়ামী লীগের যথেচ্ছ ভাবে যেন প্রার্থী না দাঁড়ায় সে ব্যাপারে সম্ভাব্য প্রার্থীদের সঙ্গে বসবেন এবং একটি সমঝোতায় আসার চেষ্টা করবেন। আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচনে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের মডেল অনুসরণ করতে চায়। যেখানে আওয়ামী লীগের একজন প্রার্থী থাকবেন। যিনি প্রচ্ছন্নভাবে দলের সমর্থন পাবেন। অন্যজন বিকল্প প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

কিন্তু দেখা যাচ্ছে, অধিকাংশ স্থানে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সংখ্যা পাঁচের অধিক হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও ১০ জন আওয়ামী লীগের নেতা পর্যন্ত প্রার্থী হয়ে গেছেন। এই অবস্থায় বিএনপি এবং জামায়াত সুযোগ নিতে পারে এবং তারা নির্বাচনে দাঁড়িয়ে বিভক্ত আওয়ামী লীগকে পরাজিত করে একটা নতুন ইস্যু তৈরি করতে পারে। আর এ কারণেই অনেকে মনে করছেন যে, এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য প্রার্থীদের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ করা দরকার।

আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারক মহলে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং এ ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। দলীয় প্রতীক না হলেও, দলীয় ভাবে মনোনয়ন না দেওয়া হলেও যারা প্রার্থী হবেন তাদেরকে নিয়ে একটি সমঝোতা করা হবে এবং সেই সমঝোতার ভিত্তিতে সর্বোচ্চ দুইজন প্রার্থী দল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন বলে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো ইঙ্গিত দিয়েছে। তবে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে হবে না। স্থানীয় পর্যায়ে আলাপ, আলোচনা এবং সমঝোতার মাধ্যমে এটি করা হবে।

এছাড়াও আওয়ামী লীগ এবার উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে কতগুলো সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে যাচ্ছে। সামনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্তগুলো চূড়ান্ত হবে বলেও জানা গেছে। এসব সিদ্ধান্তের মধ্যে আছেন যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হবেন তারা নিজেদের দলীয় পদ ব্যবহার করতে পারবেন না। নির্বাচনের কোন পোস্টার বা ব্যানারে তারা আওয়ামী লীগের কোন পদে আছেন সেটি উল্লেখ করতে পারবেন না।

দ্বিতীয়ত, নির্বাচনে প্রার্থীরা সহিংসতায় জড়ালে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং প্রয়োজনীয় দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। তৃতীয়ত, কোন নির্বাচিত প্রতিনিধি যেমন এমপি বা অন্যরা কোন প্রার্থীকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সমর্থন দিতে পারবে না।

আওয়ামী লীগের কাছে এরকম তথ্য এসেছে যে, এবারের উপজেলা নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত বিএনপি অংশগ্রহণ করছে। আর এ কারণেই আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী থেকে যেন শেষ পর্যন্ত বিএনপির হাতে উপজেলার চাবি না চলে যায় সে জন্য এখন থেকেই সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। আর এই সতর্কতার অংশ হিসেবেই উপজেলা নির্বাচনে যথেচ্ছ প্রার্থীদের লাগাম টেনে ধরার উদ্যোগ নিচ্ছে আওয়ামী লীগ। তবে শেষ পর্যন্ত এই উদ্যোগ কতটা সফল হবে তা নিয়েও বিভিন্ন মহলে সংশয় রয়েছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭