ইনসাইড পলিটিক্স

আবার পরিত্যক্ত মেজর হাফিজ


প্রকাশ: 26/03/2024


Thumbnail

মেজর হাফিজকে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছিল। হঠাৎ করে তিনি আওয়ামী বিরোধী হয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের কিছুটা হলেও উজ্জীবিত করেছিলেন। কিন্তু ইতোমধ্যে থলের বিড়াল বেরিয়ে গেছে। বিএনপির নেতারা জেনে গেছে যে, সরকারের সঙ্গে তার (মেজর হাফিজ) দেন দরবার সঠিকভাবে না হওয়ায় এবং চাওয়া পাওয়ার হিসেব না মেলাতেই তিনি শেষ পর্যন্ত বিএনএমে যোগদান করেননি। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে যোগদান না করার জন্য মেজর হাফিজ পুরস্কৃত হবেন কেন? এ নিয়ে বিএনপির মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। কারণ তিনি আদর্শিক কারণে বিএনএমে যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেননি। বরং সরকারের সঙ্গে তার বনিবনা না হওয়াতেই তিনি শেষ পর্যন্ত এই টোপ গেলেননি। 

তিনি যে বিএনএমে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে বিভিন্ন রকম উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন, তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ হল তিনি এই তথ্যগুলোকে সম্পূর্ণ গোপন রেখেছিলেন। যেমন- সাকিবের সাথে তার বৈঠকের বিষয়টি বা বিএনএম এর অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়গুলো তিনি বেমালুম চেপে গিয়েছিলেন। আর এ কারণেই বিএনপি এখন তাকে বিশ্বাস করতে পারছে না। আবার বিএনপিতে পরিত্যক্ত হয়েছেন মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ। উল্লেখ্য, নির্বাচনের আগে মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ ঘোষণা করেছিলেন যে, বিএনপির রাজনীতি ভুল হচ্ছে এবং বিএনপি ভুল পথে চলছে। এরকম বাস্তবতায় তিনি বিএনপির নির্বাচনে যাওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছিলেন। কিন্তু তার এই বক্তব্য হালে পানি পায়নি। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার সময় তিনি বাধাপ্রাপ্ত হন। পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে তিনি বিদেশ যাওয়ার অনুমতি পান বটে। কিন্তু বিদেশ থেকে ফিরে আসার পরপরই নাশকতার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং ক দিন কারাগারে থাকার পর তিনি মুক্তি পান। তার মুক্তি পাওয়ার পরপরই তিনি ভোল পাল্টে ফেলেন এবং বিএনপির একজন ত্যাগী নেতা হিসাবে নিজেকে আত্মপ্রকাশের চেষ্টা করেন। এ সময় তিনি আওয়ামী লীগ খুব শীঘ্রই ক্ষমতা থেকে সরে যাবে, বিএনপি আবার ক্ষমতায় আসবে ইত্যাদি বক্তব্য দিয়ে বিএনপির হাইকমান্ডের মন জয় করতে চেষ্টা করেন। আর তাৎক্ষণিকভাবে তিনি পুরস্কারও পান। বিএনপি তাকে স্বাধীনতা উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক করে। 

যেহেতু তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা, সেজন্য তাকে এই দায়িত্ব দিয়ে বিএনপি মনে করে, এটি সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির একটি চাপ হিসেবে বিবেচিত হবে। কিন্তু মেজর হাফিজের নেপথ্য কাহিনী প্রকাশ হওয়ার পর বিএনপি নেতারা বিব্রত বোধ করতে শুরু করেন। এরপর বিএনপির হাইকমান্ডের নির্দেশে তাকে আবার গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক গুলোতে ডাকা হচ্ছে না। নীতি নির্ধারক ফোরামে তাকে আবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। বিএনপিতে তিনি আগের মতো আবার পরিত্যক্ত হিসেবে থাকছেন। 

বিএনপি নেতারা বলছেন যে, মেজর হাফিজ স্বার্থের জন্য সবকিছু করতে পারে। তিনি একজন রূট লোভী। রাজনীতিবিদ হিসেবে বারবার নিজেকে লোভী প্রমাণ করেছেন। আর এ কারণেই মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজকে বিএনপিতে নিয়ে এসে নতুন করে সংকট সৃষ্টি করতে চায় না। উল্লেখ্য, ২৫ মার্চ যে যুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ নয়াপল্টনে করা হয়েছিল সেখানে মেজর হাফিজের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিলো এবং মূল বক্তা হিসেবে তারই বক্তব্য রাখার কথা ছিলো। কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অসুস্থ শরীরে এসে সেখানে বক্তব্য দিয়েছেন। অর্থাৎ মেজর হাফিজের অধ্যায় এখন বিএনপিকে শেষ হয়ে যাচ্ছে। বিএনপির নেতারা স্বীকার করেছেন যে, মেজর হাফিজের মতো একজন আনপ্রেডিক্টেট লোককে নেতৃত্ব দিয়ে বিএনপি নতুন করে ঠকতে চায় না।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭