ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে যেকারণে এবার ভেটো দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র


প্রকাশ: 26/03/2024


Thumbnail

গাজায় যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে। যুক্তরাষ্ট্র ভোটো না দেওয়ায় এবার প্রস্তাবটি পাস করা সম্ভব হয়েছে। এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্র গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ভেটো দেওয়া থেকে বিরত থেকেছে।

এর আগে তিনবার গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব বাতিল করতে যুক্তরাষ্ট্র তার ভেটো ক্ষমতা ব্যবহার করেছিল। এবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন আর গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ভেটো না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। পক্ষে বা বিপক্ষে ভোটদান থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে প্রস্তাবটি পাস করার সুযোগ করে দেয়।

যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ ইসরায়েলি নেতৃত্বের প্রতি বাইডেনের ক্রমবর্ধমান হতাশার লক্ষণ হিসেবে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক মনোযোগ আকর্ষণ করেছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক অ্যাডাম শাপিরো বলেছেন, এটি একটি বড় পরিবর্তন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এখনও ইসরায়েলকে অস্ত্র দেওয়া বন্ধ করেনি। আর শেষ পর্যন্ত এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধ প্রচেষ্টার ক্ষতি করার অভিযোগ করা হয়েছে। এ থেকে বাইডেনের সঙ্গে নেতানিয়াহুর ক্রমবর্ধমান উত্তেজনাও প্রকাশ পায়।

এখন প্রশ্ন হলো বাইডেন প্রশাসন গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা বন্ধে ইসরায়েলকে চাপ দেবে কি না?

বাইডেন প্রশোসনের কর্মকর্তারা ইসরায়েলকে গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে এবং আরও ত্রাণ সহায়তা প্রবেশে অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু তারা এখনও পর্যন্ত সেই লক্ষ্যগুলোকে এগিয়ে নিতে ইসরায়েলকে চাপ দিতে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। যেমন ইসরায়েলকে দেওয়া অস্ত্র সহায়তায় এসব শর্ত আরোপ করেনি।

সোমবার হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কিরবি সাংবাদিকদের বলেন, এবারের প্রস্তাবে আমাদের ভেটো না দেওয়ার মানে এই নয় যে, আমারা আমাদের নীতিতে পরিবর্তন এনেছি। আমরা সবসময়ই জিম্মি মুক্তি চুক্তির অংশ হিসেবে যুদ্ধবিরতির কথা বলে আসছিলাম।

এ ছাড়া বাইডেন প্রশাসন ইসরায়েলকে গাজার রাফায় পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ না করার জন্য আহ্বান জানিয়ে আসছিল। কিন্তু ইসরায়েল তা কানে নিচ্ছিলো না।

বিশ্লেষকরা বলেছেন, সেখানে হামলা চালানো হলে, ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। একই সঙ্গে আঞ্চলিক যুদ্ধও বেধে যাওয়ার শঙ্কাও রয়েছে। এতে পুরো মধ্যপ্রাচ্য অস্থির হয়ে উঠতে পারে।

গাজা উপত্যকা ও মিশরের সীমান্তবর্তী শহর রাফাহ। ফিলিস্তিনের দিক থেকে এটি গাজার সর্বদক্ষিণের শহর। আর মিশরের দিক থেকে এটি উত্তর সিনাইয়ের প্রশাসনিক শহর।

রাফায় হামাসের চারটি ব্রিগেড রয়েছে- এমন অভিযোগ এনে সেখানে বিমান ও স্থল হামলা চালাতে চাইছে ইসরায়েল। ইসরায়েল চাইছে রাফা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে মিশরের সিনাই উপত্যকায় ঠেলে দিতে।

কিন্তু তা করলে মিশরের সঙ্গে ৪০ বছর পুরনো ক্যাম্প ডেভিড চুক্তির লঙ্ঘন হবে। যুক্তরাষ্ট্রও সেই চুক্তির একটি পক্ষ। ওই চুক্তির মাধ্যমেই প্রথম আরব রাষ্ট্র হিসেবে মিশর ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য ও জাতিসংঘের পাশাপাশি সৌদি আরব, জর্ডান ও মিশরও ইসরায়েলের রাফা অভিযানের পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করে নিন্দা জানিয়েছে। সব পক্ষই এ ব্যাপারে সতর্ক করছে, রাফায় হামলা ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে।

বাইডেন প্রশাসন ফিলিস্তিন সংঘাতের একটি ব্যাপক সমাধানের জন্যও কাজ করছে। ইসরায়েলের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা এবং ইসরায়েল ও আরব রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। বিশেষ করে সৌদি আরব ইসরায়েলের সঙ্গে কুটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের বিনিময়ে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের শর্ত জুড়ে দিয়েছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭