সংস্কৃতি ও ইবাদতে মুখর উজবেকদের রমজান

রমজানে পুরো উজবেকিস্তান ধর্মীয় উৎসবে মেতে ওঠে। এখানকার মসজিদগুলোকে নতুন করে ধোয়া-মোছা করা হয়। তারপর নতুন কাপড় ও বাহারি রঙের কার্পেট দিয়ে নান্দনিক ক্যালিগ্রাফিতে সাজানো হয় শহরের মসজিদগুলো। আর এসবের সঙ্গে থাকে নানান ঘ্রাণের সুগন্ধি আতর। মসজিদগুলো এভাবে সাজানো তাদের প্রথাগত ঐতিহ্য। 

বাংলা ইনসাইডার আয়োজিত 'ইনসাইড রমজান' ধারাবাহিক এর আজকের পর্বে আমরা জানবো উজবেকিস্তানের মুসলিমদের রমজান ও ইফতার সংস্কৃতি-

ঐতিহ্য আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর উজবেকিস্তান একটি স্বাধীন মুসলিম রাষ্ট্র। ঐতিহ্যগতভাবে দেশটির সংস্কৃতি জুড়ে আছে ইসলাম।

রমজানে উজবেকরা সাধারণত খতমে তারাবিহকে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। সাধারণত শহর ও প্রধানতম মসজিদগুলোতে খতমে তারাবিহ হয়। তবে তুলনামূলক ছোট মসজিদ ও বাসা বাড়িসহ শহরের একাধিক স্থানে খতমের তারাবির ব্যবস্থা করা হয়।

উজবেকরা ইফতারের মুহূর্তটাকে একটা উৎসব আয়োজন মনে করে। যেকারনে, কে কীভাবে ইফতারের দরস্তরখান সাজাবে তা নিয়ে উজবেকদের মধ্যে একধরনের প্রতিযোগিতা চলে। তাদের ইফতার আয়োজনগুলো ঘরেও হয় আবার উৎসবের সাথে রাস্তায় সম্মিলিতভাবেও হয়। 

ঘরোয়া ইফতার আয়োজনগুলোতে পরিবারের সকল সদস্য উপস্থিতি থাকে। পরিবারের প্রধান কর্তার শুরু করার মধ্য দিয়ে সময়মতো ইফতার শুরু করা উজবেকিস্তানের ঐতিহ্যগত সংস্কৃতি। 

এছাড়াও, উজবেকরা প্রতিদিনই কারও না কারও বাড়িতে ইফতার পাঠায়। পাড়াপ্রতিবেশীদের দরজায় যখন কড়া নাড়ে তখন তাদের ছোট ছোট বাচ্চারা ‘ইয়া রমাজান! ইয়া রমাজান!’ নামের একটি নাশিদ গাইতে থাকে। 

উজবেকিস্তানবাসীদের ইফতার আয়োজনগুলো সাজে মূলত সুনসাহ ও নাসতু নামের খাদ্য দিয়ে। সুনসাহ তৈরি হয় গোশত ও পেঁয়াজকে খোলা আগুনে পুড়ে। আর, নাসতু এক ধরনের সুপেয় পানি। যা বানানো হয় চাল আর গোশতের সমন্বয়ে। সুনসাহ আর নাসতুর সঙ্গে থাকে বাহারি ফল। 

বিশেষ করে, উজবেকদের ইফতার টেবিলে বাতির রুটি, সামসা পেস্ট, নিসালদা হালুয়া, নাশপাতি, কমলা, বেদানা ও গিলাফ উজবেকির উপস্থিতি থাকে।

এছাড়াও, উজবেকরা ‘তাশাক তাশাক’ একটি খাদ্যও রোজার মাসে প্রস্তুত করে থাকেন। এটি মূলত, তাতারি হালুয়া।

উজবেকদের সেহরিতেও রয়েছে ঐতিহ্যের ছোঁয়া। সেহরিতে তাদের প্রধান খাদ্য হলো বুখারি চাল। তরকারিতে থাকে ভেড়ার এক ধরনের গোশত, যা তেল, পেঁয়াজ, গাজর স্কোয়াশ, কিশমিশ, মসলাও জিরা দিয়ে রান্না করা হয়।