ইনসাইড পলিটিক্স

অবশেষে ১৪ দলকে সক্রিয় করার উদ্যোগ নিচ্ছে আওয়ামী লীগ


প্রকাশ: 27/03/2024


Thumbnail

বিএনপির ভারত বিরোধী কর্মসূচির পাল্টা হিসেবে আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৪ দলকে আবার নতুন করে সাজানো এবং সক্রিয় করার জন্য দলটির সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। আগামী ঈদের পরপরই ১৪ দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাবে এবং দলটির ভিতর যে মান অভিমান, ক্ষোভ, হতাশা ইত্যাদি দূর করে দলকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে কাজ শুরু করা হবে বলে একাধিক সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে নিশ্চিত করেছে।

উল্লেখ্য যে, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের আগেই ১৪ দলের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। এই সময় ১৪ দলের মিত্ররা আসন ভাগাভাগি নিয়ে বেশ অসন্তুষ্ট হন। ১৪ দলকে শেষ পর্যন্ত অল্প কিছু আসন দেওয়া হয় এবং অসন্তুষ্ট হয়েই ১৪ দল এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। তবে ১৪ দলের শরিকদেরকে নৌকা প্রতীকে অল্প কিছু আসন দেওয়া হলেও তাতে তারা যতটা অসন্তুষ্ট বা হতাশ হয়েছেন তার চেয়ে বেশি হতাশ হয়েছেন প্রতিটি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। ওই নির্বাচনে ১৪ দলের হেভিওয়েট নেতা হাসানুল হক ইনু, ফজলে হোসেন বাদশাসহ অনেকেই পরাজিত হন। এরপর ১৪ দলের পক্ষ থেকে বার বার আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও আওয়ামী লীগ তাদেরকে এড়িয়ে গেছেন বলেই একাধিক সূত্র জানিয়েছে। এমনকি নারী সংসদ সদস্য মনোনয়নের সময়েও ১৪ দলকে আমলে নেওয়া হয়নি। ১৪ দলের কোন সদস্য ছাড়াই আওয়ামী লীগ আটচল্লিশটি আসনে নারী সংসদ সদস্য মনোনয়ন দিয়েছে। যারা সবাই তাদের দলীয় প্রার্থী। এরকম বাস্তবতার ১৪ দল নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল।

অন্যদিকে নির্বাচনের পর হতাশগ্রস্ত বিএনপি হতাশা কাটতে নানা রকম উদ্যোগ এবং পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল। এর মধ্যে তারা হঠাৎ করেই ভারত বিরোধী মনোভাব চাঙ্গা করেছে। মালদ্বীপের ইন্ডিয়া আউট কর্মসূচির মতো ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছে এবং বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ নেতা সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর প্রকাশ্যে ভারতীয় চাদর পুড়িয়ে দিয়ে ভারতীয় পণ্য বর্জনের আন্দোলনের প্রতি সমর্থন দিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে, এটি জনগণের কাছে এখন সবচেয়ে সমাদৃত দাবি।

এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আবার ভারত বিরোধিতা, সাম্প্রদায়িকতা এবং উগ্র মৌলবাদের উস্কানি সৃষ্টি হয়েছে। ভারত বিরোধীরা আড়ালে পাকিস্তানপন্থী রাজনীতিবিদরা সংঘবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করছে। এরকম বাস্তবতায় আওয়ামী লীগ আবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করার বিষয়টি সামনে এনেছে বলে জানা গেছে। ২০০১ সালে নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয় এবং ১৪ দল গঠন করে। এটি একটি আদর্শিক জোট। এখন যখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, নতুন করে ভারত বিরোধিতা শুরু হয়েছে তখন আওয়ামী লীগ আবার নতুন করে আবার ১৪ দলকে সক্রিয় করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

আওয়ামী লীগের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা বলেছেন যে, ১৪ দলের মধ্যে মান অভিমান থাকবে, নানা রকম ভুল বোঝাবুঝি থাকবে। কিন্তু আদর্শের প্রশ্নে আমরা এক। এখন যখন ভারতীয় পণ্য বর্জনের নামে নতুন করে অরাজকতার সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হচ্ছে, তখন অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। আর এ কারণেই ১৪ দল আবার সক্রিয় হচ্ছে এবং ঈদের পরই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালনকারী এই জোটকে রাজনীতির মাঠে সক্রিয় দেখা যাবে বলে আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করছেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭