ইনসাইড গ্রাউন্ড

আইপিএল ইতিহাসে ৫২৩ রানের ম্যাচ, রেকর্ডের ছড়াছড়ি


প্রকাশ: 28/03/2024


Thumbnail

ইতিহাসের অন্যতম এক ম্যাচের স্বাক্ষী হল ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)। দুই ইনিংস মিলিয়ে ৫২৩ রানের ম্যাচের দিনে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে হারিয়েছে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। ব্যাটারদের তাণ্ডবের এ দিনে হার্দিক পান্ডিয়ার দলের বিপক্ষে ৩১ রানের জয় পায় প্যাট কামিন্সরা।

এদিন ম্যাচে ভেঙ্গেছে বেশ কিছু রেকর্ডও। তৈরি হয়েছে নতুন ইতিহাস। আইপিএলে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটি এতদিন ছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর দখলে। ২০১৩ সালে পুনে ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে ২৬৩ রান করেন ক্রিস গেইল-ডি ভিলিয়ার্সরা। সেই রেকর্ড ভাঙল অভিষেক শর্মা ও ক্লাসেনদের ব্যাটিং তাণ্ডবে। মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ করে ২৭৭ রান।

বুধবার (২৭ মার্চ) রাজিব গান্ধী স্টেডিয়ামে হায়দরাবাদ ও মুম্বাইয়ের ইনিংস মিলিয়ে রান হয়েছে ৫২৩। যা আইপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। তার আগে এই রেকর্ডটি ছিল চেন্নাই সুপার কিংস ও রাজস্থান রয়্যালসের। ২০১০ সালে চিপকে দুই ইনিংস মিলিয়ে তারা করেছিল ৪৬৯ রান। ওই ম্যাচে ৬৯টি বাউন্ডারি হাঁকিয়েছিল দু’দল, আইপিএলে যা ছিল সর্বোচ্চ বাউন্ডারির রেকর্ড। তাদের রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছে হায়দরাবাদ-মুম্বাই ম্যাচ।

আইপিএলে এর আগে দুই ইনিংস মিলিয়ে সর্বোচ্চ ছক্কা হয়েছিল ২০১৮ সালে। বেঙ্গালুরু ও চেন্নাই হাঁকিয়েছিল ৩৩টি ছক্কা। রাজিব গান্ধি স্টেডিয়ামে মুম্বাই ও হায়দরাবাদ হাঁকিয়েছে ৩৮টি ছক্কা। পুরুষদের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেও দুই ইনিংস মিলিয়ে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড এখন হায়দরাবাদ ও মুম্বাইয়ের দখলে। এর আগে রেকর্ডটি ছিল বালখ লেজেন্ডস ও কাবুল জানানের দখলে। ওই ম্যাচে ৩৭ ছক্কা মেরেছিল দু’দল।

আইপিএলে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কা হাঁকানোর রেকর্ডটি বেঙ্গালুরুর দখলে। ২০১৩ সালে পুনের বিপক্ষে রেকর্ড গড়া ম্যাচে ২১টি ছক্কা মেরেছিল তারা। বুধবার হায়দরাবাদের বিপক্ষে মুম্বাই মেরেছে ২০টি ছক্কা, যা যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। তাদের সমান ২০টি ছক্কা আছে বেঙ্গালুরু ও দিল্লি ক্যাপিটালসের।

২০২০ সালে পরে ব্যাট করে ২২৬ রান করেছিল রাজস্থান রয়্যালস। আইপিএলে দ্বিতীয় ইনিংসে এটা ছিল সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। বুধবার রাতে ২৪৬ রান করে সেই রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে মুম্বাই।

এদিন শুরু থেকে তাণ্ডব বইয়ে দেওয়া হায়দরাবাদ প্রথম সাত ওভারেই দলীয় শতরানের গণ্ডি পার করে ফেলে। এর আগে তাদের প্রথম উইকেটের পতন হয় ৪৫ রানে। মায়াঙ্ক আগারওয়ালের বিদায়ের পরই শুরু হয় আসল ঝড়। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে হেড ও অভিষেক মিলে গড়েন ৬৮ রানের জুটি। ৬২ রান করা হেডের বিদায়ে সেই জুটি ভাঙে, এমন ইনিংস খেলতে মাত্র ২৪ বলে অজি ক্রিকেটার ৯টি চার ও ৩টি ছয় হাঁকিয়েছেন। এরপর ২৩ বলে ৬৩ রান করে ফেরেন অভিষেক। যেখানে ৩টি চার ও ৭টি ছয়ের মার।

১৬১ রানে তৃতীয় উইকেট হারানোর পর আর হায়দরাবাদকে পেছনে তাকাতে দেননি মার্করাম-ক্লাসেন জুটি। ক্লাসেন ব্যক্তিগত ফিফটি পেয়েছেন ২৪ বলে। পরবর্তী ১০ বলে তিনি আরও ২৯ রান নিজের নামের পাশে যোগ করেন। সবমিলিয়ে মাত্র ৩৪ বলে ৪টি চার ও ৭টি ছয়ে এই দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটার অপরাজিত থাকেন ৮০ রানে। এছাড়া আরেক অপরাজিত ব্যাটার মার্করাম ২৮ বলে ৪২ রান করেন। দলীয়ভাবে হায়দরাবাদ আজ আইপিএলের দ্বিতীয় দ্রুততম দুইশ রান তোলে। যাতে তাদের লেগেছে ১৪.৪ ওভার। এর আগে ২০১৬ আসরে বেঙ্গালুরু ১৪.১ ওভারে দলীয় ২০০ পেরিয়েছিল।

হায়দরাবাদের এমন ঝড় তোলার দিনে স্বাভাবিকভাবেই দিশেহারা ছিলেন মুম্বাইয়ের বোলাররা। আইপিএল ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে অভিষেক হওয়া কেনা মাফাখা ৪ ওভারে দেন ৬৬ রান। যা আইপিএলে অভিষিক্ত বোলার হিসেবে সবচেয়ে বেশি রান দেওয়ার রেকর্ড। সবমিলিয়ে টুর্নামেন্টের ষষ্ঠ খরুচে বোলার মাফাখা। পাশাপাশি তিনি ছিলেন উইকেটশূন্য। মুম্বাইয়ের হয়ে এদিন একটি করে উইকেট নেন হার্দিক পান্ডিয়া, জেরাল্ড কোয়েটজে ও পিযূশ চাওলা। তবে জাসপ্রিত বুমরাহ বাদে তাদের সবাই দশের বেশি গড়ে রান দিয়েছেন।

তবে রান পাহাড়ের স্তুপে পতিত হয়েও ঘুরে দাঁড়ানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করে মুম্বাই। লড়াই চালিয়ে যায় প্রথম থেকেই। রোহিত শর্মা আর ইশান কিশানের ওপেনিং জুটিতে ২০ বলে আসে ৫৬ রান। ঝড়ো শুরুর পর ১৩ বলে ৩৪ করা কিশানকে ফেরান শাহবাজ আহমেদ। ১২ বকে ২৬ করে প্যাট কামিন্সের শিকারে পরিণত হন রোহিত। দুই ওপেনার ফিরে গেলেও থামেনি মুম্বাইয়ের আগ্রাসন। ওয়ানডাউনে নামা নামান ধীর করেন ১৪ বলে ৩০ রান। তার উইকেট নেন জয়দেব উনাদকাত।

তিন উইকেট হারালেও রানের চাকা থামেনি মুম্বাইয়ের। তিলক ভার্মা ও হার্দিক পান্ডিয়া মিলে দুরন্দান্ত গতিতে এগিয়ে নেন ম্যাচ। একটা সময় মনে হচ্ছিল, মুম্বাই বোধহয় সেফল হবে রান তাড়ায়। গড়বে নতুন রেকর্ড। তবে, কামিন্সের বলে ৩৪ বরেল ৬৪ করা তিলক আউট হলে সম্ভাবনা কমে আসে। ২০ বলে ২৪ রান করা পান্ডিয়া ফিরে গেলেও সেটি আরও ক্ষীণ হয়। শেষ দিকে মুম্বাইওেয়র টিম ডেভিডের ২২ বলে অপরাজিত ৪২ রান খেলা আবার জমিয়ে তোলে। কিন্তু, মুম্বাইকে থামতে হয় জয় থেকে ৩১ রান দূরে। হায়দরাবাদের পক্ষে কামিন্স ও উনাদকাত দুটি করেন উইকেট শিকার করেন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭