ইনসাইড বাংলাদেশ

ইইউর কঠোর পর্যবেক্ষণে ‘এমভি আব্দুল্লাহ’


প্রকাশ: 29/03/2024


Thumbnail

সম্প্রতি বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহকে জিম্মি করে রাখা সোমালিয়ার জলদস্যুদের খুব কাছ থেকে কঠোর পর্যবেক্ষণে রেখেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নৌবাহিনী। সেইসঙ্গে জিম্মি বাংলাদেশিসহ পণ্যবাহী জাহাজটি মুক্ত করতে আলটিমেটাম দিয়েছে সোমালি পুলিশ। এমনকি জিম্মি জাহাজ ও নাবিকদের উদ্ধারে কাজ করছে বীমাকারী প্রতিষ্ঠান প্রোটেকশন অ্যান্ড ইনডেমনিটি (পিঅ্যান্ডআই) এবং ক্রাইসিস টোয়েন্টিফোরও।

তবে, এখন পর্যন্ত সুস্থ ও নিরাপদে আছেন প্রত্যেক নাবিক। ক্ষতি হয়নি কারোই। পরিবারের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কবির গ্রুপের মুখপাত্র এবং মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম। তিনি বলেন, ক্রাইসিস টোয়েন্টিফোর জাহাজের নিরাপত্তাজনিত সমস্যায় মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করে। এমভি আব্দুল্লাহ জিম্মি হওয়ার পর এ গ্রুপের কয়েকজন মালিকপক্ষের সঙ্গে বাংলাদেশে এসে দেখা করে তাদের কর্মপদ্ধতি ঠিক করেছেন। জিম্মি জাহাজ ও নাবিকদের উদ্ধারে আমাদের সঙ্গে অনেকের আলোচনা হচ্ছে। ঠিক কার সঙ্গে কোথায় আলোচনা হয়েছে বা হচ্ছে, তা নির্দিষ্ট করে এ মুহূর্তে বলা ঠিক হবে না। তবে আন্তর্জাতিক পরিসরে অনেকের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে।

এদিকে সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবজায় থাকা জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ ও নাবিকদের উদ্ধার প্রক্রিয়ায় অগ্রগতির তথ্য দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা নানামুখী তৎপরতা চালাচ্ছি। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে জাহাজ ও নাবিকদের নিরাপদে উদ্ধার করা। আমরা অনেকদূর এগিয়েছি। জাহাজে খাদ্য সংকট নেই বলেও জানিয়েছেন হাছান মাহমুদ।

ওই জাহাজের এক নাবিকের স্বজন বলেন, দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে। এরই মধ্যে বিশুদ্ধ পানি ফুরিয়ে এসেছে। প্রতিদিন ব্যবহারের জন্য এক ঘণ্টা পানি দেওয়া হচ্ছে। ওয়াশ রুমে ব্যবহার করতে হচ্ছে সাগরের পানি। চার থেকে পাঁচ দিন পর একবার গোসল করতে দেওয়া হচ্ছে। যারা বিভিন্ন দায়িত্বে আছেন তারা ছাড়া অন্য নাবিকদের এক কেবিনেই গাদাগাদি করে রাখা হয়েছে। এসব কারণে প্রত্যেক নাবিকেরই চর্মরোগজনিত সমস্যা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় তারা বেশ অস্বস্তিতে আছেন।

গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরে সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়ে এমভি আবদুল্লাহ। দুই দিনে তিন দফা স্থান বদলে জাহাজ নেওয়া হয় সোমালিয়ার গোদবজিরান উপকূলে। উপকূল থেকে দেড় নটিক্যাল মাইল দূরে জাহাজটি অবস্থান করছে। জলদস্যুদের হাতে ভারী অস্ত্র রয়েছে।

এদিকে ইইউর যুদ্ধজাহাজ, ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজ জিম্মি জাহাজটিকে পর্যবেক্ষণে রেখেছে। জিম্মি নাবিকদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে কোনো ধরনের অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে না। সমঝোতার মাধ্যমে মুক্তিপণ দিয়েই নাবিকদের অক্ষত ও নিরাপদে উদ্ধারের পক্ষে স্বজনরা, মালিক পক্ষও সেটি চাইছে। জিম্মি করার এক সপ্তাহ পর ২০ মার্চ জলদস্যুদের প্রতিনিধি মুক্তিপণ নিয়ে মালিক পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করলে আশার আলো দেখা দেয়। তবে যোগাযোগের পর আরও এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে। এই সময়ে কতখানি অগ্রগতি হয়েছে, তা জানা যায়নি। মালিক পক্ষও নতুন করে কিছু বলছে না।

সূত্র জানায়, কোন প্রক্রিয়ায় কোথা থেকে টাকা সংগ্রহ করে দস্যুদের কাছে পৌঁছানো হবে, তা নিয়েই চলছে আলোচনা। কৌশলগত কারণে তাই মালিক পক্ষ চুপ রয়েছে। নাবিক পরিবারকেও এ বিষয়ে বাড়তি কিছু না বলার জন্য বলে দেওয়া হয়েছে।

এর আগে ২০১০ সালে এস আর শিপিংয়ের এমভি জাহাজ মণি নামে যে জাহাজটি সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল সেটি ১০০ দিন পর উদ্ধার হয়। ওই জাহাজের ২৭ নাবিককেও তখন অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল।

মালিকপক্ষ স্বীকার না করলেও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় সেসময় ৫ মিলিয়ন ডলার মুক্তিপণ দিতে হয়েছিল। এমভি আবদুল্লাহর ক্ষেত্রে এর চেয়ে বেশি দেওয়া লাগতে পারে মালিকপক্ষকে। শুরুতেই জলদস্যুরা ৫ মিলিয়ন ডলার মুক্তিপণ দাবি করেছে—এমন খবর প্রচার হলেও মালিক পক্ষ এর সত্যতা নিশ্চিত করেনি।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭