ইনসাইড থট

অপ্রতিরোধ্য শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 12/04/2018


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত সাহসী, বিচক্ষণ, ঝুঁকিপূর্ণ এবং দূরদৃষ্টি সম্পন্ন। অন্যকোনো রাজনীতিবিদ এরকম ঘোষণা দেওয়ার আগে দশবার চিন্তা করতেন, অনেক ‘কিন্তু’, ‘যদি’ ভাবতেন । কিন্তু শেখ হাসিনা যা ভেবেছেন, যেটি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং পরিষ্কারভাবে তিনি তাঁর ভাবনা জাতির সামনে বলেছেন।

`সাধারণ মানুষ ঘটনার স্বাভাবিক দৃশ্য দেখে, বিচক্ষণরা ঘটনার পরিণতি দেখে, আর রাজনীতিবিদরা ঘটনার সৃষ্টি করেন` - এই উক্তিটি চার্চিলের। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রিটিশ নির্বাচনে পরাজিত চার্চিলের এই উক্তির বাস্তব প্রতিফলন দেখা গেল ২০১৮ সালের ১১ এপ্রিল।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে বলা হয়, তিনি চাঁছাছোলা কথা বলেন, তাঁর মধ্যে কোনো ডিপ্লোম্যাসি নেই। তিনি কালোকে কালো, সাদাকে সাদা বলেন। বিভিন্ন সময়ে ঘরে বাইরে এটাই ছিল তাঁর বিরুদ্ধে প্রধান সমালোচনা। আজ সময়ের পরিক্রমায় এটাই তাঁর সবচেয়ে বড় সম্পদ। বাংলাদেশে সব ভোটারই জানেন, তিনি স্পষ্টবাদী যা বিশ্বাস করেন, তা বলতে পিছপা হন না। এজন্যই শেখ হাসিনাকে মানুষ বিশ্বাস করে। তাঁকে অন্য দশজন রাজনীতিবিদের মতো জনগণ দেখে না। একারণেই লক্ষ্য করা যায়, যারাই দাবি দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করেন, তাঁরা শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার একটা প্রতিশ্রুতি চান। অন্য কারও উপর তাঁদের আস্থা নেই। কারণ মন্ত্রীরা সকালে যা বলেন, বিকেলে ভুলে যান। শেখ হাসিনা যা বলেন, তা করেন। এটা একজন রাজনীতিবিদের বিরাট অর্জন। এবারও কোটা সংস্কারে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরাও চেয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর একটা ঘোষণা। এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার অনেকগুলো ঝুঁকি ছিল। এরকম সিদ্ধান্ত ঘোষণায় অনেক প্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনা ছিল। শিক্ষার্থীরা কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করতে পারতো। এর পক্ষে তাঁদের যুক্তিও ছিল, তারা বলতে পারতো,  আমরা তো কোটা বাতিল চাইনি, সংস্কার চেয়েছি। এই সিদ্ধান্তের ফলে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, পিছিয়ে পরা জনগোষ্ঠী, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর আন্দোলনের ঝুঁকি ছিল। এই সব ঝুঁকির কথা চিন্তা করে, শেখ হাসিনা ছাড়া এই রকম সিদ্ধান্ত অন্য কেউ নেওয়ার সাহস পেত কিনা, আমার জানা নেই। শেখ হাসিনা ঝুঁকিটা নিয়েছেন। শেখ হাসিনা ঝুঁকি নিয়েছেন কারণ শেখ হাসিনা মানুষের হৃদয় পড়তে পারেন, তিনি মানুষের হৃৎস্পন্দন বোঝেন। একারণেই তিনি ঝুঁকি নিতে সাহস পান। সাধারণ রাজনীতিবিদরা চিন্তা করেন মানুষ কীভাবে, আর দূরদর্শী রাজনীতিবিদরা জানেন মানুষ কি ভাবছে। শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত নেন ব্যক্তি স্বার্থের  উর্ধ্বে উঠে, মানুষের কথা চিন্তা করে। যে কারণে অন্যদের জন্য যে সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন, শেখ হাসিনার জন্য সেই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত সহজ।

প্রধানমন্ত্রী যদি চিন্তা করতেন, কোটা বাতিল হলে, তাঁর দলের ছেলে মেয়েদের কি হবে, নির্বাচনে এর কি প্রভাব পড়বে। তাহলে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়তো সম্ভব হতো না। তিনি চিন্তা করেছেন, কোটা বিতর্কের একটা আনুষ্ঠানিক পরিসমাপ্তি হওয়া দরকার। আর এই বিতর্কের অবসানের জন্য আগে এই পদ্ধতি বিলোপ করা প্রয়োজন। বিলোপের পর নারী, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য সংরক্ষণ পদ্ধতি কি হবে তা নিয়ে নতুন করে আলোচনা হবে, সবাই এক টেবিলে বসবে, সবার সম্মতির ভিত্তিতে একটা নতুন নীতিমালা হয়তো হবে কিংবা কোনো কোটা পদ্ধতিই থাকবে না- কি হবে সে সিদ্ধান্ত নেবে যারা চাকরি প্রত্যাশী তাঁরাই। আর সেই সিদ্ধান্ত হবে সর্বসম্মত। একটা দীর্ঘ বিতর্ক অবসানের পথ উন্মুক্ত করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী।

আরও একবার প্রমাণ করলেন, বাংলাদেশের তিনিই এখন একমাত্র নেতা। তিনি অপ্রতিরোধ্য।



Read in English- https://bit.ly/2EFUwTA

বাংলা ইনসাইডার/ জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭