ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপিতে এবার ফখরুল-মঈন খান দ্বন্দ্ব


প্রকাশ: 30/03/2024


Thumbnail

বিএনপিতে অন্তঃকলহ, দ্বন্দ্ব এবং অবিশ্বাস কিছুতেই কমছে না। এবার বিএনপিতে প্রকাশ্য বিরোধে জড়ালেন দুই হেভিওয়েট নেতা, দলের মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান। দুইজনের বিরোধ এখন প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। ড. মঈন খান জানিয়ে দিয়েছেন, যে অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর উপস্থিত থাকবেন সেখানে মঈন খান থাকবে না। এই বিরোধের কারণ হলো, ক্ষমতা কেন্দ্রে কার অবস্থান কতটুকু হবে তা নিয়ে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৮ অক্টোবর ঘটনার পর গ্রেপ্তার হন। এই গ্রেপ্তারের এর পর পরই বিএনপিতে একজন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব নিয়োগ দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কাউকেই ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব দেয়া হয়নি। তবে, অলিখিতভাবে মঈন খানই ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করে। বিএনপির সব কর্মসূচীগুলোতে তিনিই নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কারাগার থেকে বের হওয়ার পর যখন বিদেশে যান তখনও মঈন খান এ দায়িত্ব অব্যাহতভাবে পালন করেন।

এখন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দেশে ফিরেছেন। দেশে ফেরার পর পরই মঈন খান মনে করছেন যে, ক্ষমতার বন্টন এবং দায়িত্বের বন্টন হওয়া উচিত। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সবকিছুতে নেতৃত্ব দেবেন এটি কথা নয়। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যেমন কূটনৈতিকদের সঙ্গে বৈঠকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তেমনি দলের সভা-সমাবেশেও প্রধান বক্তা বা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকছেন। এখানেই মঈন খানের আপত্তি।

মঈন খান মনে করেন যে, মহাসচিবের এমন একক কতৃত্ব থাকা উচিত নয়। তিনি মনে করেন , বিদেশি কূটনৈতিকদের সঙ্গে সাক্ষাৎসহ বিভিন্ন বিষয়ে ক্ষমতার ভাগাভাগি হওয়া দরকার। মহাসচিব দলের সংগঠন দেখবেন কিন্তু কূটনীতি এবং অঙ্গ সংগঠন সহ বিভিন্ন বিষয়ে অন্যান্য নেতাদেরও দায়িত্ব দেওয়া উচিত।

সম্প্রতি মঈন খান বলেছেন, বিএনপিতে চেয়ারম্যানের সর্বময় ক্ষমতা আছে এটা সত্যি কিন্তু দলের মহাসচিবের সর্বময় ক্ষমতার রেওয়াজ নেই। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপিতে এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে, যেখানে দলের মহাসচিবরা সার্বক্ষণিক ক্ষমতার মালিক রয়েছেন এবং সব ক্ষমতা উপভোগ করছেন। এটি অনুচিত এবং এটি হতে দেওয়া উচিত নয় বলে মঈন খানের দাবি।

সাম্প্রতিক সময়ে মঈন খান স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এটি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পছন্দ করেননি। এসময় তিনি মঈন খান কোন যুক্তিতে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে নেতৃত্ব দিলেন এনিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি চেয়েছিলেন যে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্য কোন নেতা যারা মাঠের রাজনীতি করেন এবং সংগঠনের নেতা-কর্মীদের ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত তাদেরকেও নেতৃত্ব দিবে। তাদের মধ্যে যেমন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মির্জা আব্বাস অথবা সিনিয়র নেতাদের মধ্যে নজরুল ইসলাম খান এধরনের অনুষ্ঠানে নেতৃত্ব দিতে পারেন বলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিমত ব্যক্ত করেন।

এটি মঈন খান পছন্দ করেননি। তিনি মনে করেন যে, দলের জন্য তার অবদানও কম নয়। দীর্ঘদিন থেকে তিনি দলের জন্য পরিশ্রম করছেন, কাজ করছেন। কাজেই অন্য যেকোন নেতার মতোই তিনিও গুরুত্বপূর্ন। এই বাস্তবতায় দলের নেতৃত্ব দেওয়ার মতো যোগ্যতা তারও রয়েছে। কিন্তু বিএনপিতে বক্তব্য হচ্ছে অন্যরকম। তাদের বক্তব্য যে, যেহেতু মঈন খান একজন মাঠের নেতা নন সেকারণেই মাঠের কর্মসূচীগুলোতে তার উপস্থিতি বেশী না থাকাই ভালো বরং মাঠে যারা আন্দোলন সংগ্রাম বা অন্যান্য কার্যক্রমে নেতৃত্ব দেন তাদেরকেই প্রাধান্য দেওয়া উচিত। আর এনিয়ে দুই নেতার দ্বন্দ্ব এখন সকলের কাছে অস্বস্তির কারণ হিসেবে দেখা দিয়েছে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭