ইনসাইড পলিটিক্স

আবুল কালামকে নিয়ে কি করবে আওয়ামী লীগ?


প্রকাশ: 30/03/2024


Thumbnail

নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম যে বক্তব্য দিয়েছেন তা নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আজ বলেছেন, দলের কোন মন্ত্রী-এমপির দায়িত্ব জ্ঞানহীন বক্তব্যের দায় আওয়ামী লীগ গ্রহণ করবে না। তিনি এটিও বলেছেন, এধরনের দায়িত্ব জ্ঞানহীন মন্তব্য যাতে কেউ না করে সেটি অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে।

আওয়ামী লীগের কেউ কেউ মনে করেন, নাটোর-১ আসনের এমপি যা বলেছেন তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত করা উচিত এবং যথাযথ আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। কারণ একজন সংসদ সদস্য যখন প্রকাশ্যে দুর্নীতি করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন তখন সেটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

আওয়ামী লীগের কোন কোন নেতা মনে করেন, এধরনের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে আরও ব্যক্তিরা লাগামহীন বক্তব্য করবে এবং সরকারকে একটি বিব্রতকর অবস্থায় ফেলবে। তবে, আওয়ামী লীগের কেউ কেউ মনে করেন, বিষয়টি ব্যক্তিগত এবং এটিকে উপেক্ষা করাটাই সবচেয়ে ভালো হবে।

আবুল কালাম আজাদ লালপুর উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে বলেছেন যে, ‘আমার ৫ টা বছরের বেতন টাকা ছাড়া আমার কোন সম্পদ ছিলো না। আগামী দিনেও থাকবে না। তবে, এবার আমার সংসদ নির্বাচনে ১ কোটি ২৬ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে, এ টাকা আমি তুলবো যেভাবেই হোক।’ এটি সুস্পষ্টভাবে একটি দুর্নীতির ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্য। দুর্নীতি করার জন্যই সংসদ সদস্য ঘোষণা দিয়েছেন বলে অনেকে মনে করেন। 

আওয়ামী লীগের অনেক শীর্ষ নেতা বলছেন, নির্বাচনের পর সরকার যখন একটা স্বস্তিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে ঠিক সে সময় এধরনের বক্তব্য আপত্তিকর, বিভ্রান্তিকর এবং খুবই দূর্ভাগ্যজনক। সরকার যখন এ নির্বাচনকে নিয়ে একটি ইতিবাচক অবস্থানে পৌঁছাতে পেরেছে তখন আবুল কালামের এই বক্তব্য সকলকে বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে ফেলেছে। এটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হৈ চৈ হচ্ছে এবং এনিয়ে আওয়ামী লীগের এমপিরা একটি অসম্মানজনক পরিস্থিতির মুখোমুখি পড়েছেন।

তবে, আওয়ামী লীগের কেউ কেউ মনে করেন যে, নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য খুবই অগুরুত্বপূর্ণ একজন সংসদ সদস্য। তার এই বক্তব্যটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে বটে। তবে, কদিন পরে তার এই বক্তব্য গুরুত্বহীন হয়ে পড়বে। কাজেই, এটিকে গুরুত্ব দেয়া উচিত নয় এনিয়ে কারোই কিছু করণীয় নেই। কিন্তু অনেকেই মনে করছেন যে, আবুল কালাম আজাদ যখন এটি বলেছেন তখন তিনি দুর্নীতি করবেন।

একজন সংসদ সদস্য যখন দুর্নীতি করার ঘোষণা দেন তখন তিনি সংসদ হিসেবে থাকতে পারেন কিনা সেটি একটি বিরাট প্রশ্ন হিসেবে উপস্থিত হয়েছে। বিভিন্ন মহল মনে করে যে, এরকম পরিস্থিতিতে যদি সরকার কঠোর না হয় তাহলে জনগণের কাছে একটি সুস্পষ্ট বার্তা যাবে, তাহলো যারা সংসদ সদস্য হয়েছেন যারা মন্ত্রী পরিষদে সদস্য হয়েছেন তারা বিভিন্নভাবে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। তারা দুর্নীতি করার জন্যই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

যদিও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামের একজন সদস্য বলেছেন, আবুল কালামের বক্তব্য কোনভাবেই আওয়ামী লীগের বক্তব্য নয় এবং সংসদ সদস্যদের অবস্থানের প্রতিধ্বনি নয়।

কিন্তু একজনের বক্তব্য যে, পুরো আওয়ামী লীগকে কাঠগড়ায় দাড় করিয়েছে এটি আওয়ামী লীগের ক’জন উপলব্ধি করতে পারছে সেটিই বিবেচনার বিষয়।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭