নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে আওয়ামী লীগ নেতার বক্তব্য ভাইরাল

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিতর্কিত বক্তব্য যেন থামছেই না। এবার সেই তালিতায় নাম লেখালেন কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রোশন আলী মাস্টার।

তিনি বলেন, ‘ভোটে আমরা হারিনি, ম্যাকানিজম করে হারানো হইছে, যে কোন কারণে আমরা রেজাল্ট নিতে পারেনি, ৮২ হাজার ভোট কি কম? এগুলোর অনেক ইতিহাস, এগুলো আপনারা বুঝবেন না, আপনাদের ভাইঙ্গা বুঝাইতে অইব’। যাদের আমি নেতা বানাইছি তারা আমারে এখন ** (আঞ্চলিক গালি) দিয়াও গুনে না। 

শনিবার (৩০ মার্চ) বিকালে রোশন আলী মাস্টার ওমরা হজ্ব পালনের উদ্দ্যেশে মক্কায় গমণ উপলক্ষে দেবিদ্বার পৌর এলাকার তার নিজ বাসভবনে একটি ইফতার মাহফিলে ওই বিতর্কিত বক্তব্য রাখেন তিনি। ওই সময়ে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুল। 

সাড়ে চার মিনিটের ওই একটি বক্তব্যে তাকে বলতে শোনা গেছে, ‘আমাদের দলে অনেক মীর জাফর আছে, এগুলো যুগ যুগ ছিল থাকবে, তারা যদি ভালো হয়ে যায় আমরাও ভালো হয়ে যাবো, আর হজ্ব করার পর যদি দেখি ভালো না হইছে তাহলে মাঠে নাইম্যা পড়বো।’ 

 

তার এ বিতর্কিত বক্তব্যে তাৎক্ষণিক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন দেবিদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। প্রতিক্রিয়ায় তারা বলছেন, যেখানে প্রধানমন্ত্রী একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট করে সারা বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, সেখানে তার ওই বক্তব্য সুষ্ঠু নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। তার ওই বক্তব্যে বর্তমান সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ ভোট কারচুপির মাধ্যমে নির্বাচিত হয়েছেন এটা তিনি প্রমাণ করতে চেয়েছেন। আমরা অবিলম্বে এমন বক্তব্য প্রতাহ্যারের দাবি জানাচ্ছি, পাশাপাশি তাকে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকেও অব্যাহতির দাবি জানাচ্ছি। 

এর আগে বিএনপির এক নেতা সঙ্গে তার ফোনালাপ ফাঁস হয়। ওই ফোনালাপে তাকে বলতে শোনা গেছে, ‘আওয়ামী লীগ ও নৌকা যারা করে তারা সব রাজাকারের বাচ্চা’’ তার কর্মকাণ্ডে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারাও বিব্রত। আসলে তিনি মাইক হাতে পেলে কি বক্তব্যে দিবেন হিতাহিত জ্ঞান হারাই ফেলেন!

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ২৭ ডিসেম্বর তার সঙ্গে বিএনপি নেতা দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. রহুল আমিনের একটি অডিও ফোনালাপ ফাঁস হলে সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ওই অডিও কলে তাকে বলতে শোনা গেছে, ‘যারা নৌকা করে তারা সব রাজাকারের বাচ্চা’। তার শেল্টার নিয়ে বিএনপি যেন আন্দোলন সংগ্রামে মাঠে নামে সে কথাও বলতে শোনা গেছে। এর প্রতিবাদে সাবেক সংসদ সদস্য রাজী ফখরুলের নেতাকর্মীরা রোশন আলীর মাস্টারের পদত্যাগের দাবিতে ঝাঁড়ু ও জুতা মিছিল এবং তার কুশপুত্তলিকা দাহ করেছিল।