এডিটর’স মাইন্ড

সোনারগাঁও হোটেলে জামায়াতের ইফতার পার্টি হয় কীভাবে?


প্রকাশ: 31/03/2024


Thumbnail

রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র কাওরান বাজারে প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেল। প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেল সরকারি মালিকানাধীন একটি হোটেল, যে হোটেলটি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার পরিচালিত এবং প্যান প্যাসিফিক হোটেলস এন্ড রিসোর্ট এটির ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে। এই হোটেলের যে পরিচালনা পর্ষদ গঠন করা হয়েছে, সেই পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন মোহাম্মদ মোকাম্মেল হোসেন। যিনি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব। এছাড়াও এই পরিচালনা পরিষদে আছেন এনবিআর-এর চেয়ারম্যান, পররাষ্ট্র সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, অর্থ সচিবসহ আরও গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কর্মকর্তারা। অর্থাৎ সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত এবং সরকারের মালিকানাধীন এই হোটেলটি। 

অন্যদিকে জামায়াতে ইসলাম হলো স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি, এটি রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃত নয়। নির্বাচন কমিশন এর নিবন্ধন বাতিল করেছে। জামায়াতে ইসলামের শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক নেতা যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে দণ্ডিত হয়েছে এবং তাদেরকে সর্বোচ্চ শাস্তির দেওয়া হয়েছে। এরকম পরিস্থিতিতে জামায়াতের এখন পর্যন্ত সভা সমাবেশ করার অনুমতি নেই। কারণ জামায়াত একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল নয়। 

একটি অনিবন্ধিত রাজনৈতিক দল যদি রাজনৈতিক সভা সমাবেশ করতে না পারে তাহলে সরকারের মালিকানাধীন একটি পাঁচ তারকা হোটেলে তারা জমকালো ইফতার পার্টি কীভাবে করতে পারে এবং সেই ইফতার পার্টিতে জামায়াতের পলাতক নেতারা উপস্থিত ছিলেন। প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে মাঝে মাঝেই রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান হয়। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে এই ধরনের অনুষ্ঠানে নিরাপত্তা একটি বড় বিষয় হিসাবে উপস্থাপিত হয়। কাজেই এখানে যে কেউ একটা ইফতার পার্টি বা অনুষ্ঠান করতে চাইলে যাচাই বাছাই করা এবং কারা করছে তার তথ্য অনুসন্ধান করে তারপর তাদের হল বুকিং বা সে ধরনের অনুষ্ঠান করার অনুমতি দেওয়া হয়। 

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে যে, সরকারের মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠানে অনিবন্ধিত রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলাম কীভাবে অনুষ্ঠান করল? যে হোটেলের পরিচালনা পর্ষদে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ আমলারা রয়েছেন, সেই হোটেল কর্তৃপক্ষ কীভাবে জামায়াতের মতো ঘৃণ্য এবং ফ্যাসিস্ট একটি রাজনৈতিক দলকে ইফতার পার্টি করার অনুমতি দিল? তাহলে কি এই হোটেলের সর্ষের মধ্যে ভূত আছে? যারা পরিচালনা পর্ষদে আছেন তাদের অগোচরেই কি এই হোটেলে জামায়াতকে ইফতার পার্টি করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে? নাকি তারা জেনে শুনে বিষয়টা অবজ্ঞা করেছেন? 

বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন রন্ধে রন্ধে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি এখন বাসা বেঁধেছে। তারা সুযোগ পেলেই বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম করছে এবং নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেওয়ার চেষ্টা করছে। প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে জামায়াতের ইফতার পার্টির আয়োজন তারই একটি ইঙ্গিত বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। কারণ এটি সুষ্পষ্ট ভাবে সরকারের প্রতি জামায়াতের একটি চ্যালেঞ্জ। যেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জামায়াতকে সভা সমাবেশ করার অনুমতি দিচ্ছে না, যেখানে জামায়াতের বিরুদ্ধে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ভাবে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ রয়েছে সেখানে এরকম একটি ঘৃণ্য অনিবন্ধিত রাজনৈতিক সংগঠনকে পাঁচ তারকা হোটেলে ইফতার পার্টি করার জন্য হল বুকিং কারা দিল? তারা কি জেনে বুঝে দিল না কিংবা পরিচালনা পর্ষদ এ ব্যাপারে কি করল বা কিছু করবে কিনা সেটি জানা অত্যন্ত প্রয়োজন। বাংলাদেশের প্রশাসনে রন্ধে রন্ধে যে জামায়াতের ভূতদের অবস্থান এটি তাদের কোন কারসাজি কিনা সেটিও খতিয়ে দেখা দরকার।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭