ইনসাইড পলিটিক্স

বেগম জিয়াকে কি বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেবে সরকার?


প্রকাশ: 01/04/2024


Thumbnail

বেগম খালেদা জিয়া এখন সিসিইউতে পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। দুদিন ধরে তাকে সিসিইউতে রাখা হচ্ছে। অনেকে মনে করছেন যে, বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আসলে অতটা খারাপ নয়, যতটা বলা হচ্ছে। বেগম খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া এবং সিসিইউতে রাখার মূল উদ্দেশ্য হল যে, সরকারের সঙ্গে তার বিদেশ যাওয়ার জন্য দেন দরবার চূড়ান্ত করা।

বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে তার রাজনৈতিক দলের নেতারা একেবারে অন্ধকারে। বেগম জিয়া এভারকেয়ারে থাকলেও এখন পর্যন্ত বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ কোন নেতা এভারকেয়ারে বেগম জিয়ার অবস্থার খোঁজখবর নিতে যাননি। বেগম জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এবং বিএনপির নেতা ডা. জাহিদ বেগম জিয়ার বিষয়গুলো খোঁজ খবর নিচ্ছেন এবং ডা. জাহিদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক ভাবে যোগাযোগ করছেন বেগম জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার।

গতকাল এক সংবাদ সম্মেলন করে বেগম খালেদা জিয়ার অবস্থার অবনতি ঘটেছে এবং তাকে দ্রুত বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য নেওয়া দরকার এমন দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একই দিনে জামায়াতে ইসলামও বেগম খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তি এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে। 

প্রশ্ন উঠেছে যে, নতুন করে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ যাওয়ার জন্য যে দাবি উঠেছে, সে ব্যাপারে সরকারের অবস্থান কি? সরকার কি তাকে বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারে অনুমোদন দেবে? 

এখন পর্যন্ত সরকারের অবস্থান হচ্ছে যে, বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি সরকার দেবে না। তবে বেগম জিয়ার পরিবারের সদস্যরা আশাবাদী। তারা মনে করছেন যে, বেগম খালেদা জিয়ার অবস্থার কথা যদি প্রধানমন্ত্রীকে জানানো যায় তাহলে প্রধানমন্ত্রী হয়ত এই সংক্রান্ত অনুমতি দেবেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যে কোনো সময় বেগম জিয়ার পরিবারের সদস্যদের দেখা হতে পারে। 

উল্লেখ্য যে, ২০২০ সালেও শামীম ইস্কান্দার এবং বেগম খালেদা জিয়ার বোন সেলিমা ইসলাম গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। সেই সময় প্রধানমন্ত্রীর সাথে তার ছোট বোন শেখ রেহানাও উপস্থিত ছিলেন। এই বৈঠকে বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা অনুকম্পা প্রার্থনা করেন এবং বেগম খালেদা জিয়াকে বাসায় থাকার অনুমতির জন্য আবেদন করেন।  প্রধানমন্ত্রী মানবতার পরিচয় দেন এবং তিনি তাদের এই আবেদন মঞ্জুর করেন। এর পরপরই বেগম খালেদা জিয়াকে ২০২০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর কারাগার থেকে ফিরোজায় স্থানান্তর করা হয়। দুই শর্তে তাকে ফিরোজায় রাখার অনুমতি দেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়া শর্ত মেনেছেন। 

তবে সাম্প্রতিক সময়ে বেগম জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য তার পরিবারের পক্ষ থেকে বেশ চেষ্টা তদবির চলছে। নির্বাচনের আগেও এই ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল। তখন সরকার অত্যন্ত সঙ্গত কারণেই তা নাকচ করে দিয়েছে। কারণ নির্বাচনের আগে এটি একটি ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত হত। বেগম খালেদা জিয়া বিদেশে যেয়ে কী অবস্থান গ্রহণ করেন, কোন ধরনের মনোভাব ব্যক্ত করেন সেটি সরকারের জন্য একটি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ ছিল। আর এ কারণেই সময় সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেননি। তবে এখন পরিস্থিতি ভিন্ন।

নির্বাচন হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক মহল এই নির্বাচনকে মেনে নিয়েছে। দেশে-বিদেশে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নির্বাচন কেন্দ্রিক কোন চাপ নেই। এরকম একটি বাস্তবতায় বেগম খালেদা জিয়াকে যদি উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার সরকার অনুমতি দেয় তাহলে সরকারের লাভ না ক্ষতি হবে এটি একটি হিসেবে নিকেশের ব্যাপার। সরকার তার নিজস্ব হিসেবে নিকেশ করবে। তবে সব কিছুর উর্ধ্বে প্রধানমন্ত্রী একজন মানবিক মানুষ।  বেগম জিয়ার পরিবারের সদস্যরা যদি শেষ পর্যন্ত গণভবন পর্যন্ত পৌঁছতে পারেন তাহলে তাদের অনুরোধ মানবিক প্রধানমন্ত্রী প্রত্যাখান করবেন কিনা সেটি দেখার বিষয়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭