ইনসাইড বাংলাদেশ

নওগাঁয় মাদ্রাসায় নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ


প্রকাশ: 02/04/2024


Thumbnail

নওগাঁর রাণীনগরের ভেটী সিদ্দিকীয়া ফাযিল (স্নাতক) মাদ্রাসার ৩ পদে নিয়োগে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অর্ধ কোটি টাকার বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। অপরদিকে কতটুকু স্বচ্ছতার ভিত্তিতে নিয়োগ সম্পন্ন করা হয়েছে সেই বিষয়েও পরীক্ষায় অংশ নেওয়া একাধিক প্রার্থীর কাছ থেকেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

 

তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার ভেটী সিদ্দিকীয়া ফাযিল (স্নাতক) মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ, অফিস সহকারি (করণিক) ও আয়া পদে নিয়োগের জন্য ২০১৮ সালে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সেই বিজ্ঞপ্তিতে প্রার্থী না পাওয়া ও নিয়োগ নিয়ে তৎকালীন সাংসদের সঙ্গে সমঝোতা না হওয়ার কারণে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পক্ষে তা সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি।

 

পরবর্তীতে ২০২০ সালের উপ-নির্বাচনে নতুন সাংসদ এলে তার সঙ্গেও ওই নিয়োগ নিয়ে সমঝোতা না হওয়ায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আইয়ুব আলী কৌশলে গত বছরের অক্টোবরে গোপনে পুনরায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। চলতি এপ্রিল মাসের ৩ তারিখ পর্যন্ত সেই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মেয়াদ থাকায় আইয়ুব আলী অত্যন্ত গোপনে সকল পদে প্রার্থী প্রস্তুত করে গত শনিবার (৩০মার্চ) জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। আর গোপনে নিয়োগ সম্পন্ন করার বিষয়টি বিভাগীয় কর্মকর্তা, মাদ্রাসার অন্যান্য শিক্ষক ও স্থানীয়দের মাঝে সন্দেহের জন্ম দিয়েছে।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভেটী গ্রামের একাধিক বাসিন্দা জানান যে, অফিস সহকারি পদে ১৬ লাখ টাকার বিনিময়ে মাসুদ শেখকে ও আয়া পদে ৯ লাখ টাকার বিনিময়ে নাহিদা আক্তারকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তবে অধ্যক্ষ যেহেতু অন্য উপজেলা থেকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে সেহেতু সেই পদে আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি এখনোও জানা যায়নি।

 

ভেটী সিদ্দিকীয়া ফাযিল মাদ্রাসার শিক্ষক আবু সাইদ মোবাইল ফোনে জানান, প্রথম দিকে অধ্যক্ষ ওই নিয়োগ কমিটিতে তাকে রাখার কথা বললেও পরবর্তীতে অদৃশ্য কারণে তাকে আর নিয়োগ কমিটিতে রাখা হয়নি। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তার পছন্দ মাফিক ব্যক্তিদের নিয়োগ কমিটিতে রেখে অত্যন্ত গোপনীয় ভাবে নিয়োগটি সম্পন্ন করেছেন।

 

মাদ্রাসার সহকারি অধ্যাপক ও নিয়োগ কমিটির সদস্য মোঃ আসাদুল ইসলাম আসাদ মোবাইল ফোনে জানান, যে মাদ্রাসার মঙ্গলের স্বার্থে এই নিয়োগটি শতভাগ স্বচ্ছতা ও মেধার ভিত্তিতেই সম্পন্ন করা হয়েছে। এর বাহিরে যদি কোন প্রার্থী কারো সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে যোগাযোগ করে থাকেন তাহলে তার সত্যতা পাওয়া গেলে জড়িত ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

এই বিষয়ে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আইয়ুব আলীর মোবাইল ফোনে নিয়োগ পরীক্ষার দিন গত শনিবার (৩০মার্চ) একাধিকবার ফোন প্রবেশ করলেও তিনি তা রিসিভ করা হয়নি। এরপর থেকে সোমবার (০১ এপ্রিল) রাত পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আইয়ুব আলীর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়ায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

 

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম মোবাইল ফোনে জানান যে, ‘তিনি একজন বিভাগীয় কর্মকর্তা হলেও এই নিয়োগ বিষয়ে কোন কিছুই জানেন না। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এই নিয়োগ সংক্রান্ত কোন বিষয়েই তার সঙ্গে পরামর্শ করেননি। এমনকি নিয়োগ পরীক্ষার দিন বিষয়টি জানান জন্য ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে তার মোবাইল ফোনে অসংখ্যবার ফোন দিলে আইয়ুব আলী ফোন রিসিভ করেননি এবং পরবর্তীতে ফোনও দেননি। তাহলে এ থেকেই প্রমাণিত হয় যে কতটা গোপনীয়তা রক্ষা করে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে।’

 

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ সোহেল রানা মোবাইল ফোনে জানান যে, নিয়মানুসারে নিয়োগ পরীক্ষা মাদ্রাসায় সম্পন্ন না করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সম্পন্ন মেধা ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে সম্পন্ন করা হয়েছে। কোন প্রকারের অনিয়ম করা হয়নি। এছাড়া আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি তার জানা নেই বলেও তিনি জানান।  



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭