ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলা নির্বাচন নিয়ে মুখোমুখি আওয়ামী লীগ-বিএনপি


প্রকাশ: 03/04/2024


Thumbnail

মুখে বিএনপি বলছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে যাবে না। কিন্তু বাস্তবে সবগুলো উপজেলাতেই বিএনপি নেতাদের নির্বাচনী প্রস্তুতি দেখা যাচ্ছে। এখন তারা প্রকাশ্যে জনসংযোগ করছে। বিএনপির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জামায়াতও। বেশ কিছু উপজেলায় যেখানে জামায়াত শক্তিশালী, সেখানে তারা বিএনপির সমর্থন নিয়ে নিজেরাই প্রার্থী হয়েছে। আর এর ফলে উপজেলা নির্বাচনে বিভক্ত আওয়ামী লীগের সামনে দাঁড়িয়েছে ঐক্যবদ্ধ বিএনপি এবং জামায়াত। 

উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি এক জটিল সমীকরণে দাঁড়িয়েছে। এবার উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দলের ভিতর তীব্র অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং মতদ্বৈততার কারণে আওয়ামী লীগ এই সিদ্ধান্ত নেয়। উপজেলা নির্বাচনে যেন দলের কোন্দল এবং বিভক্তি নতুন করে মাথাচাড়া না দেয়, সে কারণে আওয়ামী লীগ নৌকা প্রতীক কাউকে না দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা আসলে কার্যকর হয়নি। প্রতিটি উপজেলায় একাধিক আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে এখন মাঠে দেখা যাচ্ছে। শুধু তারা মাঠে নেই, একে অন্যকে বিষেদাগার করছে। আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ এখন আওয়ামী লীগই হয়ে গেছে। যার ফলে সারা দেশে বিভক্ত এবং ক্ষতবিক্ষত আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচনে কতটা ভালো করবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। 

উপজেলা নির্বাচন যদি জাতীয় নির্বাচনের মডেলে হত অর্থাৎ বিএনপি-জামায়াত সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো যদি উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করত সে ক্ষেত্রে বিষয়টি অন্যরকম হত। তাহলে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের লড়াইয়ে কে হারল কে জিতল সেটা বড় বিষয় ছিল না। কারণ যে জিতুক তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী। কিন্তু এবার উপজেলা নির্বাচন তেমন হচ্ছে না। বরং এই উপজেলা নির্বাচনে কৌশলের খেলায় বিএনপি এখন পর্যন্ত এগিয়ে আছে। বিএনপির পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি। 

বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে কোন সিদ্ধান্ত ঘোষণা  করবে না। বরং উপজেলা নির্বাচনকে উপেক্ষা নীতি গ্রহণ করেছে বিএনপি। ভিতরে ভিতরে বিএনপির যারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক তাদেরকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা নিজ দায়িত্বে প্রার্থী হতে পারবে। আর এ কারণেই বিএনপির যারা প্রার্থী হতে ইচ্ছুক, তারা স্বতন্ত্র হিসাবে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য ইতোমধ্যে মাঠে নেমে পড়েছেন। বিভিন্ন উপজেলায় ইফতার পার্টির সরগরম আয়োজন দেখা যাচ্ছে। যেখানে বিএনপির নেতারা অংশগ্রহণ করছেন। 

একাধিক সূত্র বলছে যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি এবং জামায়াতের মধ্যে একটি সমঝোতা হয়েছে। সেই সমঝোতার অংশ হিসেবে যেখানে যেখানে জামায়াত শক্তিশালী সেখানে জামায়াতকে বিএনপি সমর্থন দিবে। আবার যেখানে বিএনপি শক্তিশালী সেখানে বিএনপিকে জামায়াত সমর্থন দিবে। অর্থাৎ অতীতের নির্বাচনগুলোর মতো উপজেলা নির্বাচনেও বিএনপি এবং জামায়াত ঐক্যবদ্ধ ভাবে নির্বাচন করবে। এটি আওয়ামী লীগের জন্য একটি কঠিন চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

গতকিছু দিন ধরেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উপজেলা নির্বাচন নিয়ে তার উৎকণ্ঠার কথা প্রকাশ করছেন এবং বিভিন্ন উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে বিভিন্ন রকম বক্তব্য দিচ্ছেন। কিন্তু এ সমস্ত বক্তব্য মাঠ পর্যায়ে কতটুকু কার্যকর হচ্ছে তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। উপজেলা নির্বাচন নিয়ে শেষ পর্যন্ত যদি বিএনপি এবং জামায়াত গোপন আঁতাতের মাধ্যমে নির্বাচন করে আর আওয়ামী লীগ যদি এরকম বিভক্ত অবস্থায় থাকে তাহলে এই নির্বাচনে একটা বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটবে আওয়ামী লীগের।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭