ইনসাইড পলিটিক্স

সরে যাচ্ছেন ফখরুল, মঈন খান ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হচ্ছেন


প্রকাশ: 04/04/2024


Thumbnail

শেষ পর্যন্ত বিএনপির মহাসচিব পদে থাকছেন না মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কারাগার থেকে বেরিয়ে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সেই সিদ্ধান্ত জানাতে তিনি ফিরোজায় বেগম খালেদা জিয়ার কাছেও গিয়েছিলেন। এছাড়া লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার কাছেও মির্জা ফখরুল জানান যে, তিনি এখন দলের মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে অপারগ। এর পেছনে তিনি তিনটি কারণ দেখিয়েছেন। 

প্রথমত, তিনি নিজে শারীরিক ভাবে অসুস্থ। এই অসুস্থতার জন্য তাকে যেটুকু সময় দলের জন্য দেওয়া উচিত সেটা তিনি দিতে পারছেন না। এ জন্য তার মহাসচিব পদে থাকা সমীচীন নয় বলে তিনি মনে করেন। 

দ্বিতীয়ত, তার স্ত্রী দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত। এই অবস্থায় স্ত্রীকে তার সময় দেওয়া উচিত এবং এই অসুস্থতার চিকিত্সার জন্য স্ত্রীর পাশে থাকতে চান। এজন্য মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করা তার জন্য কঠিন হয়ে যাচ্ছে। 

তৃতীয়ত, দীর্ঘদিন ধরে তিনি মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন। এ সময়ে অনেকগুলো আন্দোলনে বিএনপির ব্যর্থ হয়েছে। কাজেই এখন নতুন নেতৃত্ব আনা উচিত এবং নতুন নেতৃত্বের তত্ত্বাবধানে বিএনপিকে পরিচালিত করতে হবে। যদি নতুন নেতৃত্ব না আনা হয় সেক্ষেত্রে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা এবং আস্থার সঙ্কট তৈরি হবে। এই নিয়ে দলের মধ্যে দীর্ঘদিন আলোচনা হচ্ছিল। 

অনেকেই মনে করেন যে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আসলে মহাসচিবের পদ ছাড়তে চাচ্ছেন অভিমান থেকে। লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান একক স্বেচ্ছাচারিতায় দল চালাচ্ছেন, যেটি তার পছন্দ হয় না। এ জন্যই তিনি পদ ছাড়তে চাইছেন। তবে যে মির্জা ফখরুলের ঘনিষ্ঠরা তা নাকচ করে দিয়েছেন। তারা বলেছেন যে, মহাসচিব বর্তমান বাস্তবতা বিবেচনা করেই এই পদটি ছাড়তে চাইছেন। 
তবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যখন মহাসচিবের পদ ছাড়তে চান তখন দলের মধ্যে আলোচনা হয়েছিল যে ঠিক আছে, তিনি যদি মহাসচিবের দায়িত্ব ছেড়ে দেন তাহলে দলে নতুন করে কাউন্সিল হবে। নতুন কাউন্সিলের বিষয়টি নিয়ে বিএনপির মধ্যে বেশ ভাল মতোই চর্চা হয়েছিল এবং এই কাউন্সিল করার ব্যাপারে দলের হাইকমান্ড অর্থাৎ বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াও এক মত ছিল। কিন্তু এই কাউন্সিলের মাধ্যমে কী হবে, নেতৃত্বের পরিবর্তনের ধারা কী হবে সেটি এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি। 

বিএনপির ওপর আন্তর্জাতিকভাবে একটি চাপ আছে। যেহেতু বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়া দুইজনই প্রত্যক্ষ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকতে পারছেন না এইজন্য আপাতত তাদেরকে আলঙ্কারিক পদ উপদেষ্টা বা পৃষ্ঠপোষক হিসেবে দায়িত্ব দিতে। যারা দলে কাজ করছেন তাদের মধ্য থেকে চেয়ারম্যান এবং মহাসচিব নিয়োগ করার প্রস্তাবটি বিএনপিতে দীর্ঘদিন ধরে দিয়ে রাখা হয়েছে আন্তর্জাতিক মহল থেকে। এখন এই প্রস্তাবের বিষয়ে বিএনপির মধ্যে ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দু ধরনের মতামত আছে। তবে বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া এখন ইতিবাচকভাবে এই বিষয়টি দেখছেন এবং তিনি দলের নেতৃত্ব ছাড়তে রাজি। এরকম বাস্তবতায় আগামী ডিসেম্বর নাগাদ দলের একটি কাউন্সিল অধিবেশন করার পরিকল্পনা রয়েছে। যদিও এব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোন আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়নি। তবে কাউন্সিলের আগেই দলের মহাসচিব পদ থেকে মির্জা ফখরুল চলে যাচ্ছেন বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বিএনপিতে নাটকীয় ঘটনা ঘটতে পারে এবং সেক্ষেত্রে ড. মঈন খান ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭