ইনসাইড পলিটিক্স

জামায়াত-বিএনপির সম্পর্ক নিয়ে উদ্বিগ্ন পশ্চিমা বিশ্ব


প্রকাশ: 04/04/2024


Thumbnail

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ ঘটছে। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বিএনপি নতুন করে সম্পর্ক গড়ছে। জামায়াত এবং বিএনপির এই উষ্ণতা আন্তর্জাতিক মহল ইতিবাচকভাবে দেখছে না। এই ঘটনায় ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ পশ্চিমা দেশগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিএনপির একাধিক নেতাকে তারা এ ব্যাপারে বার্তা দিয়েছেন। তারা বলেছে যে, জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে ব্যাহত করবে। 

ইউরোপীয় ইউনিয়ন জামায়াতকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন এবং অগ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক দল মনে করে। কারণ ইউরোপীয় ইউনিয়ন মূল যে চিন্তা ও সেকুলার এবং ডেমোক্র্যাট গণতান্ত্রিক রাজনীতি তার সাথে জামায়াতের রাজনীতি সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এ জন্য ২০১৮ সাল থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন জামায়াতকে নিয়ে আন্দোলন না করার জন্য বিএনপিকে পরামর্শ দিয়েছিল। কিন্তু শেষ বিএনপি সেই পরামর্শ খুব একটা কর্ণপাত করেনি। বরং বিভিন্ন সময় বিএনপি নেতারা জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। যদিও ২০১৮ এর পর আনুষ্ঠানিকভাবে ২০ দলীয় জোট বিলুপ্ত হয়ে যায় এবং জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্কের টানাপোড়েন হয়। সেই সময় জামায়াতের নেতারা ঘোষণা করেন যে, এখন বিএনপির সাথে তাদের সম্পর্ক নেই। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে আবার বিএনপি এবং জামায়াতের যোগাযোগের খবর পাওয়া গেছে। 

সাম্প্রতিক সময়ে জামায়াতের ইফতার পার্টিতে বিএনপির সব নেতারা উপস্থিত হয়েছিল এবং বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে জামায়াত বিবৃতি দিয়েছে। ফলে স্পষ্ট হয়েছে যে, দুটি দলের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হচ্ছে। বিশেষ করে বিএনপি অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের বিষয়টি নিয়ে এখন কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই আর নতুন করে যোগাযোগ করছে না। এটি জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা বলে মনে করছে। তাছাড়া বিএনপির যে ভারত বিরোধী অবস্থান, সেটির পিছনেও জামায়াতের হাত রয়েছে বলে জানা গেছে। সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের একাধিক বৈঠকেরও খবর পাওয়া গেছে। আর এটি পশ্চিমা দেশগুলো উদ্বেগের কারণ মনে করছে। 

তারা মনে করছে যে, একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল কখনও একটি দক্ষিণপন্থী চরম উগ্রবাদী এবং মৌলবাদী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কোন ঐক্য করতে পারে না। এটি গণতান্ত্রিক ধারা চেতনার পরিপন্থী। জামায়াতকে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ পশ্চিমা দেশগুলো একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না। যদিও যুদ্ধাপরাধের বিচারে মৃত্যুদণ্ড শাস্তিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সমর্থন করেনি। তবে জামায়াতের যে রাজনৈতিক চিন্তা, দর্শন এবং উগ্রবাদ সেটির বিরুদ্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সবসময় সোচ্চার ছিল। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সবসময় বিএনপিকে উগ্রবাদী রাজনৈতিক ধারা থেকে নিজেদেরকে দূরে রাখার পরামর্শ দিয়েছিল। এখন যখন বিএনপি-জামায়াত নতুন করে ঐক্য হচ্ছে তখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন মনে করছে যে, এটি গণতান্ত্রিক ধারাকে ব্যাহত করবে এবং মুক্ত চিন্তা এবং মুক্ত ধারার যে রাজনৈতিক ভাবনা সেটিকে প্রতিহত করবে। এ কারণেই বিএনপি অন্তত দুজন নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকরা। তারা পরিষ্কার ভাবে বলে দিয়েছেন যে, কোন অবস্থাতেই জামায়াতের সঙ্গে যেন সম্পর্ক এগিয়ে না নেয়া হয়। তবে বিএনপির দু নেতাই বলেছেন যে, সিদ্ধান্তটি তাদের নয়, এটি লন্ডনের সিদ্ধান্ত। এর ফলে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে বিএনপি যে সম্পর্ক উন্নয়নের একটি ধারা সূচনা করেছিল সেটি আবার ব্যাহত হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭