ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির লাপাত্তা বুদ্ধিজীবীরা


প্রকাশ: 05/04/2024


Thumbnail

এক সময় বিএনপির তারা থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ছিলেন। বিএনপি তাদের কথায় চলত। এমনকি বিএনপির নেতাদের চেয়েও তারা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু সেই সমস্ত থিঙ্ক ট্যাঙ্ক বুদ্ধিজীবীরা এখন লাপাত্তা। নিজেরাই ভয়ে লেজ গুটিয়ে পালিয়েছেন অথবা কেউ কেউ স্বেচ্ছায় নির্বাসনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। এই সমস্ত তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা দুঃসময় বিএনপির পাশে দাঁড়ায়নি। এটাই হল বিএনপির সবচেয়ে বড় ট্রাজেডি। আর এ কারণেই ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুর পর বিএনপি এখন মেধাশূন্য এবং থিঙ্ক ট্যাঙ্ক হীন অবস্থায় চলছে। এমনকি বিএনপির নেতাদেরকে সঠিক পরামর্শ দেওয়ার মতো লোকেরও এখন অভাব দেখা যাচ্ছে। 

বিএনপিতে বিভিন্ন সময়ে যারা অত্যন্ত ক্ষমতাবান থিঙ্ক ট্যাঙ্ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন, তাদের মধ্যে অন্যতম;
 
শফিক রেহমান: শফিক রেহমান যায় যায় দিনের প্রতিষ্ঠাতা এবং সম্পাদক। তিনি সংবাদপত্রে এক ধরনের আধুনিকতা এনেছিলেন। তার সাপ্তাহিক যায় যায় দিন স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। কিন্তু এরপর তিনি বিএনপি পন্থী হয়েছেন এবং বিএনপি থেকে ব্যাপক সুবিধা গ্রহণ করে বিএনপির প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসার পর তিনি খালেদা জিয়ার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এবং একনিষ্ঠ হয়ে যান। খালেদা জিয়ার বক্তৃতা বিবৃতি তারই লিখে দেওয়া বলে দাবি করা হত। কিন্তু এই শফিক রেহমান তারেক জিয়ারও ঘনিষ্ঠ ছিল এবং তারেকের পরামর্শে যুক্তরাষ্ট্রে সজীব ওয়াজেদ জয়কে হত্যার পরিকল্পনায় জড়িয়ে যান এবং এই পরিকল্পনার তথ্য ফাঁস হয়ে গেলে বুদ্ধিজীবীর মুখে চুনকালি পড়ে। আদালত তাকে দণ্ড দিলেও তিনি জামিন নিয়ে আছেন এবং দেশের বাইরে অবস্থান করছেন বলে জানা যায়।

মাহমুদুর রহমান: বিএনপির আরেক বিপ্লবী বুদ্ধিজীবীর নাম মাহমুদুর রহমান। তিনি আমার দেশ পত্রিকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। আমার দেশ এর দায়িত্ব গ্রহণ করে তিনি বিএনপিকে ইসলামি কায়দায় পুনর্গঠনের চেষ্টা করেছিলেন। জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক পুনর্নির্মাণের ক্ষেত্রে যারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তাদের মধ্যে মাহমুদুর রহমান অন্যতম। নিজ নিজের উপাধি দিয়েছিলেন। তাকে বলা হত ‘মজলুম সাংবাদিক’। মাওলানা ভাসানীর অনুকরণে নিজেই নিজের নামকরণ করেছিলেন। আদালত অবমাননার মামলায় দণ্ডিত হয়ে মাহমুদুর রহমান বের হন এবং তার আমার দেশ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এখন তিনি মালয়েশিয়া অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।

ফরহাদ মজহার: ফরহাদ মজহার ছিলেন একদা বাম। লম্পটের নানা রকম অভিযোগ তার বিরুদ্ধে অনেক আগে থেকেই ছিল। এই লম্পট বাম পরবর্তীতে হেফাজতের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক পরিণত হয়েছিলেন। শেষে তিনি বিএনপির ঘাটে এসে পানি খান। বিএনপি পন্থী বুদ্ধিজীবী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেন। ফরহাদ মজহার একজন নার্সকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার পর নিজেই একটি অপহরণ নাটক সাজান। তাকে গুম করা হয়েছে এমন প্রচার করে বিপদে পড়েন। অবশেষে গুম নাটকের অবসান ঘটলে লজ্জায় নিজে নিজের মাথা হেট করে রাখছেন এখনও।

এখনও তার বিচরণ আছে। তবে বিএনপি তাকে এড়িয়ে চলে। রাজনৈতিক অঙ্গনেও তার কোন প্রভাব বা আওয়াজ দেখা যায় না। মাঝে মাঝে তিনি টুকটাক ঝাড়ফুঁকের মতো বিবৃতি দেন বটে তবে সেটি বিএনপির কাছে খুব একটা গ্রহণযোগ্যতা পায় না। জাতীয় ভাবেও তার গ্রহণযোগ্যতা শূন্যে নেমে এসেছে। বরং তিনি একজন ভণ্ড প্রেমিক, প্রতারক প্রেমিক হিসেবেই সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। বিএনপির এই সমস্ত বুদ্ধিজীবী অপাঙ্ক্তেয়। তবে বিএনপিতে নতুন এক ঝাক বুদ্ধিজীবীর উদ্ভব ঘঠেছে। তারা বিএনপি পন্থী না সুবিধা পন্থী সেটি অবশ্য সময়ই বলে দেবে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭