এডিটর’স মাইন্ড

আওয়ামী লীগের ‘কুইনাইন’ সারাবে কে?


প্রকাশ: 05/04/2024


Thumbnail

কথা সাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা আলীর একটি অসামান্য গ্রন্থ ‘দেশে-বিদেশে’। বলা হয়ে থাকে বাংলা সাহিত্যে এটি প্রথম সার্থক ভ্রমণ কাহিনী। ‘দেশে-বিদেশে’ গ্রন্থে একটি উক্তি অমরত্ব পেয়েছে। এখনও বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে এই উক্তিটি বহুল চর্চিত। উক্তিটি হলো-‘কুইনাইন জ্বর সারাবে বটে, কিন্তু কুইনাইন সারাবে কে?’ ম্যালেরিয়া জ্বর নিরাময়ে কুইনাইন বেশ কার্যকর দাওয়াই। কিন্তু কুইনাইনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া শরীরকে দুর্বল করে, মুখের স্বাদ নষ্ট করে দেয়। কুইনাইন খেয়ে জ্বর সারলেও তা নতুন এক অসুস্থতা এবং অস্বস্তি তৈরী করে। এই উক্তিটির সঙ্গে এখন আওয়ামী লীগের মিল খুঁজে পাওয়া যায়। দলকে বিভক্ত করে আওয়ামী লীগ যে নির্বাচনী কৌশল নিয়েছিল, সেটি এখন আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় সমস্যা। নির্বাচন হয়েছে বটে, কিন্তু কোন্দল বেড়েছে। গৃহ বিবাদই আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় মাথা ব্যাথা। এখন আওয়ামী লীগ কোন্দল থামাতেই দিশেহারা। জাতীয় সংসদ নির্বাচন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ভাবে গ্রহণযোগ্য করতে আওয়ামী লীগ স্বতন্ত্র প্রার্থী কৌশল নিয়েছিল। দলের সবার জন্য নির্বাচন উন্মুক্ত করা হয়েছিল। আওয়ামী লীগ তার সুফলও পেয়েছিল। বিএনপির অংশগ্রহণ ছাড়াই নির্বাচন যে টুক প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়, তা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্যই। স্বতন্ত্ররাই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন জমিয়ে ফেলে। এই নির্বাচনে যা কিছু আকর্ষণ তা স্বতন্ত্রদের ঘিরেই। বহু আসনে স্বতন্ত্ররা চমক দেখিয়েছে। আবদুস সোবহান গোলাপ, মৃণাল কান্তি দাশ কিংবা অসীম কুমার উকিলের মতো কেন্দ্রীয় নেতারা স্বতন্ত্রদের কাছে ধরাশায়ী হয়েছে। হাসানুল হক ইনু, ফজলে হোসেন বাদশা, আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর মতো জাতীয় নেতারা চুনোপুটি স্থানীয় নাম ঠিকানাহীন স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে হেরে গেছে। ৭ জানুয়ারীর নির্বাচন যে দেশে এবং আন্তর্জাতিক ভাবে বৈধতা এবং স্বীকৃতি পেয়েছে তা মূলতঃ স্বতন্ত্রদের কারিশমায়। এজন্য প্রধানমন্ত্রী স্বতন্ত্রদের আদর আপ্যায়নও করেছেন বেশ। তাদের গণভবনে ডেকে আদর করে খাইয়েছেন। সংসদে কি করতে হবে, সে পরামর্শও দিয়েছেন। স্বতন্ত্ররা আওয়ামী লীগের উৎকণ্ঠার জ্বর সারিয়েছে, একথা সবাই স্বীকার করবেন। নির্বাচন না হলে আওয়ামী লীগের সর্বনাশ হতো। ২০১৪ সালের মতো বিনা ভোটের নির্বাচনও গ্রহণযোগ্যতা পেতনা। তাই নির্বাচনের ‘স্বতন্ত্র কৌশল’ আওয়ামী লীগকে নিঃসন্দেহে বাঁচিয়েছে। স্বতন্ত্ররা আওয়ামী লীগকে নির্বাচনী বৈতড়নী পেরুতে সাহায্য করলেও এখন তারাই যেন আওয়ামী লীগের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। স্বতন্ত্র কৌশল সারাদেশে আওয়ামী লীগকে বিভক্ত করেছে। নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের মধ্যে যে কোন্দল শুরু হয়েছিল, উপজেলা নির্বাচনের তা চরম আকার ধারণ করেছে। 

আওয়ামী লীগ বিরোধ যেন ‘কুইনাইন’ এর মতো। এই কুইনাইন আওয়ামী লীগকে ‘সুষ্ঠু নির্বাচন’ অসুখ থেকে মুক্তি দিয়েছে বটে। তাতে সৃষ্টি হয়েছে নতুন অসুখ। এখন এই অসুখের কোন চিকিৎসা যেন আওয়ামী লীগের কাছে নেই। যে ঔষধে আওয়ামী লীগ নির্বাচন পার করেছে, তাতেই এখন আওয়ামী লীগ ক্ষত-বিক্ষত। এই রমজানে আওয়ামী লীগ ইফতার পার্টির আয়োজন করেনি। কিন্তু তাই বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং অন্য নেতারা ইবাদত বন্দেগীতে সময় কাটাতে পারেননি। তাদের পুরো রমজান কাটছে দলের ভেতর দাঙ্গা ফ্যাসাদ মেটাতে। কোন্দল বন্ধ করতে ওবায়দুল কাদের বিভাগ ওয়ারী বৈঠক করেছেন। প্রতিদিনই বক্তৃতা দিচ্ছেন। সামনে উপজেলা নির্বাচন, এই নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের জন্য নির্দেশনা জারী করছেন ওবায়দুল কাদের। কিন্তু তার বক্তব্য যেন অসহায় মানুষের আর্তনাদ। তার কথা যেন কোন্দলরত আওয়ামী লীগের মাঠের নেতাদের কাছে মূল্যহীন। আওয়ামী লীগ এখন চলছে  ফ্রী স্টাইলে। কেউ কাউকে মানছে না। কেউ কারো কথা পাত্তা দিচ্ছে না। আওয়ামী লীগ একটি সুতোয় ঐক্যবদ্ধ। এই সুতার নাম শেখ হাসিনা। এই সুতো ছিড়ে গেলে আওয়ামী লীগ যে হুড়মুড় করে ভেঙ্গে পড়বে তা এখন দলের সিনিয়র নেতারাও স্বীকার করছেন। সুতায় গাঁথা মালা যেমন। সুতা ছিড়ে গেলে মালা যেমন তছনছ হয়ে যায়, তেমনি শেখ হাসিনা ছাড়া আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব কল্পনা করাও এখন কঠিন। 

৭ জানুয়ারি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র কৌশল সঠিক ছিলো না ভুল তা সময়ই বলে দেবে। লাগামহীন ভাবে স্বতন্ত্রদের নির্বাচনে দাঁড়ানোর অনুমতি দিয়ে আওয়ামী লীগ তার নিজের সর্বনাশ ডেকে আনলো কিনা- এ বিতর্ক চলবে বহুদিন। তবে, আওয়ামী লীগ এই কোন্দল বন্ধের কোন উপায় পাচ্ছে না। এযেন সেই কুইনাইন সারাবে কে?-এর মতোই এই অনিশ্চয়তার ধাঁধা। আওয়ামী লীগ যেন এক গোলক ধাঁধায় আটকে গেছে। 

নির্বাচনের আগেই দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আওয়ামী লীগ স্বতন্ত্রদের বিরোধ প্রকাশ্য রূপ নেয়। বেশ কিছু স্থানে এই বিরোধ ছিলো সহিংস। সেই সময় আওয়ামী লীগ এই বিরোধকে পাত্তা দেয়নি। এটিকে স্বাভাবিক নির্বাচনী বিরোধ হিসেবেই দেখেছে, কোথাও কোথাও বিরোধকে উস্কে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতারাই। আওয়ামী লীগ হয়তো মনে করেছিল, দলের নেতা-কর্মীরা ক্যাডার ভিত্তিক। পুতুল নাচের পুতুলের কেন্দ্রীয় নির্দেশ অন্ধ অনুসরণ করবে। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর এই বিভক্তি, কোন্দল এবং উত্তেজনা আপনা-আপনিই কমে যাবে। আওয়ামী লীগের মধ্যে এই কোন্দল, সহিংসতার সুদূর প্রসারী প্রভাব নিয়ে মোটেও চিন্তা করা হয়নি। অনেক নেতাই বলেছেন, আগে নির্বাচন পার করি, তারপর দেখা যাবে। কিন্তু নির্বাচন শেষ হলেও কোন্দল কমেনি। দেশের বহু স্থানে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। এই অঞ্চলে নির্বাচনী বিরোধ যুগ যুগ ধরে, প্রজন্মের পর প্রজন্ম চলে। আওয়ামী লীগ সম্ভবত ভেবেছিল, যেহেতু স্বতন্ত্র প্রার্থীরা আওয়ামী পরিবারেরই সদস্য, তাই নির্বাচনের পর তারা সব ভুলে কোলাকুলি করবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। নির্বাচনের পরও যখন আওয়ামী লীগ এবং ডামি আওয়ামী লীগের বিরোধ অব্যাহত থাকে, তখন নেতাদের টনক নড়ে। প্রধানমন্ত্রী কোন্দল থামাতে সিরিজ বৈঠক করেন। দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বর্ধিত সভা ডেকে কোন্দল বন্ধের বার্তা দেয়া হয়। কিন্তু এতেও দলের ভেতর বিভক্তি কমে নি। বরং মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ এবং মহিলা সংসদ সদস্য মনোনয়নের মাধ্যমে বহুস্থানে কোন্দলকে উস্কে দেয়া হয়। 

রাজশাহীর কথাই ধরা যাক, সেখানকার মেয়রের বিপক্ষের একজনকে প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে। এটা ভারসাম্য রক্ষার জন্য করা হলেও মেয়র-প্রতিমন্ত্রীর বিরোধ বিভক্ত করছে রাজশাহী আওয়ামী লীগকে। প্রকাশ্যে একে অন্যকে গালাগালি করছেন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরাসরি ভোটে পরাজিত অনেকেই এবং মনোনয়ন বঞ্চিত কয়েকজনকে সংরক্ষিত কোটায় মনোনয়ন দেয়া হয়। জনগনের কাছে প্রত্যাখ্যাতরা কি নারী সংসদ সদস্য হবার নৈতিক যোগ্যতা রাখেন কিনা সে প্রশ্ন উঠতেই পারে। আওয়ামী লীগে সংরক্ষিত কোটায় নারী সংসদ সদস্য হবার মতো যোগ্য ব্যক্তির অভাব ছিলো না। মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন দেড় হাজারের বেশী। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেই বলা হয়েছে, প্রার্থী বাছাই করতে গিয়ে তারা হিমশীম খেয়েছেন। তাহলে জনগণের পরাজিতদের সংসদে আনা কেন? দলের ভেতরে কোন্দলকে আরো বেগবান করার জন্য? ঢাকায় সানজিদা-আওলাদ বিরোধ, গাজীপুরে মেহের আফরোজ চুমকির সাথে স্বতন্ত্র বিজয়ী আখতারুজ্জামানের বিরোধ নতুন করে শুরু হয়েছে। বরিশাল সংরক্ষিত কোটায় এমপি হয়েই শাম্মী আহমেদ বিএনপির ভাষায় কথা বলেছেন। ভোট না দেয়ার জন্য তিনি জনগণকে ধন্যবাদ দিয়েছেন। নিজেকে জাহির করতে আওয়ামী লীগেরই যে বড় ক্ষতি করলেন শাম্মী, সেটি বোঝার মতো রাজনৈতিক প্রজ্ঞা কি তার আছে? নির্বাচিত এমপি পঙ্কজ দেবনাথকে একহাত দেখে নেয়াই এখন শাম্মীর প্রধান রাজনৈতিক লক্ষ্য। 

খুলনায় মনোনয়ন না পাওয়া মুন্নুজান সুফিয়ানকে সংরক্ষিত কোটায় এমপি বানিয়ে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামালের মুখোমুখি দাঁড় করানো হয়েছে। গত মেয়াদে মুন্নুজান সুফিয়ান প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। এবার আবার তিনি প্রতিমন্ত্রী হচ্ছেন এমন আশ্বাসে মন্ত্রী পাড়ার বাড়িও ছাড়েননি। আবার মন্ত্রী হতে না পারলেও কোটায় এমপি হয়ে নির্বাচিত এমপিকে কোণঠাসা করার চেষ্টা বেগবান করেছেন। এমনিতেই আওয়ামী লীগ প্রার্থী এবং স্বতন্ত্র আওয়ামী লীগ প্রার্থীর প্রকাশ্য বিরোধ দেশজুড়ে আওয়ামী লীগে বিশৃংখল, তার মধ্যে নারী সংসদ মনোনয়নেও বিরোধের পরিধি বাড়িয়েছে। আওয়ামী লীগের আরেকটি সিদ্ধান্ত সম্প্রতি অভ্যন্তরীণ গৃহদাহকে চাঙ্গা করেছে। দলের তৃণমূলে কোন্দল এবং বিভক্তি কমাতেই আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত নেয় যে, উপজেলায় দলীয় ভাবে কাউকে মনোনয়ন দেবে না। দলীয় প্রতীক ব্যবহার না করলে উপজেলা নির্বাচনে মারামারি, হানাহানি হবে না এমন প্রত্যাশা থেকেই আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচনে ‘নৌকা’ বরাদ্দ না  দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত বুমেরাং হয়েছে। দলীয় প্রতীক তুলে নেয়ার সাথে সাথে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা দলটিতে প্রার্থীর বাম্পার ফলন হয়েছে। অতীতের সুপ্ত বিভক্তি চাঙ্গা হয়েছে। ২০০৯ সাল থেকেই আওয়ামী লীগে ত্যাগীদের সাথে অনুপ্রবেশকারী হাইব্রীডদের বিরোধ শুরু হয়। নবাগতদের সাথে পুরনোদের বিরোধ আওয়ামী লীগের পুরনো ব্যাধি। দলের হাইকমান্ড এই রোগ সারাতে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। বরং বিভক্তি থাকলে দলের নেতাকর্মীরা তৎপর থাকে, কর্মী বাড়ে, সংগঠন শক্তিশালী হয়-এই ভ্রান্ত নীতিতে ছিলো ক্ষমতাসীন দলটি। নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যেই দুই দফায় ৩১২ টি উপজেলার নির্বাচনী তফসীল ঘোষণা করেছে। প্রথম দফায় ৮ মে ১৫২ টি উপজেলায়। দ্বিতীয় দফায় ২১ মে ১৬১ টি উপজেলায় নির্বাচন হবে। এই নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের তৃণমূলে সৃষ্টি হয়েছে চরম বিশৃঙ্খলা। আওয়ামী লীগের জেলার নেতা, এমপি, মন্ত্রী, স্বতন্ত্র এমপি কিংবা পরাজিত এমপি প্রার্থী সবাই উপজেলা দখল নিতে চায়। মাইম্যানকে বসাতে চায়। যিনি ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকেটে এমপি হয়েছেন, তিনি মনে করছেন এলাকায় তার কর্তৃত্ব নিরঙ্কুশ করতে হবে। পরাজিত ডামি প্রার্থী কিংবা মনোনয়ন বঞ্চিতরা যেকোন সময় মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে। এজন্য উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে নিজস্ব লোক দরকার। তিনি একজন ‘একান্ত আপন ব্যক্তি’কে উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী করছেন। 

৭ জানুয়ারির নির্বাচনে স্বতন্ত্র বা ডামি যিনি পরাজিত হয়েছেন, তিনি মনে করছেন এই তো সুযোগ। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের প্রতিশোধ নেয়ার মঞ্চ যেন তার জন্য প্রস্তুত হয়েছে। তিনিও তার নিজের পছন্দের লোককে উপজেলায় দাঁড় করাচ্ছেন। তার প্রধান লক্ষ্য এমপিকে টাইট দেয়া। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে যিনি এমপিও হননি, নির্বাচনেও দাঁড়াননি, তার অপেক্ষা ছিলো উপজেলা নির্বাচন। তিনি আশা করেছিলেন, সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন না পেলেও উপজেলায় দল তাকে মূল্যায়ন করবে। উপজেলায় যখন ‘নৌকা’ তুলে রাখা হলো, তখন এই বেচারা কি বসে বসে আঙ্গুল চুষবেন! তিনি নিজের শক্তিতে অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামে উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন। স্থানীয় যুবলীগ বা ছাত্রলীগ নেতা গত ১৫ বছরে অর্থ বিত্তে বাড় বড়ন্ত হয়েছেন। উপজেলা নির্বাচন তার অস্তিত্ব জানান দেয়ার উপযুক্ত ক্ষেত্র। ভবিষ্যতে এমপি মন্ত্রী হবার প্রথম পরীক্ষা। এভাবে স্থানীয় পর্যায়ে আওয়ামী লীগের নেতারা ‘যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে’ উপজেলা নির্বাচনে ঝাপিয়ে পরেছে। প্রতিটি উপজেলায় ৮ থেকে ১০ জন আওয়ামী প্রার্থী এখন মাঠে। তাদের সমর্থন দিতে গিয়ে কর্মীরাও বহু ভাগে বিভক্ত। এর মধ্যে উপজেলায় মন্ত্রী এমপিদের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক যে হুশিয়ারি দিচ্ছেন, তা এখন স্রেফ তামাশা। কেউ তার কথা কর্ণপাত করেন না। উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগের বিভক্তিকে এক চরম পর্যায়ে নিয়ে যাবে বলেই আমি মনে করি। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে এমনিতেই খুনোখুনি মারামারি বেশী হয়। এবার উপজেলায় এটি সর্বোচ্চ সীমা অতিক্রম করবে বলে আমার ধারণা। 

আওয়ামী লীগ জাতীয় নির্বাচনে যে ডামি কৌশল নিয়েছিল, তা এখন বিভক্তির ব্যাধিতে রূপান্তরিত হয়েছে। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর এই অসুখ সারাতে দলটির নেতাদের চেষ্টার অভাব নেই। কিন্তু কেউই এই ব্যাধি সারাতে পারছে না। কুইনাইন দিয়ে জ্বর (নির্বাচন) সেরেছে আওয়ামী লীগের। তবে কুইনাইন (বিভক্তি) সারার পথ খুঁজে পাচ্ছে না টানা ক্ষমতায় থাকা দলটি। 


সৈয়দ বোরহান কবীর, নির্বাহী পরিচালক, পরিপ্রেক্ষিত
ই-মেইল: poriprekkhit@yahoo.com


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭