ইনসাইড পলিটিক্স

এমপিদের হস্তক্ষেপ রোধে কঠোর অবস্থানে আওয়ামী লীগ


প্রকাশ: 06/04/2024


Thumbnail

নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে প্রথম দুই ধাপের উপজেলা নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘেষণা করেছে। নির্বাচন কমিশন ঘোষিত এই দুই ধাপের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া শুরু না হলেও এরই মধ্যে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের তৃণমুল পর্যায়ে বিভেদ প্রকাশ্য। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করা নিয়ে দলের ভিতরে ও বাইরে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। উপজেলা নির্বাচন কেন্দ্র করে দলীয় এমপি-মন্ত্রীদের কোন ধরনের হস্তক্ষেপ রোধে কঠোর আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী ফোরাম।

আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে নৌকা প্রতীক দিচ্ছে না আওয়ামী লীগ। এতে উপজেলায় ‘পরিবারতন্ত্র’ কায়েম করার সব প্রস্তুতি শুরু করেছেন কিছু এমপি-মন্ত্রী। কেন্দ্রের নির্দেশনা না মেনেই তারা তাদের আত্মীয়স্বজনসহ নিজের পছন্দের ব্যক্তিকে উপজেলা পদে প্রার্থীতা ঘোষণা করছেন। এনিয়ে মাঠ পর্যায়ে চরম অসন্তোষ দেখা গেছে।

উপজেলায় এমপিরা যেন হস্তক্ষেপ করতে না পারেন সেজন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। এ নিয়ে দলের হাইকমান্ডের কঠোর মনোভাব ইতোমধ্যে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারপরও কিছু জায়গায় এমপি-মন্ত্রীদের হস্তক্ষেপ বন্ধ হয়নি। যতই নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘনিয়ে আসছে, এমপি-মন্ত্রীদের ‘অযাচিত’ হস্তক্ষেপের স্বরূপ ততই বেরিয়ে আসছে।

জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা চান, উপজেলা নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হোক। সে জন্য এবার দলীয় প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে না। সেই সুযোগে কিছু এমপি-মন্ত্রী তাদের পছন্দের লোকদের প্রার্থী ঘোষণা দিয়ে রাখছেন। তারা চাচ্ছেন না এমন কেউ জনপ্রতিনিধি হোক যার সাথে তাদের (এমপিদের) বিরোধ রয়েছে। যা ইতিমধ্যেই গণমাধ্যমে ঢালওভাবে প্রকাশিত হয়েছে।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য . আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন ধনবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক। লিখিত অভিযোগে তারা জানান, তাঁর নির্বাচনি এলাকায় উপজেলা নির্বাচনে আপন খালাতো ভাই নিজের পছন্দের ব্যক্তিকেচেয়ারম্যানপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছেন। শুধু . আবদুর রাজ্জাকই নন, এমন ডজনখানেক এমপি-মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দলীয় সভানেত্রীর কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে বলে জানা যায়। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাচনে হস্তক্ষেপ-প্রার্থী হতে না দেওয়া ইত্যাদি অভিযোগ।

 

এমপি-মন্ত্রীদের হস্তক্ষেপ বন্ধে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সর্বশেষ গত ২ মার্চ এক বিবৃতিতে যারা উপজেলা নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করবেন তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন। এছাড়াও ৩০ মার্চ রংপুর বিভাগ, ৩১ মার্চ চট্টগ্রাম বিভাগ ও ৪ এপ্রিল খুলনা বিভাগের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকেও এ বিষয়ে তিনি বারবার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

 

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক দেওয়া হবে না-দলীয় সভানেত্রী সবাইকে আগেই বলে দিয়েছেন। নেত্রী চান বেশি প্রার্থী ভোটে অংশ নিক। এতে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে। কিন্তু আমরা ইদানীং লক্ষ্য করছি কিছু এমপি দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করছেন। তারা এটা করতে পারেন না। দলের নির্দেশনা অমান্য করলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ নিয়ে দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে আলোচনা করা হবে।’

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, ‘দলের সিদ্ধান্ত কাউকে মনোনয়ন বা প্রতীক না দেওয়া। সেক্ষেত্রে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার স্বার্থে এমপিরা যেন কাউকে মনোনয়ন না দেন আমরা সেই চেষ্টা অব্যাহত রাখব। কারণ দলের চেইন অব কমান্ড আগে ঠিক রাখতে হবে।’

আওয়ামী লীগের আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, ‘আমাদের দলীয় সভানেত্রী চান প্রভাবমুক্ত ও উৎসবমুখর নির্বাচন। কিন্তু এ নির্বাচন প্রভাবিত করতে কারোর হস্তক্ষেপই মেনে নেওয়া হবে না। মাইম্যান জেতানোর জন্য প্রভাব বিস্তার করবেন- এটা মেনে নেওয়া হবে না।’

প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপ ৮ মে এবং দ্বিতীয় ধাপ ২১ মে অনুষ্ঠিত হবে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭