ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকরা কী নিষ্ক্রিয় হয়ে গেলেন?


প্রকাশ: 06/04/2024


Thumbnail

আওয়ামী লীগ সংগঠনটি পরিচালিত হয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের দ্বারাই। সাংগঠনিক সম্পাদক হলেন দলটির হৃদপিন্ডের মতো। তৃণমূলের সঙ্গে কেন্দ্রের সংযোগ স্থাপন করেন সাংগঠনিক সম্পাদকরা। বিভিন্ন জেলা উপজেলার কমিটি, দলের শৃঙ্খলা, সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ ইত্যাদি সবকিছুই হয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের ঘিরেই। আওয়ামী লীগ সভাপতি সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখেন এবং তৃণমূলের যেকোন বার্তা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে সাংগঠনিক সম্পাদকরা আওয়ামী লীগ সভাপতির মাধ্যম হিসেবেই কাজ করেন। কিন্তু ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকদের আগের মতো সক্রিয় দেখা যাচ্ছে না। বরং তাদের মধ্যে এক ধরনের নিষ্ক্রিয়তা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। 

আওয়ামী লীগের যে ৮ জন সম্পাদক সাংগঠনিক সম্পাদক রয়েছেন, তাদের মধ্যে জাতীয় পর্যায়ে বিশেষভাবে আলোচিত ৪ জন। আলোচিতদের মধ্যে রয়েছেন, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এবং সুজিত রায় নন্দী।

সুজিত রায় নন্দী গত বছরের কাউন্সিলে সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে। কিন্তু একজন জনপ্রিয় নেতা হিসেবে তিনি আলোচিত সমালোচিত। অন্য যারা সাংগঠনিক সম্পাদক রয়েছেন, তাদের মধ্যে আহমেদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, শফিউল আলম নাদেল নিজেদের দলের দায়িত্ব পালন করলেও জাতীয়ভাবে আলোচিত নন।

তবে দলীয় কার্যক্রমেও এখন ৮ জন সাংগঠনিক সম্পাদকের কাউকে তেমন জোরালো এবং সক্রিয় দেখা যাচ্ছে না, বরং তাদের মধ্যে এক ধরনের হাত-পা গুটিয়ে রাখার মানসিকতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

গত নির্বাচনের আগে পর্যন্ত মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন ও সুজিত রায় নন্দী কে অত্যন্ত সক্রিয় দেখা গিয়েছিল। জাতীয় রাজনীতিতেও তাদের উপস্থিতি এবং তৎপরতা ব্যাপকভাবে দৃশ্যমান ছিল। কিন্তু এই নেতারা এখন অনেকটাই নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

সাংগঠনিক সম্পাদকদের মধ্যে বেশ কয়েকজন এমপি হিসেবে গত নির্বাচনে মনোনয়ন পাননি। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হওয়ার পরও বিএম মোজাম্মেল বা সুজিত রায় নন্দীর মনোনয়ন না পাওয়াটা ছিল হতাশাজনক ও বিস্ময়কর । কিন্তু তার পরেও তারা তাদের দায়িত্ব পালন করেছেন ৷ নির্বাচনকালীন সময় যারা মনোনয়ন পাননি সে সমস্ত সাংগঠনিক সম্পাদকদেরও দলীয় কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে। তবে নির্বাচনের পরে আওয়ামী লীগের যখন মন্ত্রিসভা গঠিত হয় তখন সকলেই আশা করেছিল যে মীর্জা আজম বা  এসএম কামাল হোসেন মন্ত্রিসভায় হয়তো অন্তর্ভুক্ত হবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এদের কেউই মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হননি।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মধ্যে একমাত্র সাংগঠনিক সম্পাদক ক্যাটাগরিতেই কেউ মন্ত্রী হননি। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যদের থেকে মন্ত্রী করা হয়েছে, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে থেকে ২ জন মন্ত্রী হয়েছেন, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্যদের থেকে মন্ত্রী হয়েছেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এমন ব্যক্তিদের থেকেও মন্ত্রী হয়েছেন। মন্ত্রী হননি শুধু সাংগঠনিক সম্পাদকদের মধ্য থেকে কেউ। 

হয়ত আওয়ামী লীগ সভাপতি দলের সাংগঠনিক সম্পাদকদেরকে দলীয় কর্মকান্ডে সক্রিয় রাখতে চেয়েছিলেন একারণে তাদেরকে মন্ত্রী করেননি। কিন্তু এর ফলে, সাংগঠনিক সম্পাদকদের মধ্যে একধরনের  হতাশা এবং নিষ্ক্রিয়তা সঞ্চারিত হয়েছে। অবশ্য কেউ কেউ মনে করেন, আওয়ামী লীগের অন্তঃকলহ এবং দ্বন্দ্ব প্রবল আকার ধারণ করেছে তাতে সাংগঠনিক সম্পাদকরা সমাধানের পথ খুঁজে পাচ্ছেন না। আর একারনেই তারা নিজেদেরকে গুটিয়ে নিয়েছেন।

তবে যেকারনেই হোক সাংগঠনিক সম্পাদকদের নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়াটা আওয়ামী লীগের জন্য একটি অশনি সংকেত এবং দ্রুত তাদেরকে সক্রিয় করা প্রয়োজন মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭