ইনসাইড বাংলাদেশ

লক্ষ্মীপুরে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মেয়রকে কটাক্ষ, ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী


প্রকাশ: 07/04/2024


Thumbnail

রণাঙ্গনের সৈনিক বীর মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জুরুল আলম। পেশায় তিনি একজন হোমিও চিকিৎসক হলেও বেশিরভাগ সময়ই থাকেন আমেরিকায়। গেল ২৬ মার্চ (মঙ্গলবার) জেলার রায়পুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তিনি। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ সরকারি ও বিভিন্ন সংস্থার দায়িত্বশীল ব্যক্তি ও জনপ্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মঞ্জুরুল আলমকে মঞ্চে সংবর্ধিত করা হয়। কিন্তু বক্তব্যে গিয়ে সবার উপস্থিতিতে তিনি পৌর মেয়র রুবেল ভাটকে নিয়ে নানা বিষোধাগার বক্তব্য তুলে ধরেন। এসময় তার অশালীন বক্তব্যে অনেকটাই হতভম্ব হয়ে পড়েন মেয়র রুবেল ভাট।

মঞ্জুরুল আলম জেলার রায়পুর পৌরসভার দক্ষিণ কেরোয়া এলাকার বাহাদুর বাড়ির বাসিন্দা।

ঘটনার আদিপান্ত্যে খোঁজে জানা যায়, রায়পুর পৌরসভার কর্মকর্তাদের সাথে অসদাচরণের অভিযোগে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মঞ্জুরুল আলমের বিরুদ্ধে পৌরসভা কার্যসহকারী মহিউদ্দিন বিপু মামলা করেছেন। এতেই বাধে বিপত্তি।

গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত বীরমুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জুরুল আলম ক্ষুব্ধ হয়ে পৌর মেয়র রুবেল ভাটকে চাঁদাবাজ, রাজাকারের সন্তান বলে কটাক্ষ করেন।

এসময় তিনি আরোও বলেন, ‘তার পরিবারের কেউ আওয়ামীলীগ করেননি কখনো। অথচ আওয়ামীলীগের টিকেটে মেয়র হয়ে তিনি এখন মুক্তিযোদ্ধার কাছে চাঁদা চাইছেন। আমেরিকা থেকে টাকা ইনকাম করে এ দেশে এনে খরচ করছি, দেশ স্বাধীন করতে যুদ্ধ করেছি ওই মেয়রকে চাঁদা দিতে? আমি দেশে থাকলে আওয়ামী বিদ্বেস্বী পরিবারের ওই মেয়র আওয়ামীলীগের নমিনেশন পেতেন না’।

ঢাকায় আওয়ামীলীগের দুর্দিনে বহু কর্মীর আশ্রয়স্থল ছিলেন রুবেল ভাট, এমনটিই বলছেন জেলা আওয়ামীলীগের কয়েকজন নেতা। আর চাঁদাবাজির বিষয়টি হাস্যকর বলে মন্তব্য করেন অনেকে।

মঞ্জুরুল আলম জানান, রায়পুর থানা মসজিদের বিপরীত পাশে তার এবং সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা সৈয়দ আহম্মদের জমি রয়েছে। পুরোনো ভবন ভেঙে সেখানে যৌথভাবে তাদের একটি ৯ তলা ভবন নির্মাণাধীন রয়েছে। কিন্তু ৪ মার্চ পৌরসভার লোকজন এসে তা ভেঙে দেয়। খবর পেয়ে তিনি এসে সিঁড়ি ভাঙা দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। ওইদিন রাতেই তিনি ওমরাহ করার জন্য রায়পুর থেকে চলে যান। ওমরাহ থেকে ফিরে তিনি জানতে পারেন তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে। সিঁড়ি ভাঙার দিন কোনো মারামারি হয়নিও বলে জানান তিনি। তবে তার কাছে কে চাঁদা চেয়েছেন তার কোন সদুত্তর তিনি দিতে পারেন নি।

স্থানীয়রা বলছেন, মুক্তিযোদ্ধা তার সকল অনিয়ম ঢাকতে গত ২৬ মার্চ মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পূর্ব পরিকল্পিতভাবেই মেয়রকে হেয়প্রতিপন্ন করে। এর সাথে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে বলেও জানান অনেকে।

পৌরসভার কার্যসহকারী মহিউদ্দিন বিপু বলেন, ‘আমরা নোটিস দিয়েছি। কিন্তু তারা নোটিস মানেনি। পৌরসভার প্রকৌশলীসহ ৪ মার্চও নোটিস নিয়ে যাই। কিন্তু তারা আমাদের মারধর করে। এজন্য পৌরসভা কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় মামলা করেছ ‘।

রায়পুর পৌরসভার মেয়র গিয়াস উদ্দিন রুবেল ভাট বলেন, ‘জনস্বার্থে পৌর কর্তৃপক্ষ কাজ করে থাকে। পথচারীদের হাঁটার জায়গা না রেখেই মঞ্জুরুল আলম ও সৈয়দ আহাম্মদ পৌর আইন ভেঙ্গে সিঁড়ি নির্মাণ করেছে। খবর পেয়ে পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত কয়েকজন সেখানে গেলে তাদের সাথে বাকবিতন্ডা করেন ওই মুক্তিযোদ্ধা। এসময় তিনি ওই মুক্তিযোদ্ধার বক্তব্যের প্রমাণ দেয়ার দাবি জানিয়ে প্রশাসনের কাছে ন্যায় বিচার চান এই জনপ্রতিনিধি’।

রায়পুর থানার ভাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিন ফারুক মজুমদার বলেন, ‘আদালত আমাদের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। মামলাটি তদন্ত চলছে’।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭