ইনসাইড বাংলাদেশ

পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করার নতুন ষড়যন্ত্র: কেএনএফের পিছনে কারা?


প্রকাশ: 07/04/2024


Thumbnail

পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে আলাদা করার এক নীল নকশা এবং ষড়যন্ত্র দীর্ঘদিনের পুরনো। পার্বত্য চট্টগ্রামকে আলাদা রাষ্ট্র করে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন পরিচালনা করেছিল শান্তি বাহিনী নামে সশস্ত্র গোষ্ঠী। পাহাড়ে তারা দীর্ঘদিন অশান্তির সৃষ্টি করে রেখেছিল। ১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্ব গ্রহণের পর শান্তি বাহিনীর সঙ্গে ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তি করে এবং তারা অস্ত্র সমর্পণ করে। এরপর থেকে পাহাড়ে শান্তি এসেছে। কিন্তু এখন পার্বত্য চট্টগ্রামে ফের অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে এবং তাণ্ডব চালিয়ে আলোচনায় উঠে এসেছে সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট বা কেএনএফ।

কিন্তু কেএনএফ এর মূল লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য কী তা নিয়ে বিশ্লেষকদের মধ্যে মত ভিন্নতা রয়েছে। অনেকেই মনে করছে, সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমারে রাখাইন রাষ্ট্র নির্মাণের যে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন তার সঙ্গে কেএনএফ এর একটি যোগসূত্র রয়েছে। মিয়ানমারে সাম্প্রতিক সময়ে আরাকান আর্মি রাখাইন স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র আন্দোলন করছে এবং স্বাধীন রাখাইন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে তারা অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গেছে বলেও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে।

কেএনএফ এর এই বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনে চীন সহ কয়েকটি দেশ মদদ দিচ্ছে এমন খবরও পাওয়া গেছে। স্বাধীন আরাকান রাজ্য প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আরাকান আর্মির এই আন্দোলনের সঙ্গে আরও কয়েকটি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন যুক্ত রয়েছে। অনেকে মনে করছেন যে, রাখাইন রাষ্ট্রের স্বাধীনতার আন্দোলন বা বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের সঙ্গে কেএনএফ এর আন্দোলনের একটি যোগসূত্র রয়েছে। তার পিছনেও বিদেশি রাষ্ট্রের মদদ রয়েছে। কোন কোন ষড়যন্ত্রকারীরা রাখাইন রাষ্ট্রের সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলকে মিলিয়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের পরিকল্পনা করছেন এবং সেখানে কেএনএফকে ব্যবহার করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও বিভিন্ন মহল শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

পার্বত্য চট্টগ্রামকে নিয়ে এই ষড়যন্ত্র নতুন নয়। কেএনএফ এর উত্থানের আগেও পার্বত্য চট্টগ্রামকে নিয়ে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ষড়যন্ত্রের চেষ্টা করেছিল। এই পার্বত্য এলাকায় কেএনএফ-কে কারা মদদ দিচ্ছে এবং তার সঙ্গে তাদের কি সম্পর্ক রয়েছে, সেটি এখনই খুঁজে দেখা দরকার। তবে বিশ্লেষকরা মনে করেন যে, কেএনএফ এর সঙ্গে কোন আলোচনা নয়, বরং তাদেরকে কঠোরভাবে দমন করা দরকার যেন অন্য কোনো সন্ত্রাসী সংগঠন এই ধরনের ঘটনায় সাহস না পায় এবং ধৃষ্টতা দেখাতে না পারে। 

বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, মিজোরামে কেএনএফ প্রশিক্ষণ নিচ্ছে এবং সেখান থেকে তারা প্রশিক্ষণ নিয়ে এসে বাংলাদেশে আক্রমণ করছে। এদের সঙ্গে জঙ্গি এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের একটি সম্পর্ক রয়েছে। জঙ্গি প্রশিক্ষণ দিয়ে কেএনএফ বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করেছে এমন খবরও পাওয়া যায়। আর এই সমস্ত ঘটনাগুলোর প্রেক্ষিতেই অনেকে মনে করছেন যে, কেএনএফ একক শক্তিতে নয় বরং তার পিছনে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী, জঙ্গি গোষ্ঠী এবং আন্তর্জাতিক মহলের মদদ রয়েছে। আর একারণেই সরকারকে কঠোরভাবে এই বিদ্রোহীদেরকে দমন করতে হবে। 

২০২২ সালে আত্মপ্রকাশের পর এখন কেন কেএনএফ এত মরিয়া হয়ে উঠেছে এটি নিয়ে ভাবতে হবে। এই সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের প্রধান হিসেবে নাথান বম এর নাম উচ্চারিত হচ্ছে। নাথান বম এক সময় চারু কলা বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন এবং বান্দরবানের রুমা উপজেলায় তার বাড়ি। তবে, এই নাথান বমের পিছনে রয়েছে আন্তর্জাতিক মহল। তারা কারা তাদেরকে চিহ্নিত করতে হবে এখনই। আমাদের দেশের সার্বভৌমত্বের স্বার্থে, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চেলের শান্তি এবং অখন্ডতার স্বার্থে। 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭