ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলায় ‘একক স্বতন্ত্র’ প্রার্থী দিতে চায় আওয়ামী লীগ


প্রকাশ: 09/04/2024


Thumbnail

উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক ব্যবহার করবেন না এটা পুরনো খবর। আর এই সিদ্ধান্তের পর আওয়ামী লীগে যেন প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছুকদের সংখ্যা বেড়ে গেছে, বাঁধভাঙা জোয়ারের মতো প্রার্থী হচ্ছেন। ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন দুই দফায় ৩১২ টি উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। ৭ মে প্রথম দফা উপজেলা নির্বাচন এবং ২১ মে দ্বিতীয় দফায় উপজেলা নির্বাচনগুলো অনুষ্ঠিত হবে। 

আওয়ামী লীগ যেহেতু উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে, আর সে কারণে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর দেওয়ার ক্ষেত্রে কোন বিধি নিষেধ নেই। স্বাধীন করে দেওয়া হয়েছে। যে যেভাবে পারবে তারা প্রার্থী হতে পারবে। এরকম একটি পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের মধ্যে যে প্রার্থী বিস্ফোরণ ঘটেছে তা নিয়ে এখন আওয়ামী লীগই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। কারণ এই নির্বাচনে বিএনপি অংশ করছে, জাতীয় পার্টি এবং জামায়াতও অংশগ্রহণ করছে। তবে জাতীয় পার্টি অংশগ্রহণ করছে দলীয় প্রতীক নিয়ে। 

আওয়ামী লীগের যদি একাধিক প্রার্থী হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে ভোটের জটিল সমীকরণে আওয়ামী লীগের প্রার্থী পরাজিত হতে পারে এবং উপজেলাকে নিয়ে বিএনপি-জামায়াতের যে পরিকল্পনা সেই পরিকল্পনায় আওয়ামী লীগ একটি বড় ধরনের বিপর্যয়ে পড়তে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। এরকম একটি পরিস্থিতিতে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ অন্যরকম একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ উপজেলায় ‘একক স্বতন্ত্র’ প্রার্থী দেওয়ার একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন উপজেলায় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ প্রার্থী হতে ইচ্ছুক সকলকে নিয়ে বসছেন এবং সকলের মধ্যে থেকে সমঝোতার ভিত্তিতে একজনকে প্রার্থী হিসাবে দাঁড় করানোর ব্যাপারে স্থির করছেন। কোথাও কোথাও মন্ত্রী বা এমপিরা প্রার্থী হতে ইচ্ছুকদের নিয়ে বৈঠক করছেন এবং একক প্রার্থী ঘোষণা করছেন। কোথাও কোথাও কেন্দ্রীয় নেতারা হস্তক্ষেপ করে একক প্রার্থী দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। 

তবে কিছু কিছু জায়গায় এই উদ্যোগ সফল হলেও অধিকাংশ এলাকা এই উদ্যোগ এখন পর্যন্ত সফল হয়নি। কারণ নেতাদের কথা সাধারণ মানুষ মানছে না। আবার কোথাও কোথাও বিরোধ এতই প্রবল যে, একক প্রার্থী দেওয়ার বিষয়টি কানে তোলা যাচ্ছে না। 

দেখা গেছে যে, এখন পর্যন্ত প্রায় ৭০ টি উপজেলা আওয়ামী লীগ একক প্রার্থী দেওয়ার ক্ষেত্রে চেষ্টা করছে, যেখানে এমপি বা মন্ত্রীরা প্রভাবশালী এবং পুরো এলাকায় তার নিয়ন্ত্রণে আছে সেখানে তিনি প্রার্থীদেরকে বাছাই করে দিচ্ছেন। যদিও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের মন্ত্রী-এমপিদের প্রার্থী বাছাই করে দেওয়ার বিরোধিতা করেছিলেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে যে, এ রকম প্রার্থী বাছাই করে দেওয়ার ফলে উপজেলাগুলোতে বিরোধ কম হচ্ছে এবং নানা রকম সমস্যা থেকেও দল কোন্দল থেকে মুক্তি পাচ্ছে। আর যেখানে কোন্দল বেশি সেখানে একক প্রার্থী দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ সমস্ত জায়গায় যতটুকু সম্ভব কম প্রার্থী দেওয়ার জন্য চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ।

প্রথম দিকে আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচনে যে দাঁড়াবে না দাঁড়াবে সেটি আওয়ামী লীগ দেখবে না। উপজেলা নির্বাচনে যে যার মতো যেভাবে ইচ্ছা নির্বাচন করবে। এর ফলে দলীয় কোন্দলের কোন পরিস্থিতি তৈরি হবে না। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, দলীয় প্রতীক না ব্যবহার করার ফলে আরও বেশি কোন্দল সৃষ্টি হয়েছে। এ রকম বাস্তবতায় এখন আওয়ামী লীগ বেছে বেছে প্রার্থী দিচ্ছে এবং সমঝোতার মাধ্যমে একক বা দুজন প্রার্থী দিয়ে নির্বাচন বৈতরণী পাড় হতে চেয়েছে। দেখা যাক উপজেলায় আওয়ামী লীগের ‘একক স্বতন্ত্র’ প্রার্থী কৌশল শেষ পর্যন্ত সফল হয় কিনা।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭