ইনসাইড পলিটিক্স

তারেক জিয়া: বিএনপির হীরক রাজা


প্রকাশ: 09/04/2024


Thumbnail

বিএনপির নেতারাই তার নাম দিয়েছেন হীরক রাজা। হীরক রাজার মতোই তিনি উদ্ভট। সকালে এক সিদ্ধান্ত দেন, বিকেলে আরেক সিদ্ধান্ত দেন। চাটুকারদের কথা পছন্দ করেন এবং উদ্ভট সিদ্ধান্তের জন্য তিনি ইতিমধ্যে বিএনপিতে শুধু নয়, সারা দেশে আলোচিত হচ্ছেন। 

লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া বিএনপির দায়িত্ব নিয়েছেন দু বছরের বেশি সময় ধরে। তার মা যখন ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়ে কারাগারে যান তখন থেকে কার্যত বিএনপি চালাচ্ছেন তারেক জিয়া। 

তবে বিএনপির একাধিক নেতা বলেন যে, ২০১৮-এর আগে থেকেই তারেক জিয়া দৃশ্যত দল চালাচ্ছেন। সেই সময়ে যেহেতু খালেদা জিয়া মুক্ত ছিলেন সেহেতু সব সিদ্ধান্ত খালেদা জিয়ার মাধ্যমে নেওয়া হত। দলের সিদ্ধান্ত গ্রহণে তারেক জিয়ার একক কর্তৃত্ব খুব একটা গ্রহণযোগ্য হত না। কিন্তু এখন তারেক জিয়া যা বলছে সেটি শেষ কথা। আর তারেক জিয়া যা বলেছেন তার সেই কথাবার্তার মধ্যে কোন সমন্বয় নেই, সামঞ্জস্য নেই। কিছু কিছু কথা উদ্ভবও বটে।

২৮ অক্টোবর থেকে বিএনপির কার্যক্রম যদি বিশ্লেষণ করা যায় তাহলে তারেক জিয়াকে মনে হয়েছে অস্থির, অপরিপক্ক অপরিণামদর্শী এবং উদ্ভট একজন রাজনীতিবিদ। রাজনীতিবিদদের মধ্যে যে প্রজ্ঞা, গভীরতা থাকে সেটা অনুপস্থিতির কারণে তারেক জিয়া একজন অদক্ষ এবং অযোগ্য রাজনীতিবিদ হিসেবেই নিজেকে বারবার প্রমাণ করছেন। ২৮ অক্টোবর যখন বিএনপি আন্দোলনকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে গেছে, সেই সময় একটি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন গড়ে উঠবে এমন প্রত্যাশার কথা ছিল। বিএনপির নেতারাও মহাসমাবেশ থেকে একটা বড় ধরনের কর্মসূচি দেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু তারেক জিয়া এই সময় কিছু কর্মীদের নিয়ে একটি অবাস্তব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন এবং ঢাকা শহর দখলের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। তার পরিকল্পনা ছিল বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালিয়ে ঢাকার রাজপথে নিয়ন্ত্রণ নেওয়া হবে এবং সবাই রাজপথে অবস্থান করবে। কিন্তু তারেক জিয়ার এই রাজনৈতিক কৌশল ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। 

এরপর তারেক জিয়া ঘোষণা করেন যে, বিএনপির যে নেতাকে গ্রেপ্তার করা হবে, সাথে সাথে আরেকজন নেতাকে ওই ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দেওয়া হবে। কিন্তু তিন মাসের বেশি সময় বিএনপি মহাসচিব গ্রেপ্তার থাকলেও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব কাউকে দেওয়া হয়নি। 

নির্বাচনের আগে তারেক জিয়া অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণা দেন। ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিতে বলেন, আদালতে হাজিরা দেওয়ার ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। কিন্তু তার এই নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখায় বিএনপির নেতাকর্মীরাই। নির্বাচনের পর তারেক জিয়া একের পর এক উদ্ভট সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন। সবচেয়ে বেশি উদ্ভট সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন দল পরিচালনার ক্ষেত্রে। সকালে তিনি যে সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন, বিকালে সেটি পরিবর্তন করে ফেলছেন। 

কদিন আগের কথাই ধরা যাক। বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয় এবং সেখানে বলা হয় যে, ভারতের পণ্য বর্জনের কোন সিদ্ধান্ত বিএনপি নেয়নি। আবার তারেক জিয়া বলেন যে, রহুল কবির রিজভী নিজস্ব উদ্যোগে এই কর্মসূচি পালন করেছেন। পরবর্তীতে তারেক জিয়া আবার বলেন যে, ভারত বিরোধী কোন ব্ক্তব্য বিএনপির প্লাটফর্ম থেকে রাখা যাবে না। তিনি কি বলছেন, কি করছেন তিনি নিজেও জানেন না।

বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, ইদানিং তারেক জিয়ার কথাবার্তা অপ্রকৃতিস্থ মনে হয়। তিনি এক ধরনের অস্থিরতায় ভুগছেন। আর এ কারণেই বিএনপির এখন তার নতুন নাম দেওয়া হয়েছে হীরক রাজা। হীরক রাজা যেমন উদ্ভব সব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতেন এবং কারও কথা শুনতেন না, তারেক জিয়াও সে রকম স্টাইলে বিএনপি পরিচালনা করছেন। হীরক রাজা যেমন শুধু স্তাবকদেরকে পছন্দ করতেন তারেক জিয়াও সেই একই পরিস্থিতির মধ্যে আছেন। এর ফলে বিএনপির রাজনীতি এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে উপনীত হয়েছে বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭