ইনসাইড বাংলাদেশ

শুরুতেই বিতর্ক উস্কে দিচ্ছেন যেসব মন্ত্রী


প্রকাশ: 10/04/2024


Thumbnail

এবারের মন্ত্রিসভার প্রথম তিন মাস পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, গতবারের চেয়ে এবার মন্ত্রিসভায় মন্ত্রীরা কম বিতর্কিত মন্তব্য করছেন। বিতর্ক উস্কে দিচ্ছেন অনেক কম। গত মন্ত্রিসভায় যেমন শুরু থেকেই কিছু মন্ত্রী যেন বিতর্ক সৃষ্টির প্রতিযোগিতায় নেমেছেন, এবার সেরকম বিষয়টি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। বরং মন্ত্রীদের মধ্যে অধিকাংশেরই কথাবার্তার ক্ষেত্রে এক ধরনের রক্ষণশীলতা, শালীনতা এবং দায়িত্ববোধের পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে। এটা প্রশংসনীয় বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

কিন্তু এই সুশৃঙ্খলতা সবার মধ্যে যে আছে এমনটি নয়। মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্য বিভিন্ন সময়ে নানারকম বিতর্কিত মন্তব্য উস্কে দিচ্ছেন। তবে এখন পর্যন্ত কোন মন্ত্রী বিতর্কিত মন্ত্রী হিসেবে জনগণের কাছে চিহ্নিত হয়নি। এটি একটি আশার কথা। তবে যারা বিতর্কিত হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন, তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনা আছেন;

নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন: নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন টানা দ্বিতীয়বারের মতো মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু দায়িত্ব গ্রহণ করার পরই তিনি একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য করে আলোচনায় আসছেন। বিশেষ করে বরই দিয়ে ইফতার করা এবং সর্বশেষ স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অশ্লীল অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করে ইতিমধ্যে তিনি এই সরকারের বর্তমান মন্ত্রিসভার সবচেয়ে বিতর্কিত মন্ত্রীর তকমা দখল করে নিয়েছেন। 

নসরুল হামিদ: নসরুল হামিদ টানা তৃতীয়বারের মতো জ্বালানি এবং বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বিদ্যুতের অবস্থা ভালো না। যথারীতি প্রত্যেক বারের মতোই তিনি নানা রকম কথাবার্তা বলছেন। মাঝখানে তীব্র গ্যাস সংকট ছিল। আবার নতুন করে বিদ্যুতের সংকট শুরু হচ্ছে। জ্বালানির মূল্য সমন্বয়ের নামে তিনি যেভাবে তেলের দাম কমাচ্ছেন তাও সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরক্তি এবং বিদ্রূপের উদ্বেগ করেছে। এখন দেখা যাক সামনের দিনগুলোতে নসরুল হামিদ কী করতে পারেন। 

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী: খালিদ মাহমুদ চৌধুরী দ্বিতীয়বারের মতো নৌ প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন। এই সময় সোমালি জলদস্যুদের হাতে বাংলাদেশের একটি জাহাজ আটকের ঘটনায় তার যে প্রত্যুৎপন্নতা এবং ভূমিকা আশা করা হয়েছিল সেটা দেখা যায়নি। একজন রাজনৈতিক সম্ভাবনাময় প্রতিমন্ত্রী হিসেবে গত মেয়াদে তিনি যতটা উজ্জ্বল ছিলেন, এবার তাকে সে রকম দেখা যাচ্ছে না।বিশেষ করে ঈদের আগে শেষ কর্মদিবসে তিনি যখন বলেছেন যে, চলতি মাসের মধ্যেই জাহাজ থেকে জিম্মি নাবিকদের উদ্ধার করা যাবে সেটি জিম্মি পরিবারের মধ্যে এক ধরনের হতাশা তৈরি করেছে। যেখানে তারা প্রতিদিন আশার প্রহর গুনছে, সেখানে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আরও কার্যকর এবং যথাযথ ভূমিকা প্রত্যাশিত ছিল। 

আহসানুল ইসলাম টিটু: আহসানুল ইসলাম টিটু বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী হয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছেন। তার চেষ্টা আছে, আন্তরিকতা আছে কিন্তু মাঝে মাঝে তিনি বেফাঁস মন্তব্য করে বসছেন। এই বেফাঁস মন্তব্য থেকে তাকে সংযত হতেই হবে। তার নিজের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের জন্য এবং মন্ত্রণালয়ের ভালোর জন্য। তিনি বিভিন্ন বাজারে অভিযান করে অ্যাপ তৈরি করার যে বক্তব্য দিয়েছেন তা ছিল বাড়াবাড়ি রকম এবং বর্তমান বাস্তবতার সাথে সামঞ্জস্যহীন। ব্রাজিল থেকে গরুর মাংস আমদানির বিষয়টিও তার বক্তব্য বাস্তবতা বিবর্জিত হিসেবেই ছিল। টিটু এখনও তরুণ। তাকে কম কথা বলতে হবে। কাজ করতে হবে বেশি। না হলে তিনিও বিতর্কিত মন্ত্রী হিসেবে পরিগণিত হতে পারেন।

আব্দুল ওয়াদুদ: আব্দুল ওয়াদুদ এবার রাজশাহী থেকে প্রতিমন্ত্রী হয়ে চমক সৃষ্টি করেছেন। তিনি পল্লী উন্নয়ন এবং সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু তিনি যতটা না প্রতিমন্ত্রী তার চেয়ে তিনি রাজশাহী অঞ্চলের রাজনীতি নিয়েই বেশি আগ্রহী বলে এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে। তিনি প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পরপরই রাজশাহীতে তাকে যেভাবে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে এবং সেই সংবর্ধনা ঘিরে মেয়রের সাথে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সেটি শোভনীয় নয়। এটি তাকেই বিতর্কিত করেছে। স্থানীয় রাজনীতি আলাদা, মন্ত্রণালয়ের কাজ আলাদা। এটি আব্দুল ওয়াদুদকে বুঝতে হবে এবং এটি তিনি যত তাড়াতাড়ি বুঝবেন তত তাড়াতাড়ি তিনি বিতর্ক থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারবেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭