ইনসাইড গ্রাউন্ড

আইপিএলে ইতিহাস গড়া ম্যাচে শেষ হাসি হাসল হায়দরাবাদ


প্রকাশ: 16/04/2024


Thumbnail

টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে আজ যেন এক অতিমাণবীয় রূপ দেখল ক্রিকেট বিশ্ব। এক ম্যাচেই দুই দল মিলিয়ে রান করল ৫৪৯। আর এতে করেই ভাঙ্গা হয়ে গেছে ডজনের বেশি রেকর্ড। সোমবার (১৫ এপ্রিল) বেঙ্গালুরুর চিন্বাস্বামী স্টেডিয়ামে চার ছক্কার খেলাই মেতেছিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। যেখানে মাঠের লড়াই য়ে শেষ পর্যন্ত জয়ের হাসি হেসেছে হায়দরাবাদ।


এদিন টসে হেরে শুরুতে দানবীয় ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ২৮৭ রানের ইতিহাস গড়ে অরেঞ্জ আর্মিরা। এমন দানবীয় স্কোরে প্রথম ইনিংসের পরেই হয়তো লড়াইটা একঘেয়ে হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে বিরাট কোহলি, ফাফ ডু প্লেসিস এবং দিনেশ কার্তিকরা যা করলেন সেটাও রূপকথার চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। ২৮৮ রানের পাহাড়সম লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শেষ পর্যন্ত লড়েছে দলটি। বোলারদের ব্যর্থতা ব্যাট হাতে পুষিয়ে দেয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন কোহলিরা। তবে ২৮৮ রানের লক্ষ্যটা যে অনেকটাই অসম্ভব। তাই কাছাকাছি গিয়ে শেষমেশ হেরেছে ডু প্লেসির দল।

আইপিএলে নিজেদের সপ্তম ম্যাচে হায়দরাবাদের কাছে ২৫ রানে হেরেছে রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। হায়দরাবাদের দেয়া ২৮৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৬২ রান করেছে কোহলিরা। এই হারে এবারের আইপিএলে টানা পঞ্চম হারের স্বাদ পেল বেঙ্গালুরু। ৭ ম্যাচে মাত্র ২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তলানিতে আছে বিরাট-ফাফরা। 

 

বেঙ্গালুরুর ঘরের মাঠে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নামে হায়দ্রাবাদ। হায়দ্রাবাদের দুই ওপেনার অভিষেক শর্মা ও হেড দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেয়। ওপেনিং জুটি থেকে আসে ১০৮ রান। অভিষেক ৩৪ রানে আউট হলেও, অপরপ্রান্তে থাকা হেডের ঝোড়ো ব্যাটিং অব্যাহত থাকে। প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান ক্লাসেনকে নিয়ে এগোতে থাকেন তিনি।


মাত্র ৩৯ বলে শতক হাঁকিয়ে চলতি আইপিএলের দ্রুততম সেঞ্চুরিও করেন হেড। হেডের শতক চলতি আইপিএলে সবচেয়ে দ্রুততম হলেও, আইপিএলের ইতিহাসে এটি চতুর্থ দ্রুততম।


তবে হেড বেশিদূর যেতে পারেননি। ৪১ বলে ১০২ রানে থামে তার ইনিংস। হেড আউট হওয়ার পর তাণ্ডব চালান ক্লাসেন। ২৩ বলে অর্ধশতক হাঁকান এই প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান। ৩১ বলে ৬৭ রান করে আউট হন তিনি।


শেষ দিকে মারকামের ১৭ বলে অপরাজিত ৩২ এবং আব্দুল শামাদের ১০ বলে অপরাজিত ৩৭ রানের উপর ভর করে ২৮৭ রানের পাহাড়সম পুঁজি পায় হায়দ্রাবাদ। আইপিএলের সবগুলো আসর মিলিয়ে এটিই এখন সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। চলতি মৌসুমেই মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে ২৭৭ রান করেছিল দলটি। এবার নিজেদের রেকর্ডই ভাঙল দলটি। 

 

প্রায় অসম্ভব রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা দারুণ হয়েছিল হায়দরাবাদের। পাওয়ারপ্লেতে দুই ওপেনার বিরাট কোহলি এবং ফাফ ডু প্লেসি মিলে ৭৯ রান করে দলকে রেখেছিলেন লড়াইয়ে। ৮০ রানে ভাঙে এই জুটি। ২০ বলে ৪২ রান করা কোহলি ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ মায়াঙ্ক মারকান্দের বলে আউট হন।


কোহলির বিদায়ের পর রানের গতি কমার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি উইকেটও হারায় বেঙ্গালুরু। বড় রানতাড়ায় রান পাননি উইল জ্যাকস, রজত পাতিদার এবং সৌরভ চৌহান। দলীয় ১২১ রানে উইকেটের মিছিলে যোগ দেন অধিনায়ক প্লেসি। ৪ ছক্কা ও ৭ চারে ২৮ বলে ৬২ রান করে কামিন্সের শিকার হয়ে ফেরেন তিনি।

 

ষষ্ঠ উইকেটে লড়াইয়ে ফেরার বেশ চেষ্টা করেছিলেন কার্তিক এবং লোমরোর। তবে তাদের ২৫ বলে ৫৯ রানের জুটিও ভাঙেন কামিন্স। ৩০ বলে ১০১ রানের লক্ষ্য ছিল বেঙ্গালুরুর। প্রায় অসম্ভব এই রান তাড়ায় একাই লড়েছেন কার্তিক।


১৭তম ওভারে দুটি ছক্কা, ১৮তম ও ১৯তম ওভারে একটি করে ছক্কা মেরেছেন কার্তিক। তবে শেষ পর্যন্ত আর লড়াইটা চালিয়ে যেতে পারেননি। ৭ ছক্কা ও ৫ চারে সাজানো তার ৩৫ বলে ৮৩ রানের ইনিংস থামে ১৯তম ওভারে নটরঞ্জনের বলে। ম্যাচ না জেতাতে পারলেও কার্তিকের লড়াইকে দাঁড়িয়ে হাততালি দিয়ে সম্মান জানিয়েছে বেঙ্গালুরুর দর্শকরা।


আইপিএলের এক ম্যাচে ৫৪৯ রান এখন টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। চলতি মৌসুমেই এক ম্যাচে ৫২৩ রানের রেকর্ড গড়েছিল মুম্বাই-হায়দরাবাদ। এবার সেই রেকর্ড ভাঙল বেঙ্গালুরু-হায়দরাবাদ। দুই ম্যাচেই শেষ পর্যন্ত জিতেছে হায়দরাবাদ।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭