ইনসাইড পলিটিক্স

কী হচ্ছে বিএনপিতে?


প্রকাশ: 19/04/2024


Thumbnail

বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকেই বিএনপির মধ্যে এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। সেই অস্থিরতা এখন চূড়ান্ত রূপ ধারণ করেছে বলেই ভিতরের নেতাকর্মীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে। বিভিন্ন ইস্যুতে বিএনপি সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। একজন নেতা অন্যজনকে বিশ্বাস করছেন না এবং দলের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেকেই আতঙ্কিত।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপির মধ্যে যে সব বিষয় নিয়ে তোলপাড় চলছে তার মধ্যে রয়েছে- এক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা কতটুকু সঠিক ছিল? বিএনপি নেতারা ধরেই নিয়েছিলেন যে, বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো এই নির্বাচনকে স্বীকৃতি দেবে না। আর এই নির্বাচনের স্বীকৃতি না পেলে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হবে। নির্বাচনের পর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আসবে। পশ্চিমা দেশগুলো আওয়ামী লীগকে বর্জন করবে। ফলে সরকারের পতন সময়ের ব্যাপার হবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। বিএনপির মধ্যে এখন প্রশ্ন উঠেছে যে পশ্চিমা দেশের উপর অতিনির্ভরশীলতা সঠিক ছিল কিনা বা এই অতিনির্ভরশীলতা কারা সৃষ্টি করেছিল?

বিএনপির মধ্যে দ্বিতীয় যে প্রশ্ন এসেছে তা হল সংগঠন পুনর্গঠন করা। বিএনপির নেতারা, বিশেষ করে তৃণমূল থেকে বারবার বলা হচ্ছে যে আন্দোলনের আগে দরকার সংগঠন পুনর্গঠন। সংগঠনকে না গুছিয়ে, শূন্যপদ পূরণ না করে বিএনপিকে কখনই একটি আন্দোলনমুখী অবস্থায় নিয়ে যাওয়া যাবে না। এ নিয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে। কিন্তু কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

বিএনপির নেতারা মনে করছেন যে, সংগঠন পুনর্গঠন, নেতৃত্ব পরিবর্তন এবং দলের কাউন্সিল অধিবেশন এখন সময়ের দাবি। কিন্তু এ নিয়ে সবাই মুখ খুললেও আনুষ্ঠানিকভাবে কোন সিদ্ধান্ত হচ্ছে না। সবাই তাকিয়ে আছেন লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার দিকে। তারেক জিয়া কি সিদ্ধান্ত নেন সেটাই এখন দেখার বিষয়।

তৃতীয়ত, উপজেলা নির্বাচন বর্জন। উপজেলা নির্বাচন বিএনপি কেন বর্জন করল, উপজেলা নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি কী পেল? সেটি এখন একটি বড় প্রশ্ন হিসেবে সামনে এসেছে বিএনপির নেতাকর্মীদের কাছে। তারা মনে করছেন, যেহেতু উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছে না, সে কারণে উপজেলা নির্বাচন বর্জন করা উচিত হয়নি।বরং এই নির্বাচনে স্বতন্ত্রভাবে প্রার্থীরা দাঁড়ালে তাদের শক্তি সামর্থ্য হতো। কিন্তু তারেক জিয়া কেন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটি নিয়ে বিএনপির মধ্যে এখন চলছে তোলপাড়।

চতুর্থত, দল চলছে কীভাবে? বিএনপি কীভাবে চলছে সেটি এখন কোটি টাকার প্রশ্ন। এমনকি দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরাও এই প্রশ্নটি উত্থাপন করেছেন। দলের সিনিয়র নেতারা ঘুমিয়ে আছেন এমন সময়ে সিদ্ধান্ত জারি হচ্ছে। যেমন বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলছিলেন, উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তটি তিনি টেলিভিশনের স্ক্রলে দেখেছেন, এর আগে তিনি ঘুণাক্ষরও জানতেন না। লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া এককভাবে সব ধরনের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। আর এই সমস্ত সিদ্ধান্তের জন্য কোন জবাবদিহিতাও নেই।

এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে যে, বিএনপিতে তাহলে স্থায়ী কমিটি আছে কেন? সব কিছু মিলিয়ে বিএনপির মধ্যে এক ধরনের গুমোট পরিবেশ তৈরি হয়েছে। নেতাদের মধ্যে একটা থমথমে ভাব, কেউ কারও সাথে মন খুলে কথা বলছেন না। বিএনপির একাধিক নেতা বলছেন, দলটি এখন বিস্ফোরন্মুখ। বিস্ফোরণের অপেক্ষায় আছে বিএনপি।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭