ইনসাইড পলিটিক্স

‘মাই ম্যান’দের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের তৃণমূলে নীরব বিপ্লব


প্রকাশ: 20/04/2024


Thumbnail

আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা এবং ওবায়দুল কাদেরের সুস্পষ্ট ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের তৃণমূলে রীতিমতো জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে। একাধিক উপজেলায় এ সিদ্ধান্তের পক্ষে বিজয় মিছিল করেছেন আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। তারা বলছেন, এটি মাই ম্যানদের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার সুস্পষ্ট নির্দেশনা এবং দল বাচানোর জন্য একটি দূরদর্শী পদক্ষেপ।

আওয়ামী লীগে দীর্ঘদিন ধরে মন্ত্রী-এমপিদের দাপটে দলে ত্যাগী এবং বঞ্চিত নেতারা কোণঠাসা অবস্থায় ছিলেন। বিশেষ করে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর মন্ত্রীরা এলাকার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ গ্রহণের জন্য রীতিমতো রাম রাজত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। শুধু তাই নয়, আওয়ামী লীগের বহু নেতা অভিযোগ করেছেন যে, মন্ত্রী-এমপিরা এখন দলের অন্য কোন নেতাকেও রাখতে দিচ্ছিলেন না। তারা সবসময় চেষ্টা করছেন যে, পরিবারের লোকজনকেই বিভিন্ন পদ পদবী দিতে।

একাধিক নেতা বলছেন যে, রূপগঞ্জের কথাই ধরা যাক, রূপগঞ্জে সাবেক মন্ত্রী এবং বর্তমান সরকারের এমপি গাজী গোলাম দস্তগীর পুরো রূপগঞ্জকেই যেন দখল করে ফেলেছেন। তার স্ত্রীকে পৌরসভার মেয়র করা হয়েছে, তার ছেলে এবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন। সবকিছু মিলিয়ে রূপগঞ্জ এখন যেন গাজীগঞ্জে পরিণত হয়েছে। শুধু রূপগঞ্জ একা না এরকম অনেক নির্বাচনী এলাকায় পরিবারতন্ত্র একটি ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে।

এর আগে আওয়ামী লীগের তৃণমূল এবং স্থানীয় পর্যায়ের নেতারা এর বিরুদ্ধে কথা বলতেন না। কথা বললেই তাদের বিরুদ্ধে নানা রকম হয়রানি করা হতো। তাদের উপর হামলা করা হতো। এখন সেই পরিস্থিতি পাল্টে যাবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় যারা মন্ত্রী-এমপি হয়ে এলাকায় জমিদারতন্ত্র কায়েম করতে চেয়েছেন তাদের মূল ক্ষোভের জায়গা হলো তৃণমূল আওয়ামী লীগ। আর এই তৃণমূল আওয়ামী লীগকে কোণঠাসা করা তাদেরকে হটিয়ে পরিবারতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মিশন শুরু হয়েছিল বেশকিছু নির্বাচনী এলাকায়। এখন আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনার ফলে তৃণমূলের মধ্যে একধরনের উত্থান ঘটেছে। এটি নির্বাচনের আবহাওয়া পাল্টে দিয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এখন এই নির্বাচনে যারাই অংশগ্রহণ করুক বা যেই ফলাফলই হোক না কেন, ‘মাই ম্যান’দেরকে প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী আলাদা পক্ষপাত দিতে পারবে না বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কারণ আওয়ামী লীগ সভাপতি সুস্পষ্টভাবেই নির্বাচনকে প্রভাবমুক্ত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এটি সরকারের আনুষ্ঠানিক অবস্থান। এর ফলে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা প্রশাসন মন্ত্রী-এমপিদের পছন্দের প্রার্থীদের জিতিয়ে আনার জন্য আলাদা কোন অবস্থান নিতে পারবেন না। এটির ফলে নির্বাচনে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের একটি পথ তৈরি হবে।

তবে তৃণমূলের স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন যে, এটির ফলে যেটি সবচেয়ে ভালো হয়েছে তা হলো ‘মাই ম্যানরা’ এখন কোণঠাসা থাকবেন এবং যারা স্থানীয় পর্যায়ে তৃণমূলকে উপেক্ষা করতেন তাদের জন্য এটি একটি সুস্পষ্ট বার্তা।

টাঙ্গাইলে ড. আব্দুর রাজ্জাক, মাদারীপুরে শাজাহান খান, রূপগঞ্জে গোলাম দস্তগীর গাজীর মত যারা তাদের এলাকায় পরিবারতন্ত্র কায়েমের চেষ্টা করছেন তাদের বিরুদ্ধে এখন তৃণমূল ঐক্যবদ্ধ হবে এবং পরিবারতন্ত্রকে হটানোর ক্ষেত্রে একটা বড় ধরনের ইতিবাচক পদক্ষেপ নেবে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭