ইনসাইড পলিটিক্স

ফখরুলকে পছন্দ কূটনৈতিকদের


প্রকাশ: 20/04/2024


Thumbnail

বিএনপিতে এখন নেতৃত্বের টানাপোড়েন চলছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পদ ছেড়ে দেওয়ার জন্য আনুষ্ঠানিক অভিপ্রায় জানিয়েছেন। এ নিয়ে দলের ভিতর চলছে নানা রকম অস্বস্তি। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শেষ পর্যন্ত সরে গেলে দলের মহাসচিব হিসেবে কে দায়িত্ব নেবেন, তা নিয়ে দলের ভিতর চলছে এক ধরনের অনিশ্চয়তা এবং হতাশা। কারণ, এই মুহূর্তে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিকল্প নেই।

দলের নেতাকর্মীরা মনে করছেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একদিকে যেমন তারেক জিয়া এবং বেগম খালেদা জিয়ার অনুগত এবং আস্থাভাজন, অন্যদিকে তিনি সারা দেশের বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে যোগসূত্র রক্ষা করে চলেছেন। তিনি ছাড়া এই মুহূর্তে অন্য কেউ মহাসচিব বা ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হলে দলের ভিতর এক ধরনের শূন্যতা তৈরি হবে বলেও অনেকে মনে করছেন।

তবে শুধু বিএনপির নেতাকর্মীরাই নয়, কূটনৈতিকরাও মনে করছেন, এই সময় বিএনপিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিকল্প নেই। তারা মনে করছেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে শুধু মহাসচিব নয়, তাকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া উচিত। কারণ, তাকে ঘিরে এখন বিএনপির রাজনীতি আবর্তিত হচ্ছে এবং তিনি একদিকে যেমন দায়িত্বশীল আচরণ করেন, অন্যদিকে কূটনৈতিকদের মনের ভাষা বোঝেন এবং তাদের কথাবার্তা গুলোর সঠিক উত্তর দিতে পারেন। যদিও কূটনৈতিক অঙ্গনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চেয়ে বেশি পদচারণা করেন ড. মঈন খান। কিন্তু মঈন খানের চেয়ে এই মুহূর্তে কূটনৈতিকদের পছন্দ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, পশ্চিমা কয়েকটি দেশ এখন বিএনপিতে সংকট নিরসনের জন্য একটি ফর্মুলা দিয়েছেন। তাদের মতে, এই মুহূর্তে বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক জিয়াকে দলের মূল নেতৃত্ব থেকে সরে যাওয়া উচিত। তার বদলে এমন একজন ব্যক্তিকে দায়িত্ব দেওয়া উচিত যিনি দলের সার্বক্ষণিক কাজ করেন এবং সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন। আর এক্ষেত্রে তাদের প্রথম পছন্দ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কূটনৈতিকরা ইতোমধ্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে বিষয়ে বার্তা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

কূটনৈতিকদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, যদি এমন একজন নেতা বিএনপির দায়িত্ব নেন যার সঙ্গে সরাসরি কথা বলা যায় এবং যিনি সংবেদনশীল ও কূটনৈতিকদের চাওয়া চাহিদাগুলো সম্পর্কে সম্যক ধারণা আছে তাহলে পরিস্থিতির দ্রুত পরিবর্তন হওয়া সম্ভব। এর ফলে কূটনৈতিকরা কি চাচ্ছেন না চাচ্ছেন সেই বার্তাগুলো সহজেই বিএনপির নীতি নির্ধারকদের কাছে সঞ্চালিত করা যায়।

কিন্তু এখন বিষয়টি অন্যরকম হচ্ছে। তাদের মতে, বিএনপির নেতারা যখন কূটনৈতিকদের সঙ্গে বৈঠকে আসছেন তখন তারা কোন সিদ্ধান্ত দিতে পারছেন না। সব সিদ্ধান্ত পরবর্তীতে দেওয়ার জন্য সময় নিচ্ছেন। এটির ফলে বিএনপির প্রতি কূটনৈতিকদের আস্থা এবং বিশ্বাস নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

কূটনৈতিকরা মনে করেন , বিএনপিতে বেশ কয়েকজন নেতা রয়েছেন যারা যোগ্য এবং দায়িত্বশীল, দীর্ঘদিন রাজনীতি করার অভিজ্ঞ। তবে যেহেতু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দীর্ঘদিন ধরে দলের মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করছেন এবং অঘোষিতভাবে তিনিই বিএনপির নেতা সে কারণেই এই মুহূর্তে তাকে ভারপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব করা উচিত।

তবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, তিনি ডিসেম্বর পর্যন্ত তারেক জিয়া এবং বেগম খালেদা জিয়াকে সময় দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তার যে শারীরিক অবস্থা এবং পারিবারিক বাস্তবতা, তাতে ডিসেম্বরের পরে তার পক্ষে দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়। এর মধ্যে তিনি বিএনপির নতুন একজন মহাসচিব খুঁজে নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন।

তবে কূটনৈতিক মহল বলছে যে, শেষ পর্যন্ত যদি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মহাসচিব না থাকেন, এই পদে যাকেই নেওয়া হোক না কেন বিএনপি নতুন করে সংকটে পড়বে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭