ইনসাইড পলিটিক্স

অধিকাংশ মন্ত্রী-এমপি স্বজনদের বাদ দিতে রাজি নন


প্রকাশ: 21/04/2024


Thumbnail

মন্ত্রী-এমপিরা যেন তাদের স্বজনদেরকে উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী না করে সেজন্য আওয়ামী লীগ কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে। এ ব্যাপারে সকল মন্ত্রী-এমপিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ দলগতভাবে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই বার্তা দলের সাধারণ সম্পাদক তিন দফায় সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছেন। যারা তাদের ভাই, পুত্র, শ্যালক, মামাদেরকে শেষ পর্যন্ত উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী রাখবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করা হবে বলেও হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের এই বক্তব্যে সাড়া দিয়ে এখন পর্যন্ত মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করেছেন জুনায়েদ আহমেদ পলকের শ্যালক। তিনি নাটোরের একটি উপজেলা হতে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। এবং প্রার্থী হওয়ার জন্য তিনি অন্যান্য প্রার্থীদেরও বসিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। অপহরণের ঘটনাও ঘটেছিল সেখানে। তারপর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্দেশে তিনি মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করবেন বলে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দিয়েছেন।

আগামীকাল প্রথম দফায় যে ১১২ টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে সেখানে মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। এখন দেখার বিষয় যে, কতজন সেখান থেকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, স্বজনদেরকে নির্বাচন থেকে না সরাতে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী এমপিরা নানা রকম অযুহাত দাঁড় করাচ্ছেন। এ সমস্ত অযুহাতের মধ্যে সবচেয়ে বড় অযুহাত হচ্ছে যে, আগে থেকেই তারা রাজনীতি করেন। 

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন যে, তার খালাতো ভাই আগে থেকেই রাজনীতি করেন এবং আগেও তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। কাজেই তিনি ড. রাজ্জাকের খালাতো ভাই এই পরিচয়ে তিনি নির্বাচন করছেন না। কিন্তু ধনবাড়ি উপজেলার লোকজন বলছেন অন্য কথা। তারা বলছেন যে, ড. রাজ্জাকের উত্থানের পর পরই তার খালাতো ভাইয়ের উত্থান হয়েছে। তিনি এবং তার ভাই মিলে তার নির্বাচনী এলাকায় একটি পরিবারতন্ত্র কায়েম করেছেন।

অন্যদিকে শাজাহান খানের বক্তব্য হলো, তার ছেলের যদি প্রার্থীতা প্রত্যাহার হয় তাহলে অন্য কোন প্রার্থী থাকবেন না। অন্য কোন প্রার্থী না থাকলে নির্বাচনের সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। নির্বাচন কমিশন তখন পুনঃতফসিল ঘোষণা করবে এবং নতুন করে নির্বাচনের আয়োজন করবে। এখন পর্যন্ত যারা স্বজনদের মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করেননি বা স্বজনদেরকে নির্বাচনে বহাল রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে আছেন তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন নির্বাচনে প্রার্থীতা প্রত্যাহার না করার ব্যাপারেই এখন পর্যন্ত অবস্থানে রয়েছেন। এদের দু’জনের মধ্যে ড. আব্দুর রাজ্জাক এবং শাজাহান খান অন্যতম। 

নোয়াখালী-২ আসনের এমপি মোরশেদ আলমের ছেলে সাইফুল আলম বিপু প্রার্থী হয়েছেন সেনবাগ উপজেলায়। তিনিও শেষ পর্যন্ত তার প্রার্থীতা প্রত্যাহার করবেন কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি। একরামুল করিম চৌধুরীর ছেলে সাবাব চৌধুরী সুবর্ণচর উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন। আগামীকাল মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। ধারণা করা হচ্ছে শেষ পর্যন্ত সাবাব প্রার্থী হিসেবে থাকবেন। এখন দেখার বিষয় হলো এই যে, মন্ত্রী এমপিরা দলের সিদ্ধান্তকে যেইভাবে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে তার পরিণাম কি হয়। এর ফলে কি আওয়ামী লীগ এসমস্ত মন্ত্রী এমপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন নাকি তাদের বিষয়কে উপেক্ষা করবেন। 

আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করছেন, যদি এ বিষয়টি উপেক্ষা করা হয় এবং তাদের বিরুদ্ধে যদি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হয় সেক্ষেত্রে এটি একটি খারাপ উদহারণ হিসেবে চিহ্নিত হবে এবং দলের হাই কমান্ডের নির্দেশ না মানার যে সংস্কৃতি সেটি দলকে সংকটের মধ্যে ফেলবে। 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭