ইনসাইড পলিটিক্স

প্রার্থীদের চাপে শেষ পর্যন্ত নমনীয় অবস্থানে বিএনপি?


প্রকাশ: 21/04/2024


Thumbnail

উপজেলা নির্বাচনে কেউ স্বতন্ত্রভাবে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। কোন প্রার্থী যদি স্বতন্ত্রভাবে অংশগ্রহণ করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আজীবন বহিষ্কারাদেশ আরোপ করা হবে—এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপির স্থায়ী কমিটি। কিন্তু এ স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে প্রথম দফায় ৮ মে যে ১৫০ টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে সেখানে বিএনপির ৭৭ জন নেতাকর্মী চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। 

বিএনপির অনেক নেতা বলছেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্তের আগেই তারা মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছিল। যেহেতু স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার পর সেকারণেই তারা প্রার্থীতা জমা দিয়েছে। তবে দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র বলছে যে, যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা ইতোমধ্যেই বিএনপির হাইকমান্ডের সাথে যোগাযোগ করেছেন এবং তাদেরকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে দল যদি তাদেরকে বহিষ্কারও করে কোন সমস্যা নেই, তারা প্রার্থী থাকবেন। এবং যদি নির্বাচন না করেন তাহলে তারা অস্তিত্বের সংকটে পড়বেন। এ রকম হুমকির মুখে বিএনপি এখন অনেকটাই নমনীয় হয়ে যাচ্ছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। 

আগামীকাল প্রথম দফায় যে উপজেলাগুলোতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সেখানে মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। আর এই মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনের আগে আজ রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনা হওয়ার কথা। কেউ কেউ বলছেন যে, বিএনপি এখন একটা নমনীয় অবস্থানে যেতে পারে। যারা শেষ পর্যন্ত উপজেলা নির্বাচনে থাকবে তাদেরকে সতর্ক করা বা বিষয়টিকে উপেক্ষা করার নীতি গ্রহণ করা হতে পারে বলেও দলীয় সূত্রে জানা গেছে। বিভিন্ন উপজেলায় বিএনপির প্রার্থীরা তাদের কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে যোগাযোগ করেছেন এবং তাদের অবস্থানে অটুট থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। 

নাসির নগর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বিএনপর জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ওমরাহ খান বলেছেন যে, তিনি শেষ পর্যন্ত প্রার্থী থাকবেন। একইভাবে ময়মনসিংহের দোবাউরা উপজেলার বিএনপির সাবেক সভাপতি শামছুর রশিদ, ফুলপুর পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমরান হোসেন, হালুয়া ঘাটে ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য আব্দুল হামিদ প্রার্থী হয়েছেন। শেষ পর্যন্ত তারা প্রার্থীতায় থাকবেন বলে জানিয়েছেন। এনিয়ে তারা কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগও করছেন। 

উল্লেখ্য যে, সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির চার জন নেতা প্রার্থী হয়েছেন। তারা হলেন, জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি সোহেল আহমেদ চৌধুরী, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোউস খান, যুক্তরাজ্য বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ সেবুল মিয়া এবং যুক্তরাজ্য বিএনপি নেতা শফিক আহমেদ। তাদের মধ্যে দুই জন সরে গেলেও বাকি দুই জন থাকবেন বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে যুক্তরাজ্য বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেবুল মিয়া তারেক জিয়ার কাছে চিঠি লিখে তিনি জানিয়েছেন কেন তিনি শেষ পর্যন্ত এই নির্বাচনে থাকতে চান। 

দিনাজপুর ঘোড়াঘাট উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি সরওয়ার হোসেন এবং সাতক্ষীরা শ্যামনগর উপজেলা বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক মাসুদুল আলম চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। তারা দু’জনেই এনিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন মোহাম্মদ ফইজুল করিম তালুকদার। তিনি শেষ পর্যন্ত উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। ফরিদপুর সদর উপজেলায় বিএনপির দুই নেতা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। তারা হলেন সদর উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি রউফ-উর-নবী এবং যুবদলের সাবেক নেতা নাজমুল ইসলাম। রউফ-উর-নবী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে, নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। তিনি স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করছেন এবং প্রত্যাহারের কোন প্রশ্নই আসে না বলে তার অবস্থান ব্যক্ত করেছেন। সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার বিএনপি সভাপতি নগেন্দ্র চন্দ্র বিশ্বাস নির্বাচন করার ব্যাপারে অটল থেকেছেন। দল যদি তাকে বহিষ্কার করে তাহলে তার কিছু যায় আসে না। 

বিএনপি হিসাব করে দেখেছে যে, যদি এরকম বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয় তাহলে অনেকগুলো উপজেলাতে বিএনপির সংগঠন বিলুপ্ত হয়ে যাবে। আর একারণেই শেষ পর্যন্ত বিএনপি তার অবস্থান পরিবর্তন করতে পারে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। যারা উপজেলায় নির্বাচন করবে তারা তাদের ব্যাপারে কি ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় তা আজ বিএনপি চূড়ান্ত করবে বলেও জানা গেছে। 
 


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭