ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তে হতাশ কূটনীতিকপাড়া


প্রকাশ: 21/04/2024


Thumbnail

বিএনপি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো উপজেলা নির্বাচনও বর্জন করেছে। দলের স্থায়ী কমিটির সভায় এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যারা উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে চরম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আজীবনের জন্য তাদেরকে বহিষ্কার করা হবে বলেও দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছেন যে, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির এই বর্জনের সিদ্ধান্ত কূটনীতিকপাড়ায় এক ধরনের হতাশা তৈরি করেছে। কূটনীতিক পাড়ার কেউ কেউ এই বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো চায় বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। নির্বাচনটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হোক এবং সেই নির্বাচনে যদি কেউ বাধাগ্রস্ত করে, কারচুপি করে বা অবৈধ হস্তক্ষেপ করে তখন তারা এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারবে এবং যারা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন বাধাগ্রস্থ করবে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারবে। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করার ক্ষেত্রে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন অনেক গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা। 

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, সাম্প্রতিক ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারা কুক ডেকে নিয়েছিলেন বিএনপির তিন শীর্ষ নেতাকে। সেখানে তিনি জানতে চেয়েছিলেন কেন বিএনপি উপজেলা নির্বাচনও বর্জন করছে? এ ব্যাপারে বিএনপির মহাসচিব এবং অন্য দুই নেতা কিছু ব্যাখ্যা দিয়েছেন। কিন্তু সেই ব্যাখ্যাটি ব্রিটিশ দূতাবাসের কাছে তেমন গ্রহণযোগ্য হয়নি বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকেও বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা জানতে চেয়েছে যে, বিএনপি কেন উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর জবাবেও বিএনপি একই ধরনের কথা বলছে। 

বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বর্জনের কারণ হিসেবে বলছে যে, প্রথমত, এই নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ নয় এবং তারা অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে সক্ষম নয় বলে বিএনপির দাবি। সে কারণে তারা নির্বাচন বর্জন করছে। দ্বিতীয়ত, বিএনপির নীতিগত অবস্থান হল যে, তারা বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন করবে না। সেই অবস্থানের কারণেই তারা উপজেলা নির্বাচনও বর্জন করছে। তৃতীয়ত, তারা মনে করছে যে, ৭ জানুয়ারি নির্বাচন আসলে সঠিক হয়নি এবং এই নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সরকারও বৈধ নয়। এ কারণে তাদের ভাষায় অবৈধ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়াটাকে সঠিক মনে করছে না। 

কিন্তু পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপির এই তিনটি যুক্তির একটিকেও আমলে নিতে রাজি নন। তারা মনে করছেন, যে ভাবেই হোক বাংলাদেশে সাংবিধানিক ধারায় একটি সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করত তাহলে বোঝা যেত ৭ জানুয়ারি নির্বাচন কতটা সুষ্ঠু এবং অবাধ হয়েছে। তাছাড়া পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা মনে করেন, উপজেলা নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হচ্ছে না। আওয়ামী লীগ নিজেও দলীয় ভাবে নির্বাচন করছে না। স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার জন্য এই নির্বাচনে জন অংশগ্রহণ এবং যোগ্য প্রার্থীদেরকে দাঁড় করানোটা অত্যন্ত জরুরী বলেও তারা মনে করছেন। তাদের মতে, যদি একাধিক প্রার্থী থাকে তাহলে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয় এবং এর ফলে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করা সহজ হয়। বিএনপি কেন এই নির্বাচন করছে না তা নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো হতাশ এবং বিএনপির ওপর এক ধরনের অসন্তোষ প্রকাশ করছেন বলেও জানা গেছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭