ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপিতে বিশৃঙ্খলা


প্রকাশ: 22/04/2024


Thumbnail

উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপিতে রীতিমতো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। আজ প্রথম দফায় উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল। সেখানে বিএনপির যে ৬৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছিলেন তাদের তিনজন ছাড়া কেউই মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি। বিএনপির পক্ষ থেকে যারা মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তারা তাদের সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন এবং তাদেরকে বিএনপির উচ্চ পর্যায় থেকে সবুজ সংকেতও দেওয়া হয়েছে বলে কেউ কেউ দাবি করেছেন।

বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক নেতা বলছেন যে, উপজেলা নির্বাচন দলীয়ভাবে হচ্ছে না এবং এই নির্বাচনে যেহেতু আওয়ামী লীগ কোনো প্রতীক ব্যবহার করছে না, কাজেই বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে বাধা দেওয়া হয়েছে সেটি অযৌক্তিক-অগ্রহণযোগ্য। স্থানীয় পর্যায়ের নেতারা এই সিদ্ধান্ত অমান্য করেই মাঠে থাকছেন।

ধারণা করা হয়েছিল যে, যেহেতু প্রথম দফার নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের পর স্থায়ী কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না, সেহেতু দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী সংখ্যা হয়তো কমে যাবে। কিন্তু বাস্তবে তেমনটা ঘটেনি। বরং দেখা গেছে যে, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ধাপে বিএনপির প্রার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। আবার অনেক উপজেলায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের মদদে এবং ইন্ধনে প্রার্থীদেরকে মাঠে দাঁড় করানো হচ্ছে বলেও বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।

যেমন- মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নির্বাচনী এলাকায় বিএনপির প্রার্থীতা দিয়েছে এবং সেখানে প্রার্থীদের সঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে বলেও জানা গেছে। ড. মঈন খানের নির্বাচনী এলাকাতেও বিএনপির প্রার্থী আছেন এবং সেখানেও বিএনপির পক্ষ থেকেও তাদেরকে সবুজ সংকেত দেওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে।

বিএনপির অন্যান্য বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারাও তাদের এলাকায় অবস্থান ধরে রাখার জন্য তাদের নিজস্ব ব্যক্তিদেরকে প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছেন। ফলে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির যে সিদ্ধান্ত তা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।

বিএনপি এই ব্যাপারে কী করবে সে সম্পর্কে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। গতকাল বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপজেলা নির্বাচনে সম্ভাব্য করণীয় নিয়ে একটি অনলাইন বৈঠকে মিলিত হয়েছিল। সেখানে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াও যুক্ত হয়েছিলেন বলে জানা গেছে। এই বৈঠকে উপজেলা নির্বাচনে আজীবন বহিষ্কার সিদ্ধান্তের ব্যাপারে দলের ভিতর অনৈক্য দেখা যায়। দলের কোন কোন নেতা মনে করছেন যে, এই ধরনের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক।

স্থানীয় সরকার নির্বাচন নির্দলীয়ভাবে হচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা এখানে বিএনপি তার দলীয় প্রতীক ব্যবহার করছে না। আর এই কারণেই উপজেলা নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করবে তারা দলীয় পরিচয় অংশগ্রহণ করছে না বলেই বিএনপির স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য মনোভাব ব্যক্ত করেছেন। আর এর প্রেক্ষিতে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করলে সেটি অন্যায় হবে বলেও কেউ কেউ মনে করছেন।

তাছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলছেন, যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করছেন তারা প্রত্যেকে উপজেলায় অত্যন্ত প্রভাবশালী জনপ্রিয়। আওয়ামী লীগ যেহেতু এবার বিভক্তভাবে একাধিক প্রার্থীদের নির্বাচন করেছে সেজন্য উপজেলা নির্বাচনে তাদের সম্ভাবনাও ভালো। আর এ কারণেই শেষ পর্যন্ত উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী যারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বা দেবেন তারা সরে দাঁড়াবেন কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

আর তারা সরে না দাঁড়ালে তাদেরকে আজীবন বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত শেষ পর্যন্ত বিএনপির থাকবে কি না তা নিয়েও অনেকে সংশয় প্রকাশ করেছেন। কারণ উপজেলা নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত যদি বিএনপি তার কঠোর অবস্থানে থাকে তাহলে অনেকগুলো স্থানীয় পর্যায়ে বিএনপির অবস্থান খুবই দুর্বল হয়ে পড়বে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭