ইনসাইড পলিটিক্স

আগে বহিষ্কার, পরে সাধারণ ক্ষমার কৌশলে বিএনপি


প্রকাশ: 27/04/2024


Thumbnail

বিএনপিতে এখন টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। উপজেলা নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করেছে সেই তালিকা তৈরি করে ৭৩ জনকে ইতিমধ্যে বহিষ্কার করা হয়েছে। দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, উপজেলা নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করবে বা প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে যারা সহযোগিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর এই ব্যবস্থা গ্রহণের অংশ হিসেবে ঢালাওভাবে নেতা-কর্মীদের বহিষ্কার করা হয়েছে। বিএনপিতে বহিষ্কার অবশ্য এটাই প্রথম নয় এর আগেও যে সমস্ত নেতা-কর্মীরা স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল বিশেষ করে পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তাদেরকেও বহিষ্কার করা হয়েছিল। তবে তাদের বেশির ভাগকেই দলে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। সাধারণ ক্ষমতার আওতায় এ সমস্ত স্থানীয় পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ আবার বিএনপির জন্য কাজ করছেন।

এখন প্রশ্ন উঠেছে, উপজেলা নির্বাচনে যাদেরকে বহিষ্কার করা হলো তাদের ভবিষ্যত কি? তারা কি শেষ পর্যন্ত বিএনপি থেকে বহিষ্কারই থাকবেন নাকি বিএনপি তাদেরকে আবার ফিরিয়ে আনবে?

বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, এ ব্যাপারে বিএনপি কৌশলী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। উপজেলা নির্বাচনে যেসমস্ত নেতাদেরকে বহিষ্কার করা হয়েছিল, যারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে তাদের নির্বাচনের ফলাফলের উপর নির্ভর করবে অনেক কিছু।

বিএনপির একজন সদস্য বলেছেন, আমরা যেহেতু দলগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা যাবে না। কাজেই যারা অংশগ্রহণ করবে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতেই হবে। তবে তার মধ্যে যদি ভবিষ্যতে এ সমস্ত নেতারা ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং শাস্তি প্রত্যাহারের বিষয়ে আবেদন করেন তাহলে সেটি দলের হাই কমান্ড বিবেচনা করতে পারে। এর আগেও বিএনপিতে ৩ শতাধিক নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য। এর মধ্যে বেশীর ভাগই আবার বিএনপিতে ফিরে এসেছেন বলে বিএনপির এই স্থায়ী সদস্য জানান। তিনি বলেন, যারা ক্ষমা করেছেন এবং যারা ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকান্ড করবে না বলে অঙ্গীকার করছে তাদেরকে দল ফিরিয়ে নিয়েছে। দলের শৃঙ্খলার স্বার্থে এটা করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

উপজেলা নির্বাচনেও একইরকম ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে বলে বিএনপির শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের সূত্রে জানা গেছে। যারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন এবং যারা বিজয়ী হবেন তারা স্থানীয় পর্যায়ে আবার দলের জন্য কাজ করবেন বলে ধারণা করা হয়েছে। তবে সর্বক্ষেত্রেই এটি হবে না বলে মনে করেন অনেকেই। বিএনপির একজন শীর্ষ নেতা বলেছেন, কথায় কথায় বিএনপিতে বহিষ্কার এটি রাজনৈতিক দলের জন্য সুষ্টু চর্চা নয়। বিএনপি একটি রাজনৈতিক দল। রাজনৈতিক দলে বহিষ্কারের নানারকম প্রক্রিয়া থাকে। একজন নেতাকে বা একজন কর্মীকে বহিষ্কার করার ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়। তার দাবী এসব কিছুই এখন অনুসরণ করা হচ্ছে না। শুধুমাত্র বহিষ্কারাদেশের একটি চিঠি ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কেন তারা নির্বাচন করলেন বা তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ কি ইত্যাদি জানিয়ে তাদেরকে কোন ‘কারণ দর্শানোর নোটিশ’ও প্রদান করা হচ্ছে না।

এসমস্ত কারনেই বিএনপিতে এখন এক ধরনের অসন্তোষ এবং ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। প্রকাশ্যে বিএনপির নেতারা কিছু না বললেও তৃণমূলের নেতারা বলেছেন, বহিষ্কার আতঙ্ক বিএনপিকে আরো নিষ্ক্রিয় এবং হতাশাগ্রস্থ করবে।  



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭