ইনসাইড বাংলাদেশ

নওগাঁয় তীব্র রোদে আমের ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা


প্রকাশ: 30/04/2024


Thumbnail

উত্তরের শস্য ভান্ডার বলা হয় নওগাঁকে। এই জেলায় যে পরিমান ধান উৎপাদন হয় সেই ধান দিয়ে এই জেলা চাহিদা মিটিয়ে আশেপাশের জেলায় বিক্রি করা হয়। ধানের পাশাপাশি আম উৎপাদনে পিছিয়ে নেই এই জেলার কৃষকরা। কিন্তু গত কয়েক দিনের তীব্র তাপপ্রবাহের কারনে আমের গুটি ঝড়ে পড়েছে। পানি ওষুধ স্প্রে করেও মিলছেনা সুফল। নওগাঁর সব আম বাগান গুলোতে বর্তমানে একই অবস্থা। তাই আমের ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কায় দিন কাটছে এখানকার আম বাগানী চাষীদের মাঝে।

টানা দুই সপ্তাহের টানা গরম তাপপ্রবাহে কারণে ঝরে পড়ছে আমের গুটি। পানি সেচসহ নানা পদ্ধতি অবলম্বন করেও ঝরে পড়া থেকে ঠেকানো যাচ্ছে না। এতে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন আমের নতুন রাজধানী হিসেবে খ্যাত নওগাঁর আম চাষীরা। এমন অবস্থায় কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন বাড়তি যত্ন নিলে এ সমস্যা রোধ অনেকটাই সম্ভব।

নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের সূত্র মতে, বছর নওগাঁয় ৩০ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আম চাষ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ৩০০ হেক্টর বেশি। প্রতি হেক্টর জমিতে ১৪ দশমিক ২৪ টন হিসেবে লাখ ৩১ হাজার ৫০০ টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানা যায়।

জেলার বিভিন্ন উপজেলার আম বাগান ঘুরে দেখা যায়, এবার আশানূরুপভাবে আমের দেখা নেই। আমের গুটি ঝরে পড়ে আছে রোদের তীব্রতায়। এমন পরিস্থিতিতে আমের নতুন রাজধানী খ্যাত নওগাঁর বেশিরভাগ আম বাগানেই ফলন বিপর্যয়ের আশংঙ্কা করছেন চাষীরা।

বৈশাখের শুরু থেকে তাপদাহে পুড়ছে নওগাঁ। তপ্ত কড়াইয়ের মতো তেঁতে উঠেছে পথ-ঘাট। সোমবার (২৯ এপ্রিল) বেলা ৩টায় নওগাঁয় তাপমাত্রার পারদ উঠে ৪০. ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা জেলায় চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বলে জানায় জেলার বদলগাছী স্থানীয় আবহাওয়া অফিস।

পত্মীতলা উপজেলার আম চাষী কাজী ফেরদৌস হোসেন বলেন, আমি ১০ বিঘা জমিতে আমের চাষ করেছেন। গত কয়েক দিনের তীব্র তাপপ্রবাহের কারনে আমের গুটি ঝড়ে পড়েছে। পানি ওষুধ স্প্রে করেও মিলছেনা সুফল। তিনি আরও বলেন, এবার সব গাছে মুকুল কম এসেছিল। যেটুকু ছিল, তা নিয়ে আশাবাদী ছিলাম। কিন্তু চলতি মাসের শুরু থেকে তীব্র গরমে অধিকাংশ গাছের গুটি ঝরে গেছে। অনেক গাছ গুটি শূন্য হয়ে আছে। এতে উৎপাদন অনেক কম হবে বলে ধারনা করছি।

পোরশা উপজেলার আম চাষি হাজি মিজানুর রহমান বলেন, এবার ৩০ বিঘা জমিতে চাষ করেছি। গাছে গুটি কম থাকায় হতাশা দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছি। গত বছর প্রচুর আম হয়েছিল। সে তুলনায় এবার অনেক কম পাবো। অধিকাংশ গুটি ঝরে গেছে। ফলনে মারাত্মক বিপর্যয় দেখা দেবে বলে মনে করছি।

নিয়ামতপুর উপজেলার আম চাষি কাজল কুমার মহন্ত বলেন, এবার ১৫বিঘা জমিতে আমের চাষ করেছি। গুটি পড়া রোধে পানি, ওষুধ দেওয়ার পরও প্রচন্ড গরম আর রোদের কারনে আমগুলো ঝরে পড়ছে। গাছে আম টেকানো যাচ্ছে না। আবার কালবৈশাখী ঝড় হলে আম নষ্ট হতে পারে মারাত্বকভাবে। কঠিণ পরিস্থিতে রয়েছি আমরা।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মেহেদুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছরই স্বাভাবিকভাবে এমন সময় গাছ থেকে আমের গুটি ঝরে পড়ে। তবে এই সময়ে গাছে বাড়তি পরিচর্যা করলে অস্বাভাবিকভাবে গুটি ঝরে পড়া বন্ধ হবে। আম গাছের গোড়ায় পর্যাপ্ত সেচের পাশাপাশি প্রয়োজনে গাছের পাতায় পানি স্প্রে করা যেতে পারে। আমরা মাঠ পর্যায়ে চাষিদের আমের গুটি ঝরা রোধে সব ধরনের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি

তিনি আরও বলেন,  এখন পর্যন্ত আমের উৎপাদনে বিপর্যয়ে কোন আশঙ্কা নেই। কারন আমের গুটি ঝরে যাওয়র পরও যে পরিমান আম থাকবে তা দিয়েই আমাদের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব। তবে এমন পরিস্থিতিতে আমরা আম চাষিদের মাঠ পর্যায়ে নানাভাবে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭