ইনসাইড পলিটিক্স

রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইবেন বেগম জিয়া?


প্রকাশ: 02/05/2024


Thumbnail

এভারকেয়ার হাসপাতালে আবার গত রাতে ভর্তি হয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সেখানে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকদের পরামর্শে বেগম খালেদা জিয়াকে আবার ভর্তি করা হয়। একাধিক বিএনপির সূত্রগুলো এ ব্যাপারে দুই রকমের মতামত দিয়েছে। 

বিএনপির কোন কোন নেতা বলছেন যে, খালেদা জিয়ার কিছু শারীরিক জটিলতা আবার নতুন করে দেখা দিয়েছে। এ কারণেই চিকিৎসকরা তাকে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে আরও কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষার পরামর্শ দিয়েছেন। এ সমস্ত পরীক্ষা নিরীক্ষার পর চূড়ান্তভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বেগম খালেদা জিয়ার ব্যাপারে তারা কী করবেন। অন্য একটি সূত্র বলছে যে, বেগম খালেদা জিয়াকে নতুন করে বিদেশে পাঠানোর জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে তার পরিবারের পক্ষ থেকে। সেই উদ্যোগের অংশ হিসাবে বেগম জিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

বিএনপির কয়েকজন নেতা বাংলা ইনসাইডারকে জানিয়েছেন যে, তার পরিবারের সদস্যরা দলের বাইরে গিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি নিয়ে দর কষাকষি করছেন। তারা যে কোনো মূলে বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে চান। বিশেষ করে বেগম জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার এ ব্যাপারে মূল ভূমিকা পালন করছেন বলে জানা গেছে। এছাড়াও লন্ডনে অবস্থানরত প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা সিঁথিও বেগম খালেদা জিয়াকে যে কোনো মূল্যে বিদেশে নেওয়ার পক্ষপাতী। আর এ কারণে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

বেগম জিয়ার পরিবারের সদস্যদেরকে ইতোমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে একটি বার্তা দেওয়া হয়েছে তা হল বেগম জিয়া যদি তার অপরাধ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা মার্জনা আবেদন করেন তাহলে সরকার সেটি বিবেচনা করবে। এবং এই বাস্তবতায় বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করার পক্ষে। বেগম জিয়ার পরিবারের অন্তত দুজন সদস্য শামীম ইস্কান্দার এবং শর্মিলা সিঁথি মনে করেন যে, রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা ভিক্ষার আবেদন করার মধ্যে অসম্মানের কিছু নেই। তারা এ নিয়ে পরিবারের অন্যান্য সদস্য এবং বিএনপির কয়েকজন নেতার সঙ্গেও কথা বলেছেন। এমনকি বিএনপি নেতা মাহবুব উদ্দিন খোকনকে ডেকে নিয়ে এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। 

তবে বিএনপির প্রায় সব নেতাই রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন এর তীব্র বিরোধী। তারা মনে করছেন, এই ধরনের আবেদন করা অনভিপ্রেত এবং বেগম খালেদা জিয়া সারা জীবনের রাজনৈতিক অর্জন এক নিমেষে ধূলিসাৎ হয়ে যাবে। এ কারণে তারা কোন অবস্থাতেই এ ধরনের আত্মসমর্পণের পক্ষে নয়। তবে বেগম জিয়ার পরিবারের সদস্যরা মনে করেছেন, তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার এটাই একমাত্র উপায় নেই। 

বিএনপির পরিবারের সদস্যরা মনে করছেন, বেগম জিয়া যে বয়স এবং যে শারীরিক অবস্থা তাতে তিনি ক্ষমা চাইলেই কী আর না চাইলে কী। তিনি এই শারীরিক অবস্থায় আপাতত রাজনীতিতে ফিরে আসতে পারবে না। এ কারণে তার সহজ সমাধানে যাওয়াটাই উচিত। তবে বিএনপির কোন কোন সদস্য বলছেন, রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়া মানে হল দোষ স্বীকার করে নেওয়া। বেগম খালেদা জিয়াকে আনুষ্ঠানিক ভাবে স্বীকৃত দুর্নীতিবাজ হিসেবে প্রমাণের জন্যই সরকারের এটি কৌশল। এই কৌশলের ফলে বিএনপির রাজনীতি ধ্বংস হয়ে যাবে। এটি করা কোনভাবেই উচত না বলে তারা মনে করেন। তবে তারেক জিয়া এ ধরনের ক্ষমা প্রার্থনা বা রাষ্ট্রপতির কাছে অনুকম্পা ভিক্ষা করার তীব্র বিরোধী। তিনি এখন পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়ার সব ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছেন। তিনি কোন ভাবেই এটি হতে দিতে রাজি নন। কিন্তু শামীম ইস্কান্দারের সাথে তারেক জিয়ার মতপার্থক্য এবং দ্বন্দ্ব এখন বিএনপিতে প্রকাশ্যে বিষয়। দেখার বিষয় শেষ পর্যন্ত শামীম ইস্কান্দার জয়ী হন নাকি বেগম জিয়ার ব্যাপারে তার সন্তানের সিদ্ধান্তই শেষ সিদ্ধান্ত হিসেবে পরিগণিত হয়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭