ইনসাইড বাংলাদেশ

মন্ত্রী হয়ে সবার হৃদয় জয় করেছেন ডা. সামন্ত লাল


প্রকাশ: 08/05/2024


Thumbnail

সারা জীবন চাকরি করছেন। চাকরি করলেও তিনি একজন ভিশনারি সরকারি চাকুরে ছিলেন। একটা লক্ষ্যে সারা জীবন নিজেকে নিবেদিত করেছেন। একটা লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য তিনি জীবনকে উৎসর্গ করেছেন। মানবসেবাই তাঁর ব্রত। বাংলাদেশে দগ্ধ মানুষের জন্য তিনি একজন ত্রাতা এবং দগ্ধ মানুষের চিকিৎসার জন্য তিনি শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বে সমাদৃত। একজন মানবিক চিকিৎসকের প্রতিরূপ তিনি।

একটা সময় বাংলাদেশে এসিড সন্ত্রাস ছিল অত্যন্ত আলোচিত বিষয় এবং এসিড সন্ত্রাসের কারণে নারীদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল। নারীদের ভবিষ্যত অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ত। এসিড সন্ত্রাস একটা ভয়াবহ রুপ নিয়েছিল। বিশেষ করে ৮০ দশক এবং ৯০ দশকে নারীদের নিরাপত্তার অন্যতম ঝুঁকি ছিল এসিড সন্ত্রাস। সেই সময় ডা. সামন্ত লাল সেন তাঁর জীবনের সবটুকু প্রাণ শক্তি উজাড় করে দিয়েছিলেন এসিড দগ্ধ নারীদের পিছনে। তাদেরকে সেবা দেওয়াটাই ছিল তার ব্রত। তিনি জীবনে কোনদিন সরকারি চাকুরে হিসেবে থাকেননি। বরং একজন ব্রতচারী মানুষ হিসেবে একটি সুনির্দিষ্ট মানবসেবার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে গেছেন। 

এসিড সন্ত্রাসের পর শুরু হয় অগ্নি সন্ত্রাসের রাজত্ব। বাসে আগুন, ট্রেনে আগুন, গান পাউডার দিয়ে মানুষকে পুড়ানো ইত্যাদি অগ্নি সন্ত্রাস রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে বিএনপি-জামায়াত জোট। আর এই সময় অগ্নি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মানবিক প্রতিরোধের আলোকবর্তিকা হয়ে ওঠেন ডা. সামন্ত লাল সেন। তাঁর উদ্যোগেই শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিট গঠিত হয়েছে। তিনি ঢাকার গণ্ডি ছেড়ে সারা দেশে দগ্ধ মানুষের চিকিৎসার জন্য এক মহতী এবং স্বপ্নচারী উদ্যোগকে বাস্তবে রূপ দিয়েছিলেন।  

বাংলাদেশে এসিড সন্ত্রাস, অগ্নি সন্ত্রাস ছাড়াও নানা কারণে মানুষ আগুনে পুড়ে, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নানা রকম দুর্ঘটনায় আগুনে ঝলসে যাওয়া মানুষের সংখ্যা কম নয়। এই ভয়াবহতার বিরুদ্ধে মানবতার হাত বাড়ানোর জন্য যিনি সকলের শ্রদ্ধার পাত্র তিনি হলেন ডা. সামন্ত লাল সেন। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবার তাঁর মন্ত্রিসভা গঠনে সামন্ত লাল সেনকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী করে একটি চমক দেখান। ডা. সামন্ত লাল সেন এর জন্য এটি ছিল একটি বড় বিস্ময়। কিন্তু এই পদের জন্য তিনি যে অত্যন্ত যোগ্য এবং তিনি যে একজন সত্যিকারের মহৎ মানুষ দায়িত্ব গ্রহণের চার মাসের কম সময়ের মধ্যে তিনি তা প্রমাণ করেছেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে এ পর্যন্ত সময় তাঁর কিছু কিছু কাজ সর্বত্র প্রশংসিত হচ্ছে। সাধারণ মানুষ তার কার্যক্রমে মুগ্ধ। চিকিৎসকরা তাকে নিয়ে আশায় বুক বাঁধছে। রোগীরা তাঁর কারণে এখন অনেকটাই আশ্বস্ত হচ্ছেন। সবকিছু মিলিয়ে ১১ জানুয়ারি থেকে মন্ত্রিত্ব পাওয়া ডা. সামন্তলাল সেন একজন মানবিক মন্ত্রী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। তিনি যেন মানুষের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছেন ক্রমশ।

সাধারণত মন্ত্রীরা তাদের কার্যালয়ে যান তাদের ইচ্ছেমতো সময়। কিন্তু সামন্ত লাল সেন অফিসে যাচ্ছেন রুটিন করে। সকাল সাড়ে আট থেকে নটার মধ্যে মন্ত্রণালয়ে তাকে পাওয়া যাচ্ছে। সরকারি কাজে অতীতে দেখা গেছে, মন্ত্রীদের জন্য ফাইল আটকে থাকে, সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। কিন্তু তিনি এখানেও ব্যতিক্রম। দ্রুত সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন। ফাইল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে তিনি উৎপাটিত করেছেন এই অল্প সময়ের মধ্যে। 

মন্ত্রীরা সাধারণত একটা নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে থাকেন এবং প্রটোকল মানেন। নির্দিষ্ট গণ্ডির বাইরে কেউ তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন না। একটি চক্র তাকে ঘিরে ফেলে। কিন্তু এখানেও ডা. সামন্ত লাল উজ্জ্বল ব্যতিক্রম। তিনি একজন উপজেলা পর্যায়ে চিকিৎসকের সঙ্গে যেমন কথা বলছেন তেমনই সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তার সঙ্গেও কথা বলছেন। ভালো কাজের জন্য তিনি যেমন প্রশংসা করেছেন তেমনি মন্দ কাজের জন্য তিনি শাস্তি দিতেও কার্পণ্য করছেন না। 

উত্তরাঞ্চলে একজন সিভিল সার্জন ভালো উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। তাকে তিনি টেলিফোন করে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। আবার একজন চিকিৎসক তাঁর কর্মস্থলে থাকছেন না তাকে সাসপেন্ড করতেও তিনি কুণ্ঠাবোধ করছেন না। সবচেয়ে বড় কথা হলো প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য তিনি ছুটে বেড়াচ্ছেন। ছুটির দিনগুলোতে তাকে বিভিন্ন জেলায় স্বাস্থ্য কেন্দ্র পরিদর্শন, কমিউনিটি ক্লিনিক পরিদর্শন করতে দেখা গেছে। 

সবচেয়ে বড় কথা হলো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটি দুর্নীতিগ্রস্ত মন্ত্রণালয় হিসেবে পরিচিত ছিলো। কিন্তু সামন্ত লাল সেন এই অল্প সময়ের মধ্যে দুর্নীতির ছিদ্রগুলো বন্ধ করতে পেরেছেন। নিজেকে একজন সৎ মানুষ হিসেবে প্রমাণিত করেছেন। এক দিকে শতভাগ সৎ এবং শতভাগ মানবিক একজন মানুষ যে জয়ী হতে পারে এখন পর্যন্ত তা প্রমাণ করতে পেরেছেন। তাছাড়া তাঁর সংবেদনশীল আচরণ রোগীদের আশ্বাস্ত করছে। একদিকে যেমন তিনি সাধারণ জনগণ যেন স্বাস্থ্যসেবা পায় সেই বার্তা দিচ্ছেন, চিকিৎসকদের সতর্ক করছেন, অন্যদিকে চিকিৎসকরাও যেন হয়রানির শিকার না হন সেই বিষয়টিও তিনি দেখছেন। সব কিছু মিলিয়ে এবার এমন একজন স্বাস্থ্যমন্ত্রী দেশ পেয়েছে যিনি একজন পরিচ্ছন্ন মানবিক হৃদয়বান মানুষ।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭