ইনসাইড পলিটিক্স

উপজেলাতেও ভুল কৌশলে ব্যাকফুটে বিএনপি


প্রকাশ: 09/05/2024


Thumbnail

একের পর এক ভুল কৌশল বিএনপির রাজনীতির অস্তিত্ব সংকটে ফেলেছে। এবার উপজেলা নির্বাচনেও বিএনপি যে কৌশল গ্রহণ করেছিল, প্রথম দফা ভোটগ্রহণের পর সেই কৌশল ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বিএনপির ভোট বর্জন যেমন সাধারণ মানুষ সাড়া দেয়নি ঠিক তেমনি ভাবে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থীরাও নির্বাচনে একেবারে সর্বস্বান্ত হয়ে যাননি। সাত জন বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এর ফলে আগামী ধাপগুলোতে যারা বিএনপির পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং যারা দল থেকে বহিষ্কার হয়েছিলেন তারা আবার নতুন করে উৎসাহ পাবেন এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য মরিয়া চেষ্টা চালাবেন। এর ফলে বিএনপির বহিষ্কার কৌশল ব্যর্থ হয়ে যাবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। 

উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতোই অবস্থান গ্রহণ করেছিল। স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, উপজেলা নির্বাচন বিএনপি বর্জন করবে এবং এই নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হবে। যেমন কথা তেমন কাজ। উপজেলা নির্বাচনে প্রথম দফায় ৭৩ জন বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ে নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ৬৩ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কিন্তু বিএনপির এই বহিষ্কারাদেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ের নেতারা উপজেলা নির্বাচনে বহাল ছিলেন। 

প্রথম দফা ভোটগ্রহণের পর বিএনপির বহিষ্কৃত কোনো প্রার্থী নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ আনেননি। নির্বাচনকে নিয়ে তাদের কোন প্রশ্ন ওঠেনি। স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনে যে ধরনের সহিংসতা এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটার কথা তেমন কিছু ঘটেনি। বরং উপজেলা নির্বাচন বা উপজেলা নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে একধরনের আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অন্যান্য স্থানীয় সরকার নির্বাচনের তুলনায় এবার উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম ছিল। কিন্তু একেবারেই হতাশাজনক নয়। 

নির্বাচন কমিশন বলেছে, ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ভোটার উপজেলা নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন। প্রধান বিরোধী দলের নির্বাচন বর্জনের পরও ৪০ শতাংশ ভোটার ভোট দেওয়াটা খুব একটা খারাপ দৃষ্টান্ত নয়। 

বিএনপি শুধু উপজেলা নির্বাচনে তাদের দলীয় প্রার্থীদেরকে নিরুৎসাহিত করেনি, ভোটারদেরকে ভোট বর্জনের জন্য  প্রচারণায় অংশ নিয়েছিল। বিএনপি বলেছিল যে, জনগণকে ভোট বর্জনের জন্য তারা উদ্বুদ্ধ করবে। কিন্তু বিএনপির এই ভোট বর্জনের প্রচারও না ফ্লপ করেছে। বিএনপির ভোট বর্জনের ডাকে সাধারণ মানুষ সাড়া দেয়নি। কোনো কোনো উপজেলাতে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে দুই পক্ষের মধ্যে। সবকিছু মিলিয়ে নির্বাচন একেবারে নিষ্প্রাণ হয়েছে এমনটি বলা যাবে না। এই নির্বাচন আরও ভালো হতে পারতো যদি বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতো। কিন্তু বিএনপির অংশগ্রহণ ছাড়াও যে ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে গেছেন এবং নির্বাচন সফল ভাবে সম্পন্ন হয়েছে এটা বিএনপির জন্য একটা বড় পরাজয়। তার চেয়ে বিএনপির বড় পরাজয় যে, দলের শৃঙ্খলা এখন ভেঙে পড়েছে। দলের নির্দেশনা মানছেন না বিদ্রোহীরা। এটি ভবিষ্যতের জন্য একটি দৃষ্টান্ত হয়ে যাবে বলেই অনেকে মনে করছেন। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির যে ভোট বর্জনের প্রচারণা সেই প্রচারণায় জনগণ সাড়া দেয়নি। তাহলে উপজেলা নির্বাচনের ভুল কৌশল কি বিএনপিকে আরও এক ধাপ নিচে নামিয়ে দিলো?



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭