ইনসাইড পলিটিক্স

বিজয়ীদের ফিরিয়ে আনবে বিএনপি


প্রকাশ: 10/05/2024


Thumbnail

উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপ সম্পন্ন হয়েছে। প্রথম ধাপে উপজেলা পরিষদ গুলোতে চেয়ারম্যান পদে বিএনপির ২৭ জন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। এদের মধ্যে সাতজন বিজয়ী হয়েছেন। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, যারা বিজয়ী হয়েছেন, তাদেরকে দলে ফিরিয়ে নিয়ে আসার জন্য নীতি নির্ধারক মহলে আলোচনা চলছে। 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন, সবগুলো নির্বাচন শেষ হয়ে যাওয়ার পর বিএনপি সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করবে। যারা বহিষ্কৃত হয়েছে, তাদের মনোভাব যাচাই করবে এবং তারা যদি ক্ষমাপ্রার্থনা করে দলে ফিরতে চান তাহলে তাদেরকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করা হবে। 

তবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির ওই সদস্য বলেছেন, যারা পরাজিত হয়েছেন তাদের ব্যাপারে বিএনপির নেতিবাচক অবস্থানের কোন পরিবর্তন হয়নি। উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপের ফলাফল অনুযায়ী বিএনপির যে সাত জন নির্বাচিত হয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরের আশরাফ হোসেন আলিম, ভোলাহাটে আনোয়ার হোসেন, শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় আমিনুল ইসলাম বাদশা, ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে মোহাম্মদ আবদুল হামিদ, গাজীপুর সদরে ইজাদুর রহমান মিলন, বান্দরবান সদরে আব্দুল কুদ্দুছ ও সিলেট বিশ্বনাথের সোহেল আহমেদ চৌধুরী। এই সাতজনই বিএনপির জনপ্রিয় নেতা এবং এলাকায় তাদের প্রভাব রয়েছে। 

সরজমিনে বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, যে সমস্ত উপজেলাগুলোতে বিএনপির প্রার্থীদের পক্ষে বিএনপির কর্মী সমর্থকরা নেমেছিল সেই সমস্ত স্থানে তারা বিজয়ী হয়েছেন। আর যে সমস্ত স্থানে বিএনপির বহিষ্কৃত প্রার্থীদের পক্ষে দলের নেতাকর্মীরা নামেননি, তারা ভীত ছিলেন এবং দলের নির্দেশ অমান্য করার জন্য তাদেরকে বহিষ্কার করা হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, তাদেরকে পরাজয়বরণ করতে হয়েছে। 

বিএনপির মধ্যে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিএনপির একজন যুগ্ম মহাসচিব বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে ভোটের হার ছিল ইতিহাসে সর্বনিম্ন। আর এটি বিএনপির আন্দোলনের ফসল। এটিকে তিনি বিএনপির জন্য একটি বিজয় হিসেবে দেখছেন। একই রকম মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তাঁর মতে, উপজেলা নির্বাচনে মানুষ ভোট দেয়নি। বিএনপি যে ভোট বর্জনের ডাক দিয়েছিল তাতে জনগণ সাড়া দিয়েছিল বলেই বিএনপির এই নেতা মনে করেন। 

তবে বিএনপির মধ্যে এ নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে। বিএনপির কোনো কোনো নেতা বলছেন, বিএনপি এই নির্বাচন বর্জন করার সত্ত্বেও শেষপর্যন্ত ভোট হয়েছে এবং উপজেলাগুলোতে এখন আওয়ামী লিগের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। 

বিএনপির একজন যুগ্ম মহাসচিব বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে কম ভোট হলেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচন হয়েছে। আমাদের প্রার্থীদেরকে যদি আমরা সমর্থন দিতাম, প্রার্থীরা যদি মাঠে কাজ করতে পারত কর্মী সমর্থকদের নিয়ে সেক্ষেত্রে নির্বাচনের ফলাফল অন্য রকম হতে পারত। তার মতে, যারা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে উপজেলা নির্বাচন করেছেন তারা সকলে নিজ দায়িত্ব করেছেন। একদিক থেকে তারা যেমন দলের পৃষ্ঠপোষকতা পাননি অন্যদিক কর্মী সমর্থকেরা তাদের সঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে এক ধরনের আড়ষ্ট ছিলেন। আর এ কারণেই তারা নির্বাচনে পিছিয়ে পড়েছেন।

বিএনপির কোনো কোনো নেতা অবশ্য দাবি করেন যে, এই নির্বাচনের ফলাফল পূর্বনুমতি ছিলো। কারণ ক্ষমতাসীন দল যে তাদের পক্ষে নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে আসবে এটি আগে থেকে জানা ছিলো। আর এ কারণেই বিএনপি ভোট বর্জনের সুযোগ নিয়েছিলো। তবে নির্বাচনের পর বিএনপি দ্বিমুখী সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে বলেই বিভিন্ন সূত্র থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে। যারা নির্বাচনে পরাজিত হবে তাদের আপাতত বিএনপিতে ফেরা সম্ভাবন নাই। আর যারা বিজয়ী হয়েছেন তাদেরকে নানারকম কৌশলে বিএনপিতে ফিরিয়ে আনা হবে বলে ধারণা করা হয়েছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭