কালার ইনসাইড

সংসার হলেই শোবিজকে বিদায় কেন?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 19/04/2018


Thumbnail

সংসার মানেই কী শোবিজকে বিদায় জানাতে হবে? যদি তারকাদের মধ্যে জরিপ করা হয়, আপনি কেন শোবিজে কাজ করতে চান? শতকরা নব্বই ভাগ তারকা উত্তর দিবেন এটা তার স্বপ্ন। সেই স্বপ্নকে এক পলকে বিসর্জন দিয়ে চলে যায় আড়ালে। যে দর্শকদের জন্য মেলে নাম-খ্যাতি। তুড়ি মেরে চলে যায় সেই দর্শক কিংবা ইন্ডাস্ট্রিকে। ঢালিউডের জনপ্রিয় খল অভিনেতা মিশা সওদাগর মাহিয়া মাহির হুট করে বিয়ে করাকে `ফাজলামো` বলে অভিহিতি করেছিলেন। মাহির বিয়েতে তিনি চটে বলেন, ‘আমার দেখা নতুনদের মধ্যে সবচেয়ে সম্ভাবনাময়ী নায়িকার হঠাৎ বিয়ের সংবাদে আমি হতবাক। এরা একটিবারও তাদের দায়বদ্ধতার কথা ভাবলো না। আমি এই প্রজন্মের এ রকম হুটহাট সিদ্ধান্তকে কখনোই স্বাগত জানাতে পারবো না। কারণ আমার পরিবার আমাকে আজকের এই মিশা সওদাগর বানায়নি। আমার নাম, আমার খ্যাতি, আমার প্রাচুর্য, আমার জাতীয় পুরস্কার- সব ইন্ডাস্ট্রি দিয়েছে। হুটহাট সিদ্ধান্তের পরিসমাপ্তি হোক।’

বিয়ে করলে তারকাদের ক্যারিয়ার পরতে থাকে। এই বাক্যটা সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির জন্য একটা ভুল বার্তাই বলা চলে। হলিউড- বলিউড বাদই দিলাম। আমাদের দেশের রাজ্জাক, শাবানা, আলমগীর, মান্না, জসিম,  মৌসুমী থেকে শুরু করে আজকের শাকিব খান। বিয়ের পরে কারও জনপ্রিয়তায় ছেদ পড়েনি।

কথা প্রচলিত আছে অন্য জগতের কাউকে বিয়ে করলেই শোবিজকে বিদায় জানানোর পায়তারা বেশি হয়। অনেকেই অভিনয়ের মাধ্যমে নিজেদের ক্যারিয়ার গড়লেও পরবর্তীতে তারা হয়ে উঠেছেন ‘ফুলটাইম সংসারী’।

সম্ভাবনাময়ী ছিলেন শাবনাজ-নাঈম। নাঈম-শাবনাজ অভিনীত অধিকাংশ ছবিই ছিল ব্যবসা সফল। সফল স্ক্রিনে নাঈম-শাবনাজ বাস্তব জীবনেও সফল। অভিনয় করতে গিয়েই প্রেম। প্রেম থেকেই বিয়ে। ১৯৯৪ সালের ৫ অক্টোবর তারা দুজন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের ঘরে রয়েছে দুই কন্যা সন্তান। একই অঙ্গনের মানুষ হলেও বিয়ের পরে শোবিজে স্থায়ী হতে পারেননি তাঁরা।  

এছাড়া একঝাক তারকা বিয়ের পরে সংসারী হয়ে প্রবাসে আছেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে বলা যায় রিচি সোলায়মানের নাম। জনপ্রিয় ও ব্যস্ত এ অভিনেত্রী হুট করে সবকিছু ছেড়ে বিদেশে পাড়ি জমান। আমেরিকাতেই তিনি স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। আমেরিকাতে আছেন রোমানা খানও। দেশে ফিরবেন কি ফিরবেন না এমন কিছুই জানা যায়নি। লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার মঞ্চ থেকে মিডিয়াতে নাম লেখান নাফিজা জাহান। নাটক ও টেলিফিল্মে নিজেকে প্রমাণ করেন, হয়ে ওঠেন ব্যস্ত তারকা। তবে ২০১৩ সালের মাঝামাঝি দেশ ছাড়েন তিনি, পাড়ি জমান আমেরিকায়। গুনী অভিনেত্রী শ্রাবন্তীও দীর্ঘদিন ধরে এ সেদেশে আছেন। মোনালিসাও স্বামীর টানে প্রবাসে পাড়ি জমিয়েছিলেন। কিন্তু সংসার স্থায়ী না হলেও তিনি এখনো সেখানেই আছেন। শায়না আমিনও দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন। সেখানেই প্রবাসী মাসুদ রানাকে বিয়ে করে স্বামী-সন্তান নিয়ে লাপাত্তা হয়ে আছেন। আছে শায়নার মতো সম্ভাবনাময়ী ছিলেন শায়লাও। ‘আদি’ নামের সিনেমায় অভিনয় করেছেন। নাটকে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছিলেন। বিয়ে করে তিনিও শোবিজকে বিদায় জানিয়েছেন। সে খাতায় আরও একজন আছে ঈশিকা। উপস্থাপনা আর নাটকে অভিনয় করে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন। বিয়ে করে তিনিও এখন ফুলটাইম সংসারী। আফসানা আরা বিন্দুর কথা তো না বললেই নয়। ক্যারিয়ারের সুসময়েই তিনি বিয়ে করে শোবিজকে বিদায় জানান। সারিকাও হাটছিলেন একই পথে। স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে পরবর্তীতে আবার শোবিজে নিয়মিত হওয়ার পায়তারা করছে।

এই যে বিয়ে করে সংসারী হয়ে শোবিজকে গুডবাই বলেন। এরা যে ক্যারিয়ারের খারাপ সময়ে এমনটা করছে তা কিন্তু নয়। ক্যারিয়ারের ভালো সময়েও তারা এমন সিদ্ধান্ত নেয়। বিয়ে কী তাহলে শোবিজের শত্রু? বিয়ে করে সংসারকে কেন গুডবাই বলতে হবে? মোনালিসা বলেন,‘আমার স্বামী চাচ্ছিলো না আমি শোবিজে থাকি। সব নারীই চায় তার স্বামীর মতো করে সংসার চালিয়ে যেতে। আর বিয়ের পরে অনেকে ভাবে সংসার সামলিয়ে অভিনয়টা নিয়মিত করা সম্ভবও নয়। আমি আসলে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিলাম।’

সুমাইয়া শিমু বলেন,‘ আমি তো বিয়ের ১৫ দিন পরই অভিনয়ে ফিরছিলাম। আমার কখনো এ নিয়ে সমস্যা হবে বলে মনে করিনা। কেউ যদি শোবিজে ছেড়ে সংসারী হতে চায়। সে দায়িত্ব তার নিজেরই নিতে হবে। যদি বলে আমার স্বামীর জন্য। সেটা ভুল। একজন অভিনেত্রী কারও বয়ে তার স্বপ্ন ছেড়ে চলে যায়। সেটা তারই সমস্যা বলে মনে করি’।


বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭