ইনসাইড থট

কেন বার বার সুন্দরবনেই জাহাজডুবি?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 19/04/2018


Thumbnail

গত ১৫ তারিখ সকালে পশুর নদীর হারবাড়িয়া চ্যানেলে ৭৭৫মেট্রিক টন কয়লা বোঝাই কার্গো ডুবে যায়। এ কয়লা ইটভাটায় ব্যবহারের জন্য আনা হয়েছিল। এসব কয়লায় সালফারের পরিমাণ বেশি থাকায় তা পরিবেশকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করে থাকে। ডুবন্ত জাহাজের থাকা তেল ও মবিল পানির সঙ্গে মিশে পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।

এর আগে ২০১৪ সালের ৯ ডিসেম্বর সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের শ্যালা নদীতে তেলবাহী ট্যাংকার ডুবে যায়। ২০১৫ সালের ৩ মে শরনখোলা রেঞ্জের ভোলা নদীতে সার বোঝাই কার্গো ডুবে যায়। ২০১৫ সালের ১১ সেপ্টেম্বর শরনখোলা রেঞ্জের ভোলা নদীতে ডুবতে ডুবতে অন্য কার্গোর সহায়তায় মোংলায় পৌছাতে সক্ষম হয় আরেকটি কয়লাবোঝাই কার্গো। ২০১৫ সালের ২৫ অক্টোবর পশুর নদীতে ৫১০ মেট্রিক টন কয়লাবাহী কার্গো ডুবে যায়। ২০১৬ সালের ১৯ মাচ চাঁদপাই রেঞ্জের শ্যালা নদীতে ১২৩৫ মেট্রিক টন কয়লাবাহী কার্গো ডুবে যায়। ২০১৭ সালের ৪ জুন হারবাড়িয়া চ্যানেলে ৮২৫ টন সিমেন্ট তৈরির কাচামাল বোঝাই কার্গো ডুবে যায়।

যেকোন নদীতে তেল, কয়লা, সিমেন্ট ও সারবাহী জাহাজ ডুবে গেলে তা পরিবেশ, প্রতিবেশব্যবস্থা, জীববৈচিত্র্য ও জলজ প্রাণির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকে। সুন্দরবন এলাকার ক্ষেত্রে এ ক্ষয়ক্ষতি অত্যন্ত মারাত্মক এবং যার প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি হয়। এধরনের কার্গো জাহাজ ডুবে যাওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত মাল বহন, ফিটনেসবিহীন জাহাজ, অদক্ষ চালক, নৌ মন্ত্রণালয় অথবা নৌ পরিবহনের অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাব।

স্বার্থান্বেষী কোনো মহল মোংলা বন্দরের চ্যানেলকে অকার্যকর করার জন্য বার বার নানা কৌশলে পরিকল্পিতভাবে নৌযান ডুবিয়ে দিচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। কোন কোন অসাধু আমদানিকারক পরিকল্পিতভাবে নৌযান দূর্ঘটনা ঘটিয়ে অতিরিক্তভাবে ইন্সুরেন্সের টাকা সংশ্লিষ্টদের যোগসাজসে হাতিয়ে নিচ্ছে। এতে করে একদিকে যেমন মোংলা বন্দরের চ্যানেল ভরাট হচ্ছে অন্যদিকে বন্দরের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে।

জাহাজ ডুবি রোধে করণীয়

শুধুমাত্র সুন্দরবনেই কেন এত জাহাজডুবি তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।

নৌ মন্ত্রণালয়সহ নৌ পরিবহন অধিদপ্তর, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ, বিআইডব্লিউটিএ, বন অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা।

পরিবেশ দূষণ এবং ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণের লক্ষ্যে জাহাজ উদ্ধার হওয়া পর্যন্ত পরিবেশ অধিদপ্তরের মনিটরিং অব্যাহত রাখা।

তদন্ত দলে বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত করা এবং তদন্ত প্রতিবেদন জনসমক্ষে প্রকাশ করা।

জাহাজ ডুবি প্রতিরোধে নৌ মন্ত্রণালয়সহ নৌ পরিবহন অধিদপ্তর, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ, বিআইডব্লিউটিএ, বন অধিদপ্তরের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা


লেখক: প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান, সাধারণ সম্পাদক, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এবং সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর

বাংলা ইনসাইডার/ জেডএ 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭