ইনসাইড বাংলাদেশ

নদীখেকোদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা দরকার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী


প্রকাশ: 23/05/2024


Thumbnail

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আমাদের নদী রক্ষার জন্য নদীখেকো, বালুখেকো, নদী দখলকারী এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা দরকার। আর যে সমস্ত শিল্পের মালিকেরা নদীতে রঙিন পানি ফেলে, তারা সমাজের শত্রু। এদের বিরুদ্ধেও প্রতিরোধ গড়ে তোলা দরকার।  

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে নোঙর ট্রাস্ট আয়োজিত ‘২৩ মে, জাতীয় নদী দিবস ঘোষণার দাবিতে’ ঢাকা নদী সম্মেলন প্রস্তুতি সভায় তিনি এ কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি সবার জন্য নদীর পানির ন্যায্যতা নিশ্চিত করার জন্য অর্থাৎ নদীর অববাহিকায় যারা বসবাস করে সবার জন্য সুষমভাবে পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে আঞ্চলিক সহযোগিতা দরকার। আমাদের যৌথ নদী কমিশন আছে, কিন্তু আমি মনে করি এটাকে আরও ইফেক্টিভ করা দরকার।

তিনি বলেন, আমি ছোটবেলায় যে নদীর পাড়ে খেলা করতাম, সেই নদী আর এখন নেই, বালুচরও নেই। কারণ নদী শুকিয়ে গেছে। আর এর পেছনের কারণ হচ্ছে নদীতে বিভিন্ন রাবার ড্যাম তৈরি হয়েছে, তাই নদীর উজানে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে। এটি সারা দেশের চিত্র। আর শহর অঞ্চলের যে নদী সেগুলো ক্ষমতাসীনরা দখল করেছে। এখন নদী শুকানোর পাশাপাশি আবার সরু হয়ে যাচ্ছে।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের একটি আঞ্চলিক সহযোগিতার ফোরাম গঠন করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। কারণ নদীর উৎপত্তি নেপালে, তারপর ভারতের ওপর দিয়ে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে সাগরে গিয়ে মিশে। এখানে কয়েকটি দেশ জড়িত। অতএব সবাই মিলে যদি আমরা একটা আঞ্চলিক ব্যবস্থাপনা দাঁড় করাতে পারি তাহলে সবার জন্যই এটি সুবিধা হবে।

নগরায়ণের প্রভাব পরিবেশে পড়েছে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, গত ৫০ বছরে পৃথিবীতে মানুষ ৩০০ কোটি থেকে ৮০০ কোটিতে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায় তিনগুণের কাছাকাছি। মানুষ বাড়ছে, আগে মানুষ দুই এক বালতি পানি দিয়ে গোসল করত। কিন্তু এখন সেটা করে না। এখন আবার অনেকে বাথটাব ব্যবহার করে। তাই মানুষ বাড়ার কারণে পানির ব্যবহার বেড়েছে। আবার ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশনের কারণে, নগরায়ণের কারণে পানির ব্যবহার বাড়ছে। এগুলোর একটা ইফেক্ট পরিবেশের ওপর, নদীর ওপরে পড়েছে। আবার কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করার জন্য আন্ডারগ্রাউন্ড ওয়াটার, সারফেস ওয়াটার এবং নদীর ওপর প্রভাব পড়েছে। কিন্তু সেটাকে প্রোপারলি ম্যানেজ করার জন্য সবাইকে সমন্বয় করে যে রিজিওনাল কো-অপারেশন দরকার ছিল, সেটা নাই।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের দেশের মানুষ এখন উন্নয়ন মানেই বোঝে রাস্তা, ব্রিজ ও বিল্ডিং বানানো। এটাকেই মানুষ উন্নয়ন মনে করে। এই উন্নয়নের সঙ্গে আমি দ্বিমত পোষণ করি। রাস্তা বানাতে গিয়ে যেটা হচ্ছে খাল-বিল-নদী-নালার ওপরে ব্রিজ বানানো হচ্ছে, কৃষিজমি নষ্ট হচ্ছে। আমরা যদি শুরু থেকে নদীর নাব্যতা রক্ষা করে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করতাম তাহলে কিন্তু আজকে নদীর এই অবস্থা দাঁড়াতো না।

ঢাকা-৪ আসনের সংসদ সদস্য ড. মো. আওলাদ হোসেন বলেন, এক সময় এই ঢাকার মধ্যেই অনেক পালতোলা নৌকা চলাচল করত। এক সময় ঢাকা গড়েই উঠেছিল নদীকে কেন্দ্র করেই। নদীপথে পণ্য পরিবহন করা যায় কম খরচে। তাই এর গুরুত্ব অপরিসীম। তাই আমাদের পরিবেশ ও সৌন্দর্য রক্ষায় নদীকে রক্ষা করতে হবে।

নোঙর ট্রাস্টের চেয়ারম্যান সুমন শামসের সভাপতিত্বে দৈনিক সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান ও সংগঠনের অন্যান্য সদস্যরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭