ইনসাইড বাংলাদেশ

আনার-আজিজ ইস্যুতে অস্বস্তিতে সরকার


প্রকাশ: 23/05/2024


Thumbnail

হঠাৎ করেই অরাজনৈতিক বিভিন্ন ইস্যু সরকারের জন্য অস্বস্তির কারণ হিসাবে সামনে এসেছে। সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি ঘটনা সরকারের জন্য বিব্রতকর বলে স্বীকার করছেন সরকারের নীতি নির্ধারকরা। 

গত ২০ মে মধ্যরাতের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রদপ্তর সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। সাবেক সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে এই স্যাংশন দেওয়া হয়েছে মূলত ২০২১ সালের পয়লা ফেব্রুয়ারি আল জাজিরার প্রতিবেদন ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ শিরোনামে অনুসন্ধানী রিপোর্টের ভিত্তিতে। যদিও ম্যাথিউ মিলারের প্রকাশিত বিবৃতিতে ওই প্রতিবেদনের কথা বলা হয়নি। তবে আল জাজিরার ওই আলোচিত বিতর্কিত প্রতিবেদনে যে সমস্ত প্রসঙ্গ উত্থাপন করা হয়েছিল মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত বিবৃতিতে সেই বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়েছে।

আজিজ আহমেদ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বলে বিজেপির মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি সেনাপ্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন টানা তিন বছর। কাজেই এই সরকারের কাছে পুরষ্কৃত হওয়া একজন ব্যক্তির ওপর এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা সরকারের জন্য কিছুটা হলেও অস্বস্তিকর বটেই। যদিও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ স্পষ্টভাবে বলেছেন, এটি ব্যক্তির অপরাধ। ব্যক্তির অপরাধের দায় সরকার নেবে না।

তিনি এটাও বলেছেন, সাবেক সেনা প্রধানের বিরুদ্ধে যে নিষেধাজ্ঞা আসছে সেটা সরকারকে আগেই অবহিত করা হয়েছিল। তবে আওয়ামী লীগের মধ্যে এ নিয়ে যে অস্বস্তি তা প্রকাশ পেয়েছে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য থেকে। তিনি লু এর সফরের উষ্ণতার পর এই ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে এক ধরনের হতাশা প্রকাশ করেছেন। 

আওয়ামী লীগের মধ্যেও এ নিয়ে অনেকের অস্বস্তি লক্ষণীয়। কেউ কেউ মনে করছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আবার নতুন করে কাউকে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেবে কিনা বা যুক্তরাষ্ট্র যে এখনও বাংলাদেশের ব্যাপারে নেতিবাচক আজিজ আহমেদের ভিসা নিষেধাজ্ঞার মধ্যে দিয়ে তা প্রমাণিত হয়েছে।

আজিজ আহমেদের রেশ কাটতে না কাটতেই কলকাতায় ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিমের খুনের ঘটনা রাজনীতিতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। আনোয়ারুল আজিম কলকাতায় খুন হয়েছেন কয়েকজন বাংলাদেশিদের হাতে এবং তাদের নাম পরিচয় সরকার উদ্ধার করেছে। কিন্তু এই ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে আনারের অন্ধকার জীবনেরও কিছু তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। তিনি চোরাচালান চক্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। চোরাচালান বিশেষ করে স্বর্ণ চোরাচালানের দ্বন্দ্ব নিয়ে আনার খুন হয়েছে এমন বক্তব্য গণমাধ্যমে আসছে। 

প্রশ্ন উঠেছে, আনার যদি সত্যি সত্যি এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকেন, তাহলে এ ধরনের ব্যক্তি কিভাবে সংসদ সদস্য হিসেবে মনোনয়ন পান? যদিও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তার জনপ্রিয়তার কারণেই তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে জনপ্রিয় হলেই কি এ ধরনের ব্যক্তি মনোনয়ন পেতে পারেন কি না। এটি কিছুটা হলেও সরকারের জন্য বিব্রতকর। তার মৃত্যুর পর বিভিন্ন সংবাদপত্রে যে ধরনের সংবাদ বেরিয়ে আসছে তাতে অস্বস্তি ছড়িয়ে পড়েছে সরকারের মধ্যে। 

অনেক এমপি বলেছেন যে, তারা বিব্রত। একজন সংসদ সদস্য যদি এ ধরনের কর্মকান্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন তাহলে পরে সংসদে কারা আছেন সেই প্রশ্ন উঠতে পারে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, একজন ব্যক্তির অবস্থা দিয়ে সকল সংসদ সদস্যের অবস্থান বিবেচনা করা ঠিক নয়। তবে এটি যে সরকারের জন্য অস্বস্তিকর তা এখন আর কোন লুকোচুরির বিষয় নয়।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭