ইনসাইড পলিটিক্স

বাজেটকে ঘিরে নতুন করে সরকার বিরোধী আন্দোলনের ইঙ্গিত


প্রকাশ: 23/05/2024


Thumbnail

আগামী ৫ জুন জাতীয় সংসদে বাজেট অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। অর্থমন্ত্রী জাতীয় সংসদে এদিন বাজেট পেশ করবেন বলে জানা গেছে। অর্থনীতির সংকট, নানারকম অর্থনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যে এবারের বাজেটের দিকে তাকিয়ে আছে গোটা দেশবাসী। আর বিরোধী দলগুলো এই বাজেটকে ঘিরেই সরকার বিরোধী মুখ থুবড়ে পড়া আন্দোলন নতুন করে শুরু করার চিন্তাভাবনা করছে বলে জানা গেছে। বিরোধী দলগুলোকে নিয়ে একের পর এক বিএনপি বৈঠক করছে এবং একটি যৌথ আন্দোলনের রূপ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে৷ 

বিরোধী দলগুলো সূত্রে জানা গেছে যে, তীব্র অর্থনৈতিক সংকট, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ব্যাংকিং খাতে অনিয়ম, অর্থ পাচার ইত্যাদি বিষয়গুলোকে একাট্টা করে বাজেট ঘোষণার পর পরেই সরকার বিরোধী আন্দোলন নতুন করে শুরু করার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। 

উল্লেখ্য, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে দু বছর আগে থেকেই বিএনপির নেতৃত্বে বিরোধী দলগুলো স্ব স্ব অবস্থান থেকে আন্দোলন শুরু করেছিল এবং এই আন্দোলনে যথেষ্ট গতি এসেছিল। কিন্তু গত বছর ২৮ অক্টোবর বিএনপির ভুল রাজনীতি এবং আকস্মিকভাবে হঠকারিতার দলটিকে বিপর্যস্ত করে ফেলে। এই ভুল রাজনীতির কারণে
আন্দোলনের প্রতি সাধারণ মানুষের যে সমর্থন এবং সহানুভূতি ছিল তা উবে যায়। 

২৮ অক্টোবরের পর থেকে বিএনপির আন্দোলন বিপর্যস্ত এবং ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর এই আন্দোলন মুখ থুবড়ে পড়ে। সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ব্যাপারে শুধু সাধারণ মানুষ নয়, বিএনপি নেতাকর্মীরাই অনাগ্রহ দেখান। তারা এখন হতাশাগ্রস্ত। কিন্তু আবার নতুন করে আন্দোলন শুরু করার জন্য বিএনপি গত কিছুদিন ধরে চেষ্টা করছে। বিএনপির পক্ষ থেকে সমমনা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো যারা নির্বাচন বর্জন করেছিল এবং নির্বাচন বিরোধী আন্দোলনে বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে কাজ করেছিল, তারা নতুন করে আন্দোলনের জন্য একে অপরের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করেছে এবং সেই আলাপ আলোচনায় সরকারের বিরুদ্ধে কী কী বিষয় নিয়ে আন্দোলন করা যায় তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। 

বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে একটি লিয়াঁজো কমিটি গঠনের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে। যদিও বিএনপি এই ধরনের লিয়াঁজো কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত একমত পোষণ করেননি। তবে সফল রাজনৈতিক দলগুলোই বাজেটকে সামনে রেখে নতুন পরিসরে আন্দোলন করতে আগ্রহী বলে জানা গেছে। এক্ষেত্রে তারা পাঁচটি বিষয়কে সামনে আনবে আনতে চায়। 

প্রথমত, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং মুদ্রাস্ফীতি- এই বিষয়টিকে তারা সবচেয়ে সামনে। দ্বিতীয়ত, সারা দেশে বিদ্যুৎ সংকট, তৃতীয়ত, ব্যাংকিং খাতে নৈরাজ্য (তাদের ভাষায় লুটপাট), চতুর্থত, দুর্নীতি এবং পঞ্চমত, অর্থপাচার। এই বিষয়গুলো নিয়ে তারা সারাদেশে সমাবেশ, বিক্ষোভ, মানববন্ধনের মতো কর্মসূচিগুলো পালন করতে চায়। তবে কর্মসূচির ধরন নিয়ে বিরোধী দলগুলোর মধ্যে এক ধরনের অনৈক্য রয়েছে। 

কেউ কেউ মনে করছেন যে, বিরোধী দলের কর্মসূচিতে বৈচিত্র্য আনা দরকার। এমন ধরনের কর্মসূচি দেওয়া দরকার যে ধরনের কর্মসূচিতে জনগণ সম্পৃক্ত হতে পারে। কৌশলগত কারণে বিএনপি এখন নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ইস্যুটিকে সামনে আনতে রাজি নয়। বরং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের চেয়ে তারা জনগণের ভোগান্তি এবং জনদুর্ভোগের বিষয়গুলোকে সামনে আনতে চায়। কিন্তু প্রধান বিরোধী দল বিএনপির মধ্যে এক ধরনের হতাশা, নেতাকর্মীদের মধ্যে আন্দোলন নিয়ে অনীহা এ সব কিছু মিলিয়ে বাজেট কেন্দ্রিক আন্দোলন কতটুকু ফলপ্রসূত হবে তা নিয়ে বিএনপির মধ্যেই এক ধরনের সন্দেহ রয়েছে। তবে বিএনপির নেতারা বলছেন, এখনই চূড়ান্ত আন্দোলন নয়। তারা ধাপে ধাপে আন্দোলন শুরু করতে চায়। সেই নতুন আন্দোলন শুরুর ক্ষেত্রে প্রথম ধাপ হবে বাজেট পরবর্তী প্রতিক্রিয়া হিসেবে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭