ইনসাইড পলিটিক্স

ক্ষোভ, অভিমান ঝেড়েই শান্তি পেলেন ১৪ দলের নেতারা


প্রকাশ: 24/05/2024


Thumbnail

দীর্ঘদিন পর ১৪ দলের নেতাদেরকে নিয়ে বসে ছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৪ দলের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে বৈঠকের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী একটি স্বাগত ভাষণ দেন। এই স্বাগত ভাষণে তিনি বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি, অর্থনৈতিক সংকট, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক ইত্যাদি বিষয়ে তুলে ধরেন। এরপর ১৪ দলের নেতারা একে একে বক্তব্য রাখেন। 

১৪ দলের নেতাদের মুখে ছিল ক্ষোভের সুর, অবজ্ঞার আর্তনাদ এবং অবহেলার বেদনার কথা। মূলত ১৪ দলের নেতাদের এই দুঃখ, ক্ষোভ এবং হতাশার কথায় পরিপূর্ণ হয়ে গিয়েছিল এই বৈঠক। ১৪ দলের অন্যতম শরিক দল জাসদের নেতা হাসানুল হক ইনু বৈঠকে প্রশ্ন তুলেছেন ১৪ দল আদৌ থাকবে কি থাকবে না। সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ১৪ দলকে গুরুত্বহীন করা হচ্ছে, নির্বাচনে ১৪ দলের শরিকদেরকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলেও ইনু অভিযোগ করেন। 

প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেকের বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শোনেন। হাসানুল হক ইনু ছাড়াও ১৪ দলের সভায় বক্তব্য রাখেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। তিনি রাজশাহীর নির্বাচনে কীভাবে ফজলে হোসেন বাদশাকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেই প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেন। ১৪ দলকে কীভাবে গুরুত্বহীন করে তোলা হয়েছে সে বিষয়ে তিনি ব্যাখ্যা দেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন যে, ১৪ যদি না থাকে তাহলে আনুষ্ঠানিক ভাবে সব কিছু বলে দেওয়া হোক। 

১৪ দলকে আদর্শিক জোট হিসেবে বর্ণনা করে মেনন এই ১৪ দলের গুরুত্ব এবং তাৎপর্য তুলে ধরেন। তিনি মনে করেন, ১৪ দল যদি না থাকে তাহলে দলগুলোর কোন ক্ষতি হবে না। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ক্ষতি হবে। 

দিলীপ বড়ুয়াও ১৪ দলকে অবহেলা, অপাঙ্‌ক্তেয় করার বিষয়টি উত্থাপন করেন। তিনি জানান, ১৪ দলের নিয়মিত মিটিং হয় না, সরকারের নীতি নির্ধারণী সিদ্ধান্তে ১৪ দলের কোন ভূমিকা নেই। সরকারের মন্ত্রিসভা বা সরকারের কোথাও ১৪ দলকে রাখা হয়নি। ১৪ দল তাহলে কী করবে? ১৪ দলের নিয়মিত কর্মসূচিও পালন করা হয়না বলে তিনি অভিমান করেন। 

এছাড়াও ১৪ সালের আরেক নেতা নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীও ১৪ দলকে নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা করেন। ১৪ দলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ১৪ দলের শরিকদের মধ্যে থেকে একটি সুর বেশি উচ্চারিত হয়েছে তা হল দু একজন আওয়ামী লীগের নেতা ১৪ দলকে নিয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করছেন। ১৪ দলকে অবজ্ঞা করছেন। এই বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আছে কি না তারা জানতে চান। 

১৪ দলকে সক্রিয় করা হবে কি না সে বিষয়েও তারা আওয়ামী লীগ সভাপতির মতামত জানতে চান। সার্বিক ভাবে এই বৈঠকটি ছিল ক্ষোভ ঝাড়ার বৈঠক। বৈঠকে কোন সমাধান এসেছে কি না জানতে চাওয়া হলে ১৪ দলের একজন শরিক নেতা বলেন, আমরা আমাদের দুঃখের কথা, ক্ষোভের কথা বলতে পেরেছি, এটাই শান্তি। তবে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশ্বস্ত করেছেন যে, ১৪ দলকে সচল করার বিষয়টি নিয়ে তিনি কাজ করবেন এবং ১৪ দল যেন বিভিন্ন ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় কাজ করতে পারে সে ব্যাপারেও তিনি নির্দেশনা দেবেন। এখন দেখার বিষয় এই বৈঠকের পর ১৪ দল কতটুকু সক্রিয় হয়, কতটুকু কার্যকর হয়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭